সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি কাকে বলে | সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখাে

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি কাকে বলে? সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখাে। 2 + 6

উত্তর : 

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি : 

যেসকল কার্যাবলি ছাত্রছাত্রীদের বৌদ্ধিক বিকাশের পাশাপাশি তাদের অন্যান্য বিকাশের দিকগুলিকেও সফল করে তােলে, তাদের বলা হয় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি।

পঠনপাঠনের বাইরে শিক্ষার্থীদের কাজকে সম্প্রসারিত করার জন্য যেসকল প্রয়ােজনীয় কার্যাবলির ব্যবস্থা করা হয়, তাদের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি বলে। যেমন—মহাপুরুষদের জন্মতিথি পালন, বৃক্ষরােপণ, স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন ইত্যাদি।

সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলির বৈশিষ্ট্যসমূহ : 

[1] শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশে সহায়তা : সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক, মানসিক, প্রক্ষোভিক, সামাজিক, নৈতিক প্রভৃতি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

[2] কর্মের পরিবর্তন : সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি প্রাত্যহিক বাঁধাধরা পুথিগত শিক্ষার কাজ থেকে ছাত্রছাত্রীকে কিছু সময়ের জন্য হলেও মুক্তি দেয়। এর মাধ্যমে তারা পুনুরুজ্জীবন লাভ করে। এককথায় একঘেয়েমি থেকে পরিবর্তন হল সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি। 

[3] আগ্রহ সৃষ্টিতে সহায়ক : সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি সর্বদাই ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, এই ধরনের কার্যাবলি ছাত্রছাত্রীদেরকে বিভিন্ন ধরনের কাজের প্রতি নতুনভাবে আগ্রহী করে তােলে। 

[4] ব্যক্তিবৈষম্যের নীতিনির্ভর : সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে বৈচিত্র্য থাকে। শিক্ষার্থীরা আপন ইচ্ছানুসারে পছন্দের কাজটিতে অংশগ্রহণ করতে পারে। তাই বলা যায় এটি মনােবৈজ্ঞানিক এবং ব্যক্তিবৈষম্যের নীতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে তােলা হয়।

[5] সৃজনশীলতার বিকাশে সহায়ক : ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নানান ধরনের সৃজনশীল গুণ সুপ্ত অবস্থায় থাকে। সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণ করলে, ছাত্রছাত্রীদের এইসকল গুণাবলি সঠিকভাবে বিকশিত হওয়ার সুযােগ পায়। 

[6] চাহিদা পুরণে সহায়ক : সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্যে নানান ধরনের কাজকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শিক্ষার্থীরা নিজেদের চাহিদা মতাে কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। ফলে তাদের বিশেষ বিশেষ চাহিদাগুলি পূরণ হয়।

[7] আনন্দদানে সক্ষম : সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত কাজগুলি শিক্ষার্থীকে সর্বদাই আনন্দ ও তৃপ্তি দান করে থাকে। ফলে শিক্ষার্থীরা আনন্দ পাওয়ার জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণ করে। 

[8] সমাজনির্ভর : সমাজের প্রয়ােজন ও দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি নির্বাচন করা হয়। ফলে এই কার্যাবলি সমাজ ও ব্যক্তির মধ্যে সেতুবন্ধন করে। 

[9] গণতান্ত্রিক আদর্শ নির্ভর : সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দলগতভাবে অংশগ্রহণ করে। দলগতভাবে কর্মসম্পাদনের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববােধ, সহযােগিতার মনােভাব ইত্যাদির সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক আদর্শের দ্বারা পরিচালিত হয়ে সহযােগী, দায়িত্ববান, সমাজসচেতন ব্যক্তিতে পরিণত হয়। 

[10] জাতীয় সংহতি ও আন্তর্জাতিকতার বিকাশে সহায়ক : বিভিন্ন ধরনের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জাতীয় ঐক্যও আন্তর্জাতিকতাবােধের বিকাশে সহায়তা করে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

1 thought on “সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি কাকে বলে | সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখাে”

Leave a Comment