ভারতের পাঞ্জাব সমভূমি ও ব্রম্মপুত্র সমভূমি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

ভারতের পাঞ্জাব সমভূমি ও ব্রম্মপুত্র সমভূমি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে Class 10 | Geography | 5 Marks

উত্তর:-

পাঞ্জাব সমভূমি :
অবস্থান:
উত্তরের সমভূমি অঞ্চলের পশ্চিমাংশের নাম পাঞ্জাব সমভূমি। অঞ্চলটি যমুনা নদীর পশ্চিম দিক থেকে প্রসারিত হয়ে পাকিস্তানের পূর্বদিকের বেশ কিছু অংশ পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে। দিল্লি, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা এই অঞ্চলের অন্তর্গত। 

ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য : (i) সিন্ধুর পাঁচটি উপনদী, যথা—শতদ্রু, বিপাশা, বিতস্তা, ইরাবতী ও চন্দ্রভাগা পলি সঞ্চয় করে এই সমভূমিটি তৈরি করেছে। এজন্য এই সমভূমি পাঞ্জাব (পঞ = পাঁচ এবং আব = জলধারা) সমভূমি নামে পরিচিত। (ii) এখানকার নদীতীরবর্তী নতুন পলিগঠিত স্থানসমূহকে বেট, দুই নদীর মধ্যবর্তী স্থানকে দোয়াব, প্লাবনভূমিকে ধায়া, উত্তরের শিবালিক পর্বতের পাদদেশীয় ক্ষয়প্রাপ্ত অংশকে খােশ এবং শিবালিক পর্বতের পাদদেশের নুড়ি, পাথর ও শিলাচূর্ণ গঠিত ভূমিকে ভাবর বলা হয়। (iii) সমভূমিটির গড় উচ্চতা 200-240 মিটার। (iv)  সমভূমিটি দক্ষিণ-পশ্চিমে সিন্ধু উপত্যকার দিকে ঢালু। (v)  এই অংশে পাঁচটি দোয়াব দেখা যায়— [a] বিপাশা ও শতদ্র নদের মধ্যে বিস্ত-জলন্ধর দোয়াব, [b] ইরাবতী ও বিপাশা নদীর মধ্যে বারি দোয়াব, [c] চন্দ্রভাগা ও ইরাবতী নদীর মধ্যে রেচনা দোয়াব, [d] বিতস্তা ও চন্দ্রভাগা নদীর মধ্যে চাজ দোয়াব এবং [e] বিতস্তা ও সিন্ধু নদের মধ্যে সিন্ধু সাগর দোয়াব।

চিত্র : পাঞ্জাব সমভূমি 

ব্রম্মপুত্র সমভূমি :
অবস্থান:
অসম রাজ্যে ব্রম্মপুত্র নদের দু-পাশে যে সংকীর্ণ সমতল ক্ষেত্রটি আছে, তার নাম ব্রম্মপুত্র সমভূমি।

চিত্র : ব্রম্মপুত্র সমভূমি

বিস্তার : 1000 কিমি দীর্ঘ ও 80-100 কিমি প্রশস্ত ব্ৰত্মপুত্র উপত্যকা পুর্বে সদিয়া থেকে পশ্চিমে ধুবরি পর্যন্ত বিস্তৃত। এর আয়তন প্রায় 56 হাজার বর্গকিমি। অসমের সমতলভূমি এর অন্তর্গত। 

ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য : (i) উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণে পর্বতঘেরা এই সমভূমিটি দীর্ঘ ও সংকীর্ণ এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে ঢালু। (ii) পূর্ব দিকে সমভূমির উচ্চতা প্রায় 130 মিটার এবং পশ্চিমে প্রায় 30 মিটার। (iii) ব্রম্মপুত্র এবং তার বিভিন্ন উপনদীর পলি জমে এই সমভূমি তৈরি হয়েছে। পলি সমৃদ্ধ বলে এখানকার মাটি খুব উর্বর। (iv) এই সমভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় ব্রম্মপুত্র নদ তার গতিপথে বহু বালুচর বা দ্বীপ গঠন করেছে। এরকমই একটি বালুচরের নাম মাজুলি। এর আয়তন আগে 1250 বর্গকিমি ছিল, কিন্তু ক্ষয়ের ফলে এখন তা 352 বর্গকিমিতে পৌঁছেছে। এটি ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপ।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment