গােরা উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ কী বলতে চেয়েছেন? 

‘গােরা’ উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ কী বলতে চেয়েছেন?  4 Marks/Class 10

উত্তর:

ভূমিকা : উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে যেসব জাতীয়তাবাদী গ্রন্থ ও উপন্যাস জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটাতে সাহায্য করেছিল সেগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত সুবৃহৎ উপন্যাস ‘গােরা’ (১৯০৫ খ্রি.)।

রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য : গােরা’ উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ যা বলতে চেয়েছেন তা হল —

১) চরিত্রসমূহ ও সংঘাত : এই উপন্যাসের উল্লেখযােগ্য চরিত্রগুলির (গােরা, আনন্দময়ী, পরেশবাবু, বিনয়, ললিতা, সুচরিতা ও কৃষ্ণদয়াল) মাধ্যমে উনিশ শতকের সনাতন হিন্দুধর্ম ও ব্রাত্মধর্মের মধ্যে সংঘাতকে তিনি তুলে ধরেন। 

২) হিন্দুধর্ম : সমাজের সঙ্গে ধর্মের যােগাযােগ তুলে ধরে হিন্দুধর্মের আচার সর্বস্বতা ও ব্রাত্মধর্মের উপাচার ও রীতিনীতিকে তুলে ধরেন।

৩) সংঘ শক্তি : হিন্দুসমাজে জাতিভেদপ্রথাকে তুলে ধরে সংঘশক্তির প্রয়ােজনীয়তাকেও তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। 

৪) মানবধর্ম : উপন্যাসের শেষে গােরার পিতৃপরিচয় (আইরিশ দম্পতির সন্তান গােরা) প্রকাশ করে ধর্মীয় পরিচয় নয় মানবধর্মকেই তুলে ধরেন।

রবীন্দ্রনাথের বক্তব্যের তাৎপর্য : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গােরা’ উপন্যাস যেভাবে জাতীয়তাবাদের প্রসারে সাহায্য করেছিল তা হল— 

১) দেশীয় সমাজকে গুরুত্ব : তিনি ইউরােপীয় সমাজের পরিবর্তে এদেশীয় সমাজের ওপর গুরুত্ব দান করে স্বদেশীয় আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করেন এবং স্বদেশপ্রেমের আদর্শ প্রচার করেন। 

২) জাতিভেদপ্রথা : হিন্দু সমাজের জাতিভেদপ্রথার স্বরূপ তুলে ধরে সংঘশক্তির প্রয়ােজনীয়তাকে তুলে ধরেন। 

৩) ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ : উপন্যাসের শেষে ধর্মের পরিবর্তে মানবধর্মের ওপর গুরুত্ব আরােপ করে ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদে উন্নীত করেন।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment