প্রত্যক্ষণের স্তর বা পর্যায়গুলি উল্লেখ করো

প্রত্যক্ষণের স্তর বা পর্যায়গুলি উল্লেখ করো

উত্তর :

প্রত্যক্ষণের সংজ্ঞা :

1মনােবিদ টিচেনার  (Titchener)সংবেদনমূলক ও প্রতিরূপ সংক্রান্ত উপাদানের জটিল প্রক্রিয়া হল প্রত্যক্ষণ।
2পিলসবেরি (Pillsbury)প্রত্যক্ষণ হল সংবেদন ও স্মৃতির সংশ্লেষণ বা সংমিশ্রণ।
3মনােবিদ হেব (Hebb)তথ্য সংগ্রহ, তথ্য নির্বাচন এবং প্রতিক্রিয়া সম্পাদনের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া হল প্রত্যক্ষণ।

প্রত্যক্ষণের স্তর বা পর্যায় :

প্রত্যক্ষণকে বিশ্লেষণ করলে বেশ কয়েকটি স্তর বা পর্যায়ের সন্ধান পাওয়া যায়। এই স্তর বা পর্যায়গুলি হল — 

[1] পৃথককরণ : প্রত্যক্ষণের প্রথম পর্যায় বা স্তর হল। পৃথকরণ। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- চিনি মুখে দিলে মিষ্টির স্বাদ পাওয়া যায়। অর্থাৎ স্বাদ সম্পর্কিত সংবেদনটিকে দর্শন। সংবেদন, ঘ্রাণ সংবেদন, শ্রবণ সংবেদন এবং স্পর্শ সংবেদন। থেকে আলাদা করা যায়। 

[2] সদৃশকরণ : প্রত্যক্ষণের দ্বিতীয় স্তর বা পর্যায়টি হল সদৃশকরণ। অতীতে এধরনের যেসব স্বাদ সংবেদন পাওয়া গেছে সেগুলির সঙ্গে এই সংবেদনটির মিল বা সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। এই মিষ্টি স্বাদ যে চিনির তা আবিষ্কার করা যায়। 

[3] অনুষঙা ও পুনরুৎপাদন : প্রত্যক্ষণের তৃতীয় স্তর বা | পর্যায়টি হল অনুষঙ্গ ও পুনরুৎপাদন। এই স্তরে বা পর্যায়ে। ব্যক্তির মনে নানান অভিজ্ঞতার পুনরুৎপাদন ঘটে। পাশাপাশি অতীত অভিজ্ঞতার সঙ্গে বর্তমান অভিজ্ঞতার অনুষঙ্গ রচিত হয়। চিনির মিষ্টতা-র প্রত্যক্ষণের জন্য আগে চিনির স্বাদ উপলব্ধি করে যে ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেই অভিজ্ঞতার পুনরুৎপাদন ও অনুষঙ্গ স্থাপনের মধ্য দিয়ে চিনির মিষ্টতাকে সঠিকভাবে শনাক্ত করার দরকার হয়। 

[4] বসুচেতনা ও থান-কাল নির্দেশ : প্রত্যক্ষণের চতুর্থ স্তর বা পর্যায়টি হল বস্তুচেতনা ও স্থান-কাল নির্দেশ। এই স্তরে বস্তুটিকে শনাক্ত করার বা চেনার কাজটি সম্পাদিত হয়। এবং সেটির অবস্থানও নির্দেশ করা যায়। যেমন—আমার বাড়ির নিকটবর্তী কোনাে একস্থান থেকে আমার পরিচিত একজন আমাকে ডাকছে। কে ডাকছে এবং কোথায় দাঁড়িয়ে ডাকছে সে-সম্পর্কে আমরা প্রত্যক্ষণ করতে পারি। 

[5] বিশ্বাস : প্রত্যক্ষণের শেষ স্তরটি হল বিশ্বাস। প্রত্যক্ষণের দ্বারা যে জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা লাভ করা হয়, সেই সম্পর্কে প্রত্যয়ই হল সঠিক অর্থে বিশ্বাস। সংবেদনকে প্রত্যক্ষণের স্তরে নিয়ে। যেতে গেলে এই বিশ্বাসের পর্যায়ে পৌঁছােনাের দরকার হয়। উপরিউক্ত আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উদ্দীপকের প্রভাবে সৃষ্টি যে-কোনাে সংবেদনকে প্রত্যক্ষণের স্তরে উপনীত করতে গেলে তাকে পরপর পাঁচটি ধাপ বা পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এগুলি হল — পৃথকরণ, সদৃশকরণ, অনুষঙ্গা ও পুনরুৎপাদন, বস্তুচেতনা ও স্থানকাল নির্দেশ এবং বিশ্বাস।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment