মিলের পদ্ধতিগুলির প্রয়ােগের লক্ষণগত বৈশিষ্ট্যগুলি কী?

মিলের পদ্ধতিগুলির প্রয়ােগের লক্ষণগত বৈশিষ্ট্যগুলি কী? Class 12 | Philosophy (মিলের পরিক্ষণমূলক পদ্ধতি) 8 Marks

উত্তর:-

মিলের পদ্ধতিগুলির প্রয়ােগের লক্ষণগত বৈশিষ্ট্যসমূহ 

তর্কবিদ মিল বিশেষ বিশেষ ঘটনার কার্যকারণ সম্পর্ককে আবিষ্কার করার উদ্দেশ্যে পাঁচটি পরীক্ষণমূলক পদ্ধতির প্রয়ােগ করেছেন। পদ্ধতিগুলির সাহায্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার করার উদ্দেশ্যে আমরা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের সাহায্যে বিভিন্নরকম দৃষ্টান্ত সংগ্রহ করি এবং সেগুলিকে যথাযথভাবে পূর্ববর্তী ও অনুবর্তী ঘটনা হিসেবে সন্নিবেশিত করি। অর্থাৎ, কার্যকারণ সম্পর্কের আকারটিকে দৃষ্টান্তের প্রতীকীকরণের মাধ্যমে উপস্থাপিত করা হয়। এরপর সেই আকারটি কোন্ পদ্ধতির আকার থেকে পাওয়া, তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। সেক্ষেত্রে কোন পদ্ধতির প্রয়ােগ ঘটানাে হয়েছে, তার উল্লেখ করা হয়। কার্যকরণের আকারটির ক্ষেত্রে কোন্ পদ্ধতির প্রয়ােগ ঘটানাে হয়েছে, তা নির্ভর করে পঞ্চপদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলির ওপর। 

[1] অন্বয়ী পদ্ধতির লক্ষণগত প্রয়োগ: এই পদ্ধতির লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল যে, এই ক্ষেত্রে দুই বা তার অধিক সদর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছ থাকে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কয়েকটি পূর্ববর্তী ঘটনা থাকে এবং কয়েকটি অনুবর্তী ঘটনা থাকে। এই উভয়প্রকার ঘটনাসমূহের মধ্যে শুধু একটি বিষয়ে মিল থাকে এবং এই একটি বিষয় ছাড়া আর সমস্ত বিষয়েই অমিল লক্ষ করা যায়। 

অর্থাৎ, অন্বয়ী পদ্ধতি = দুই বা ততােধিক সদর্থক দৃষ্টান্ত + অগ্রবর্তী ও অনুবর্তী ঘটনার মধ্যে একটি বিষয়ে মিল। 

[2] ব্যতিরেকী পদ্ধতির লক্ষণগত প্রয়ােগ: এক্ষেত্রে কেবল দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়ােজন হয়। এই দুটি দৃষ্টান্তের একটি হল সদর্থক দৃষ্টান্ত এবং অপরটি হল নঞর্থক দৃষ্টান্ত। সদর্থক দৃষ্টান্তে একটি সাধারণ ঘটনা অগ্রবর্তী এবং অনুবর্তী হিসেবে থাকলেও, সেটি নঞর্থক দৃষ্টান্তে অনুপস্থিত। 

অর্থাৎ, ব্যতিরেকী পদ্ধতি = একটি সদর্থক দৃষ্টান্ত ও একটি নঞর্থক দৃষ্টান্ত + উভয় দৃষ্টান্তে একটি বিষয়ে অমিল। 

[3] অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতির লক্ষণগত প্রয়ােগ: এই পদ্ধতির ক্ষেত্রে দুই ধরনের দৃষ্টান্তগুচ্ছ দুই বা ততােধিক ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। সদর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছে অগ্রবর্তী ঘটনায় একটি বিষয় এবং অনুবর্তী ঘটনায় আর-একটি বিষয় সর্বদাই উপস্থিত। কিন্তু নঞর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছে ওই দুটি সাধারণ ঘটনাই অনুপস্থিত। 

অর্থাৎ, অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতি = দুই বা ততােধিক সদর্থক দৃষ্টান্ত ও দুই বা ততােধিক নঞর্থক দৃষ্টান্ত + সদর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছে অগ্রবর্তী ও অনুবর্তী ঘটনার মধ্যে একটি বিষয়ে উপস্থিতির মিল + নঞর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছে অগ্রবর্তী ও অনুবর্তীর মধ্যে একটি বিষয়ে অনুপস্থিতির মিল।

[4] সহপরিবর্তন পদ্ধতির লক্ষণগত প্রয়ােগ: সহপরিবর্তন পদ্ধতির ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, সেক্ষেত্রে দুই বা ততােধিক সদর্থক দৃষ্টান্ত পরিলক্ষিত হয় এবং অগ্রবর্তী ঘটনাসমূহের একটির সঙ্গে অনুবর্তী ঘটনাসমূহের একটির হ্রাসবৃদ্ধির সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়। 

অর্থাৎ, সহপরিবর্তন পদ্ধতি = দুই বা ততােধিক সদর্থক দৃষ্টান্ত + অগ্রবর্তী ও অনুবর্তীর মধ্যে বাড়া-কমার সম্বন্ধ 

[5] পরিশেষ পদ্ধতির লক্ষণগত প্রয়ােগ: পরিশেষ পদ্ধতি প্রয়ােগের ক্ষেত্রেও মাত্র দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়ােজন হয়। যার একটি সদর্থক ও একটি নঞর্থক। সদর্থক দৃষ্টান্তে পূর্ববর্তী ঘটনা ও অনুবর্তী ঘটনার উল্লেখ থাকে। কিন্তু নঞর্থক দৃষ্টান্তে একটি কার্যের একটি নির্দিষ্ট অংশের কারণ জানা থাকে। এর ফলে, সেক্ষেত্রে বিয়ােগ পদ্ধতিতে বাকি অংশের কারণ জানা যায়। অর্থাৎ, পরিশেষ পদ্ধতি = একটি সদর্থক দৃষ্টান্ত যা সমগ্র ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত ও একটি নঞর্থক দৃষ্টান্ত যা একটি অংশের কারণরূপে জ্ঞাত + সমগ্র থেকে অংশের বিয়ােগ প্রক্রিয়া।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment