দশম শ্রেনী (মাধ্যমিক) Class 10 Life Science একটি আদর্শ নিউরােনের গঠন বর্ণনা করাে।

একটি আদর্শ নিউরােনের গঠন বর্ণনা করাে। 

প্রশ্ন: একটি আদর্শ নিউরােনের গঠন বর্ণনা করাে। 

উত্তর: একটি আদর্শ নিউরােন প্রধানত দুটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথা – কোশদেহ (Cell Body) এবং প্রবর্ধক (Process)।

কোশদেহ : নিউরােনের গােলাকার বা ডিম্বাকার বা নক্ষত্রাকার কোশের মতাে অংশটিকে কোশদেহ বা সেল বডি বা সাইটন বলে। কোশের বাইরে লাইপােপ্রােটিন নির্মিত পর্দা থাকে। কোশপর্দার ভিতরের সাইটোপ্লাজমকে নিউরােপ্লাজম বলে। নিউরােপ্লাজমের কেন্দ্রের দিকে একটি বড়াে গােলাকার বা ডিম্বাকার নিউক্লিয়াস থাকে। কোশদেহের সাইটোপ্লাজমে নিউক্লিয়াস ছাড়া অন্যান্য কোশ অঙ্গাণু যেমন—মাইটোকন্ড্রিয়া, গলগিবস্তুু সেন্ট্রোজোম ইত্যাদি কোশ অঙ্গাণু উপস্থিত থাকে। নিউরােনের সেন্ট্রোজোম নিষ্ক্রিয় থাকে, তাই নিউরােন বা স্নায়ুকোশ বিভাজিত হয় না। নিউরােপ্লাজমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তন্তুু ছড়িয়ে থাকে, এদের নিউরােফাইবিল বলে। এগুলি স্নায়ুকোশের সংকোচনে সহায়তা করে। নিউরােপ্লাজমে রাইবােনিউক্লিও প্রােটিন দ্বারা গঠিত একপ্রকার দানা দেখা যায় যা প্রােটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে। এই দানাগুলিকে নিজল দানা বলে।

প্রবর্ধক : নিউরােনে দুই প্রকার প্রবর্ধক দেখা যায়। 

যথা : অ্যাক্সন ও ডেনড্রন।

অ্যাক্সন : কোশদেহ থেকে নির্গত দীর্ঘ প্রবর্ধককে অ্যাক্সন বলে। কোশদেহের যে স্থান থেকে অ্যাক্সন উৎপন্ন হয় তাকে অ্যাক্সন হিলক বলে। অ্যাক্সনের বাইরে থেকে ভিতরের দিকে যথাক্রমে অ্যাক্সোলেমা, মায়ােলিন সদ ও নিউরােলেমা নামক আবরণে আবৃত থাকে। এটি নিউরােনের আজ্ঞাবহ প্রবর্ধক। অ্যাক্সনের সাইটোপ্লাজমকে অ্যাক্সোপ্লাজম বলে। অ্যাক্সনের সবচেয়ে বাইরের আবরণকে বলে অ্যাক্সোলেমা । অ্যাক্সোলেমার বাইরে স্নেহ পদার্থের একটি মােটা আবরণ গঠিত হয়। একে মায়ােলিন সিদ বলে। অ্যাক্সনে মায়ােলিন আবরণবিহীন সংকুচিত অংশকে  র‍্যানভিয়ারের পর্ববা নােড অর‍্যানভিয়ার (Node of Ranvier) বলে। 

           মায়ােলিন সিদের বাইরের আবরণটিকে নিউরেলেমা বলে। অ্যাক্সনের মায়ােলিন সিদ ও নিউরেলেমার সংযােগস্থলে একপ্রকার কোশ থাকে। বিজ্ঞানীর নাম অনুসারে একে সােয়ান সেল বা সােয়ান কোশ বলে। অ্যাক্সনের শেষ প্রান্ত অসংখ্য সূক্ষ্ম শাখাপ্রশাখা গঠন করে। একে প্রান্তবুরুশ বলে।

কাজ : অ্যাক্সন কোশদেহ থেকে স্নায়ুস্পন্দন পরিবহণ করে দূরে নিয়ে যায়।

ডেনড্রন : কোশদেহ থেকে নির্গত ক্ষুদ্র আকৃতির শাখাপ্রশাখাযুক্ত প্রবর্ধককে ডেনড্রন বলে। ডেনড্রনে মায়ােলিন সিদ এবং সােয়ান কোশ থাকে না। ডেনড্রনে নিজল দানা এবং নিউরােফাইব্রিল থাকে। ডেনড্রনের শাখাকে ডেনড্রাইট বলে।

কাজ : ডেনড্রনের মাধ্যমে পূর্ববর্তী স্নায়ুকোশ বা নিউরােন থেকে স্নায়ুস্পন্দন কোশদেহে প্রবেশ করে।

Read Also

স্নায়ুতন্ত্রের সংজ্ঞা দাও। স্নায়ুতন্ত্রের কাজ লেখাে।

একটি আদর্শ নিউরােনের গঠন বর্ণনা করাে।

কার্য অনুযায়ী বিভিন্নপ্রকার স্নায়ুর শ্রেণিবিভাগ করাে। প্রত্যেক প্রকারের সংজ্ঞা ও উদাহরণ দাও।

অগ্রমস্তিষ্কের প্রধান অংশগুলির অবস্থান ও কাজ লেখাে।

পশ্চাৎমস্তিষ্কের প্রধান অংশগুলির অবস্থান ও কাজ লেখাে।

জ্ঞানেন্দ্রিয় হিসাবে জিহ্বা, নাসিকা ও ত্বকের ভূমিকা আলােচনা করাে।

গমন কী ? গমনের চালিকাশক্তিগুলি সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!