কারণ সংক্রান্ত দোষ কোনগুলি? উদাহরণ-সহ অবান্তর শর্তকে কারণ মনে করার দোষটি আলােচনা করাে

কারণ সংক্রান্ত দোষ কোনগুলি? উদাহরণ-সহ অবান্তর শর্তকে কারণ মনে করার দোষটি আলােচনা করাে Class 12 | Education (আরোহমূলক দোষ) | 8 Marks

উত্তর:-

কারণ সংক্রান্ত দোষ

আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্তে আমরা যে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করি তার মাধ্যমে একপ্রকার কার্যকারণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেওয়া হয়। সিদ্ধান্তে এই কার্যকারণ সম্পর্কটিকে যথাযথ বা সার্বিকভাবে নির্ণয় করতে হয়। কিন্তু কার্যকারণ সম্পর্কটি যদি যথাযথ বা সার্বিকভাবে নির্ণয় না করে অযথার্থ বা ভুলভাবে নির্ণয় করা হয়, তাহলে আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে কারণ সংক্রান্ত দোষ-এর আবির্ভাবঘটে।কারণ সংক্রান্ত দোষরূপেযেগুলিকে উল্লেখ করা যায়, সেগুলি হল—[1] অবান্তর শর্তকে কারণ বলার দোষ, [2] একটি আবশ্যিক শর্তকে কারণ বলার দোষ, [3] সহ-কার্যকে কারণ বলার দোষ এবং [4] কাকতালীয় দোষ প্রভৃতি। 

অবান্তর বা অপ্রাসঙ্গিক শর্তকে কারণ বলার দোষ

 কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করার ক্ষেত্রে আমরা সবসময়ই চেষ্টা করি কোনাে ঘটনার প্রকৃত কারণটিকে উল্লেখ করতে | কিন্তু কোনাে ঘটনার প্রকৃত কারণকে নির্ণয় করা কখনােই সহজসাধ্য নয়। কারণকে বলা হয় কারণ ঘটনার নিয়ত পূর্ববর্তী ঘটনা৷ এই পূর্ববর্তী ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বিভিন্ন রকম শর্ত (conditions) | সমস্ত শর্তগুলি প্রাসঙ্গিকও হতে পারে, আবার তা অপ্রাসঙ্গিকও হতে পারে। কার্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে যে সমস্ত শর্ত বা ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে, সেগুলিকে বলা হয় প্রাসঙ্গিক ঘটনা বা শর্ত। আর যে সমস্ত শর্ত বা ঘটনার কোনাে ভূমিকাই নেই, সেগুলিকে বলা হয় অপ্রাসঙ্গিক বা অবান্তর শর্ত বা ঘটনা৷ কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে। আমাদের কাজ হল এই সমস্ত অপ্রাসঙ্গিক বা অবান্তর ঘটনাগুলিকে সরিয়ে রেখে প্রাসঙ্গিক শর্তসমূহকে কারণরুপে উল্লেখ করা | কিন্তু আমরা সবসময় এরূপ প্রয়াসে সফল হই না। অনেক সময় আমরা তাই ভুলক্রমে অথবা অজ্ঞতা অনুসারে কোনাে অপ্রয়ােজনীয় অবান্তর শর্তকে কারণ বলে মনে করি এবং এভাবেই কার্যকারণ সম্বন্ধকে প্রতিষ্ঠা করি। যখনই এরপ করা হয় তখন যে দোষের আবির্ভাব হয়, তাকে বলে অবান্তর শর্ত বা বিষয়কে কারণ বলে মনে করার দোষ। সাধারণত অন্বয়ী পদ্ধতি এবং সহপরিবর্তন পদ্ধতির অপপ্রয়ােগে এরূপ দোষের উদ্ভব ঘটে।

উদাহরণ

জলের সঙ্গে বিভিন্ন রকম ওষুধ খেয়ে বিভিন্ন রকম রােগের নিরাময় হয়েছে।

.:. অন্বয়ী পদ্ধতির সাহায্যে সিদ্ধান্ত করা যায় যে, জলই হল রােগ নিরাময়ের কারণ।

ব্যাখ্যা

উদাহরণটিতে দেখা যায় যে, বিভিন্ন রকম রােগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম ওষুধের ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ, কোনাে একটি নির্দিষ্ট ওষুধ। কখনােই সবক্ষেত্রে উপস্থিত নয়। কিন্তু বিভিন্ন রকম রােগ নিরাময়ের সবক্ষেত্রেই জলপান সাধারণভাবে উপস্থিত বলে জলপানকেই রােগ ঘ নিরাময়-এর কারণরূপে অনুমান করা হয়। বাস্তবে কিন্তু জলপানের সঙ্গে রােগ নিরাময়ের কোনাে প্রকৃত কার্যকারণ সম্পর্ক নেই | জলপানকে তাই রােগ নিরাময়ের একটি অবান্তর শর্ত বলা যায়। এক্ষেত্রে তাই অবান্তর বিষয়কে কারণ বলে মনে করার দোষের উদ্ভব হয়েছে এখনও

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment