বিনয় বাদল দীনেশ স্মরণীয় কেন? 

বিনয়, বাদল, দীনেশ স্মরণীয় কেন?   4 Marks/Class 10

উত্তর:-

ভূমিকা : বিংশ শতাব্দীর প্রথমে গান্ধিজির অহিংস অসহযােগ আন্দোলনের পাশাপাশি বাংলার বিপ্লবীরা বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবী আন্দোলন গড়ে তােলেন যার মধ্যে বিনয়-বাদল-দীনেশের রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান ও অলিন্দ যুদ্ধ ছিল অন্যতম।

স্মরণের কারণ : বিনয়, বাদল, দীনেশ যে কারণে স্মরণীয় তা হল —

১. অলিন্দ যুদ্ধ : ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৮ ডিসেম্বর বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের সক্রিয় সদস্য বিপ্লবী বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং-এ প্রবেশ করে কারা বিভাগের ইনস্পেকটর জেনারেল সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন এবং তাদের আক্রমণে একাধিক উচ্চপদস্থ ইংরেজ কর্মচারী আহত হন। এরপর রাইটার্স বিল্ডিং-এর অলিন্দে লালবাজার থেকে আসা সশস্ত্র পুলিশের বিশাল বাহিনীর সঙ্গে বিপ্লবী বিনয়-বাদল-দীনেশের যুদ্ধ শুরু হয়। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই যুদ্ধ ‘অলিন্দ যুদ্ধ’ নামে খ্যাত।

বিনয়, বাদল, দীনেশ

২. বিনয় ও বাদলের মৃত্যু : অলিন্দ যুদ্ধকালে পুলিশ এই তিনজন বিপ্লবীকে ঘিরে ফেললে পালানাে অসম্ভব বিবেচনা করে বাদল পটাশিয়াম সায়ানাইড’ নামে সাংঘাতিক বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন এবং বিনয় ও দীনেশ পিস্তল দিয়ে নিজেদের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কয়েকদিন পর হাসপাতালে বিনয় মারা যান।

৩. দীনেশের ফাসি : চিকিৎসকদের চেষ্টায় দীনেশ বেঁচে যান এবং আলিপুর জর্জ কোর্টের ইংরেজ বিচারক গার্লিক-এর আদেশে তার ফাসি হয় (৭ জুলাই, ১৯৩১ খ্রি.)। দীনেশের ফাঁসির এক। বছরের মধ্যে বিপ্লবী কানাইলাল ভট্টাচার্যের গুলিতে আলিপুর কোর্টের মধ্যে বিচারপতি গার্লিক নিহত হন।

গুরুত্ব : বিনয়-বাদল-দীনেশের এই কর্মকাণ্ডের বেশ কয়েকটি মুধ ছিল ; যেমন— (১) বিনয়, বাদল ও দীনেশের দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ড ব্রিটিশ শাসকদের উদবিগ্ন ও ভীতসন্ত্রস্ত করে তােলে; (২) তাদের নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ বাংলার মানুষকে নতুন প্রেরণা জোগায়; (৩) পরবর্তীকালে এই তিনজন দুঃসাহসিক বিপ্লবার নামানুসারে কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ারের নাম রাখা হয় ‘বিনয়-বাদল-দীনেশ (বি-বা-দী) বাগ’।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment