অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতির সুবিধা কী?

অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতির সুবিধা কী? Class 12 | Philosophy (মিলের পরিক্ষণমূলক পদ্ধতি) 8 Marks

উত্তর:-

অন্বয়ব্যতিরেকী পদ্ধতির সুবিধা 

অন্বয় ব্যতিরেকী পদ্ধতিটি মূলত পর্যবেক্ষপের ওপর প্রতিষ্ঠিত বলে এক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণলব্ধ কতকগুলি সুবিধা দেখা যায়। অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতির এই সমস্ত সুবিধাগুলিকে নীচে উল্লেখ করা হল। 

[1] বিভূত প্রয়োগক্ষেত্র: অন্বয় ব্যতিরেকী পদ্ধতির প্রয়ােগক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক বা বিস্তৃত। কারণ, এই পদ্ধতিকে অন্বয়ী পদ্ধতির দ্বৈত প্রয়ােগরূপে অভিহিত করা হয়। সুতরাং অন্বয়ী পদ্ধতির ন্যায় এই পদ্ধতিটিও পর্যবেক্ষণ নির্ভর বলে কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একে ব্যাপকভাবে প্রয়ােগ করা যায়। আবার যেসমস্ত ক্ষেত্রে ব্যতিরেকী পদ্ধতির প্রয়ােগ সম্ভব নয়, সেই সমস্ত ক্ষেত্রেও এই অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে প্রয়ােগ করা যায়। 

[2] বহুকারণবাদের সম্ভাবনা থেকে বহুলাংশে মুক্ত: বহুকারণবাদের সম্ভাবনা থেকেও এই পদ্ধতি বহুলাংশে মুক্ত। কারণ, অন্বয়ী পদ্ধতি শুধু কতকগুলি পর্যবেক্ষণলব্ধ সদর্থক দৃষ্টান্তসমূহের ওপর প্রতিষ্ঠিত বলে তা বহুকারণবাদের সম্ভাবনার শিকার হতে পারে। কিন্তু অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতি একদিকে যেমন কতকগুলি সদর্থক দৃষ্টান্তসমূহ এবং অপরদিকে কতকগুলি নঞর্থক দৃষ্টান্তসমূহের ওপর প্রতিষ্ঠিত, সেহেতু তা বহুকারবাদের সম্ভাবনা থেকে অনেকাংশেই মুক্ত হতে পারে। আরও উল্লেখ করা যায় যে, সিদ্ধান্তটি এক্ষেত্রে অন্বয়ী পদ্ধতি অপেক্ষা আরও বেশি বলিষ্ঠভাবে গ্রহণীয় হতে পারে। 

[3] উন্নত পর্যবেক্ষণলব্ধ পদ্ধতি: অন্বয় ব্যতিরেকী পদ্ধতির ক্ষেত্রে আমরা একদিকে যেমন কারণ থেকে কার্যে উপনীত হতে পারি, অপরদিকে তেমনি আবার কার্য থেকে কারণেও যেতে পারি। এর ফলে কার্যকারণ সম্পর্কিত ধারণাটিকে বিস্তৃত ও যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি সুনিশ্চিত না হলেও, সিদ্ধান্তের সম্ভাবনাটি অনেক বেশি বেড়ে যায়। এই পদ্ধতিটিকে তাই অন্যান্য পর্যবেক্ষণশীল পদ্ধতির এক উন্নতরূপ হিসেবে স্বীকার করা হয়। 

[4] অম্বয়ী পদ্ধতির অসম্পূর্ণতা সংশোধনের সুযোগ: আমরা জানি যে, অন্বয়ী পদ্ধতি (method of agreement) শুধুমাত্র কার্যকারণ সম্পর্কের একটা ইঙ্গিত দেয়। পদ্ধতিটি কখনােই কার্যকারণ সম্পর্ককে প্রমাণ করতে পারে না। এ হল মূলত এক আবিষ্কারের পদ্ধতি, কখনােই প্রমাণের পদ্ধতি নয়। কিন্তু অন্বয় ব্যতিরেকী পদ্ধতিটি অন্বয়ী পদ্ধতির এরূপ অসম্পূর্ণতাকে বহুলাংশে দূর করে। এটি কোনো কোনাে সময় কার্যকারণ সম্পর্ককে প্রমাণও করে, আবার কোনাে কোনাে সময় একে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠাও করে। 

[5] ব্যতিরেকী পদ্ধতির বিকল্প: ব্যতিরেকী পদ্ধতির আলােচনায় দেখা গেছে যে, এরুপ পদ্ধতিটি শুধুমাত্র পরীক্ষণের ক্ষেত্রেই প্রযােজ্য, পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে নয়। কিন্তু অন্বয় ব্যতিরেকী পদ্ধতি পর্যবেক্ষণমূলক পদ্ধতিরূপে গণ্য হওয়ায় তা পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলকভাবে প্রযােজ্য এমন অনেক ক্ষেত্র দেখা যায়। যেখানে পরীক্ষণের বিষয়টি প্রযােজ্য নয়, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে অন্বয় ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে ব্যতিরেকী পদ্ধতির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করার সুবিধা আছে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment