জনবিস্ফোরণ বলতে কী বােঝ?ভারতে জনবিস্ফোরণের কারণ ও ফলাফল সম্পর্কে আলােচনাকর। Class 12 | Sociology (সাম্প্রতিক কালের সামাজিক বিচার্য বিষয়) 3+5=8 Marks
উত্তর: জন্মহার বৃদ্ধি, মৃত্যুহার হ্রাস, প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি, শিশু মৃত্যু হার হ্রাস ইত্যাদি কারণে জনসংখ্যার আকষ্মিক বৃদ্ধি পাওয়াকে জনবিস্ফোরণ বলে। | বর্তমান বিশ্বে জনবিস্ফোরণের সমস্যা এক গভীর চিন্তার বিষয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে। চিকিৎসা শাস্ত্র ও প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতীর ফলে মৃত্যুর হার হ্রাস পায়। এর ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষতঃ উন্নতীশীল দেশগুলিতে জনসংখ্যার আকস্মিক বৃদ্ধি ঘটে জনবিস্ফোরণের আকার ধারণ করে।
ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণসমূহ : ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত কারণসমূহ বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য
(ক) কম বয়সে বিবাহ : মহিলাদের বয়সের সঙ্গে সন্তান প্রজননের ক্ষমতা ওতপ্রােতভাবে সম্পর্কযুক্ত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সন্তান প্রজননের ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। সুতরাং অল্প বয়সে বিবাহ হলে মহিলাদের প্রজননক্ষম সময়সীমা বেশী থাকার জন্য অধিক সংখ্যায় সন্তান প্রসবের সুযােগ থাকে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি হ্রাস করতে গেলে মেয়েদের বিবাহের বয়স বাড়াতে হবে। বর্তমানে আঠারাে বছর বয়সের আগে আইনানুসারে মেয়েদের বিবাহ নিষিদ্ধ হলেও এখনাে সমাজের বিভিন্ন অংশে আঠারাে বছরের আগেই বিবাহ সম্পন্ন হচ্ছে।
(খ) জন্মহার ও মৃত্যুহারের মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান : ভারতে জনস্ফীতির অন্যতম কারণ হল জন্মহার ও মৃত্যুহারের মধ্যে অধিক ব্যবধান। আগেকার দিনে দুর্ভিক্ষ, মহামারী, ম্যালেরিয়া, কলেরা প্রভৃতি বিবিধ সংক্রামক ব্যাধির প্রাদুর্ভাবে ভারতে বহু মানুষের অকালে মৃত্যু ঘটতাে। উপযুক্ত চিকিৎসা ও পরিকল্পনার অভাবে সাধারণ রােগ ও সংক্রামকের আকার ধারণ করে বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতাে। স্বাধীন ভারতে বিবিধ জনস্বাস্থ্য। পরিকল্পনা গ্রহণ করার ফলে সাধারণ রােগে মৃত্যুর হার বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। ভারতবর্ষে বর্তমানে মৃত্যুহার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেলেও জন্মহার সেই তুলনায় হ্রাস পায়নি, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। প্রাসঙ্গিক পরিসংখ্যান হল বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে প্রতি হাজারে জন্মহার ছিল ৪০.৯ এবং মৃত্যুহার ছিল ২২.০। সুতরাং যে সময় জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার ছিল হাজারে ১৮.৯। ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জন্মহার প্রতি হাজারে ২০.৯৭ এবং মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৭.৪৮| অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রতি হাজারে ১৩.৫। এই বৃদ্ধির হার এখনাে। স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশী।
(গ) দারিদ্র : ভারতে জন্মহার বৃদ্ধির পেছনে আর্থ-সামাজিক কারণের অস্তিত্ব অনস্বীকার্য। ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দারিদ্র অন্যতম কারণ। দরিদ্র পরিবার অধিক সন্তান বিশেষ করে পুত্র সন্তানকে সম্পদ হিসাবে গণ্য করে। তারা পুত্র সন্তানকে বােঝা হিসাবে নয় বা ভবিষ্যতের সুরক্ষা হিসাবে মনে করে। তাই অধিক সংখ্যায় পুত্র সন্তান লাভের আশায় তারা একের পর এক সন্তান প্রজনন করে।bসুতরাং ভারতের জনবিস্ফোরণের জন্য দারিদ্র অন্যতম কারণ।
(ঘ) নগরায়ণের ধীরগতি : শহরাঞ্চলে সন্তান প্রজননের হার কম এবং গ্রামাঞ্চলে সন্তান প্রজননের হার বেশী। শহরাঞ্চলের জীবনধারায় বিবিধ সমস্যা বর্তমান। উদাহরণ হিসাবে আবাসনের সমস্যা, ভরণপােষণের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় প্রভৃতি। স্বভাবতই শহরের মানুষজন জীবনযাপনের ব্যয়াধিক্যের জন্য পরিবার পরিকল্পনা ও কম সন্তানের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করেন। গ্রামাঞ্চলে জীবনযাপনের সংশ্লিষ্ট সমস্যাদি তত তীব্র নয়। স্বভাবতই সন্তানের সংখ্যা নিয়ে গ্রামের অধিবাসীরা বিশেষ বিচলিত নয়। এই কারণে গ্রামাঞ্চলে সন্তান উৎপাদনের হার শহরাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট হারের থেকে অধিক হয়ে থাকে। ভারতে নগরায়ণের প্রক্রিয়া সম্যক ও সন্তোষজনকভাবে হয়নি। স্বভাবতই ভারতে জন্মের হার অধিক।।
(ঙ) শিক্ষার অভাব : ভারতে জন্মহার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসাবে নিরক্ষরতার কথা বলা হয়। স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পর অর্ধশতাব্দীর অধিককাল ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। এখনও নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা কমবেশী ছাব্বিশ শতাংশ। আবার নিরক্ষরদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যাই অধিক। পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনা। করার এবং পরিবারকে ছােট রাখার প্রাথমিক জ্ঞানবুদ্ধিও এদের নেই। ভারতের অর্থনীতি গ্রামীণ ও কৃষিপ্রধান। এ ধরনের পরিস্থিতি-পরিমণ্ডলের মধ্যে পুত্রসন্তান লাভের ব্যাপারে বাসনা বিশেষভাবে বর্তমান দেখা যায়। নিরক্ষরতা ও অশিক্ষাই এর জন্য দায়ী। এইভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
(চ) ধর্মীয় ও সামাজিক প্রথা : ভারতে জন্মহারের আধিক্যের অন্যতম কারণ হিসাবে ধর্মীয় ও সামাজিক বিধি-রীতির কথা বলা হয়। অনেক ধর্মভীরু মানুষের কাছে সন্তান হলাে ভগবানের দান। সুতরাং জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরােপ করা অধর্মের সমান। এ ছাড়া বহু সমাজে বাল্য বিবাহ ও বহু বিবাহ একটি সামাজিক রীতি। জন্মহার বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে এ সবের গুরুত্ব কম নয়।।
(ছ) যৌথ পরিবারব্যবস্থা : ভারতের সাবেকি যৌথ পরিবারব্যবস্থা জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসাবে পরিগণিত হয়। সাবেকি যৌথ পরিবারব্যবস্থায় তরুণ বয়সের স্বামী-স্ত্রীর সন্তান প্রতিপালনের ব্যাপারে তেমন কোন দায়-দায়িত্ব থাকে না। সুতরাং সন্তান মানুষ করার ঝক্কি-ঝামেলার দুশ্চিন্তা থেকে তারা। মুক্ত। আবার এই সমস্ত পরিবারে সদস্যদের বিনােদনের ব্যাপারে বিশেষ কোন ব্যবস্থা থাকে না। ফলে এক বা একাধিক সন্তান প্রতিপালন এই রকম পরিবারে খুবই সাধারণ ব্যাপার। তার ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
ভারতে জনবিস্ফোরণের ফলাফল।
জনবিস্ফোরণের চাপে ভারতে গণ-বেকারত্ব, গণ-দারিদ্র্য, অর্ধাহার, অপুষ্টি প্রভৃতি সমস্যাদি ভয়াবহ। হয়ে উঠেছে। এশিয়া-আফ্রিকার গুটিকয়েক দেশের কথা বাদ দিলে মাথাপিছু আয় ভারতেই সব থেকে কম। স্বাধীন ভারতে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু খাদ্যের উৎপাদনে স্থিতিশীলতা আসেনি। ভারতের কৃষি-অর্থনীতি অদ্যাবধি অনেকাংশে প্রকৃতির বদান্যতার উপর নির্ভরশীল। ভারতে খাদ্যের যােগান পর্যাপ্ত, একথা বলা যাবে না। এখনাে বহু মানুষ অপুষ্টিকর ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসে অভ্যস্থ।
ভারতের অর্থনীতিক কাঠামােতে অভাবনীয় কোনাে পরিবর্তন ঘটেনি। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেছে। লাগামছাড়াভাবে। জনবিস্ফোরণের এই সমস্যা বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক কাঠামাের উপর সংকটের সৃষ্টি করেছে। ভারতের মানুষের জীবনধারার উপর জনবিস্ফোরণের প্রভাব-প্রতিক্রিয়া পর্যালােচনার ক্ষেত্রে ‘পারিবারিক দুর্গতির সূচক’ (HMI-Household Misery Index) -কে মানদণ্ড হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পারিবারিক দুর্গতির সূচক পর্যালােচনার ক্ষেত্রে পাঁচটি নির্ধারকের উপর গুরুত্ব আরােপ করা হয় । (১) পাকাবাড়ি, (২) বিদ্যুৎ, (৩) পরিশ্রত পানীয় জল, (৪) রান্নার জ্বালানি এবং (৫) শৌচালয়। কোনাে কোনাে সমাজবিজ্ঞানী মানবসম্পদের উপর জনবিস্ফোরণের প্রভাব-প্রতিক্রিয়া পর্যালােচনা করতে গিয়ে সাক্ষরতা, জনস্বাস্থ্য প্রভৃতি বিষয়াদির উপর জোর দিয়েছেন। মানুষের বঞ্চনা ও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাসমূহ পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জনবিস্ফোরণের ফলাফল পর্যালােচনা করা যায়। ১৯৯৬ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতের মােট জনসংখ্যার ৫১.৫ শতাংশের কোনরকম পাকাবাড়ি নেই। দেশের ৪৯.১ শতাংশ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই; পরিশ্রুত পানীয় জল পায় না ১৯ শতাংশ মানুষ; ৬৯.৭ শতাংশ মানুষের শৌচালয় নেই। ১৯৯০ সালে ‘মানব উন্নয়ন সূচক’ (HDI-Human Development Index)-এর অন্তর্ভুক্ত কতকগুলি নির্দিষ্ট বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে অন্য কতকগুলি দেশের তুলনামূলক আলােচনা করা হয়। এই আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে এক হতাশাজনক চিত্র প্রতিপন্ন হয়। মানব উন্নয়ন সূচক’ (HDI) অনুসারে ২০১৫ সালে ভারত ১৩০তম স্থানে অবস্থিত।
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতবর্ষের ২২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতে বছরে মাত্র পাঁচশত টাকা বা চৌদ্দ ডলার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ব্যয় করা হয়। মালয়েশিয়ায় এই খাতে খরচ ১৬০ ডলার। এই পরিসংখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী প্রায় ৩৪ কোটি মানুষের দুর্দশা সহজেই অনুমান করা যায়। মােটামুটিভাবে বলা যায় যে, ভারতের মােট জনসংখ্যার সঙ্গে প্রতি বছর নতুন করে যুক্ত হয় ১.৭ কোটি। বছরে বৃদ্ধি পাওয়া এই জনসংখ্যার জন্য দরকার ৫ লক্ষ টন খাদ্যশস্য, ৩০ লক্ষ নতুন চাকরি এবং ২.৫ মিলিয়ন আবাসন। এদের স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য দরকার ৫ হাজার হাসপাতাল, ২ হাজার প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র, ৫০ হাজার ডাক্তার, ২৫ হাজার নার্স। প্রতি বছর বৃদ্ধি পাওয়া এই জনসংখ্যার শিক্ষার জন্য দরকার দেড় লক্ষ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল এবং এই সমস্ত স্কুলের জন্য দরকার ৫০ লক্ষ শিক্ষক; দশহাজার উচ্চমাধ্যমিক স্কুল এবং এই সমস্ত স্কুলের জন্য দেড়লক্ষ শিক্ষক।
বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যা একশ’ একুশ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এদের সকলের জন্য আবাসন, চাকরির ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা প্রভৃতির কথা ভাবা যায় না। তার উপর আবার যুক্ত হবে ১.৭ কোটি মানুষ। এদের সকলের জন্য খাদ্য, পরিধেয়, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রভৃতির ন্যূনতম ব্যবস্থা করা নেহাতই অসম্ভব ব্যাপার। ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বর্তমান হার যদি অব্যাহত থাকে, তা হলে ভারতবর্ষের জনসংখ্যা অদূর ভবিষ্যতে চীনকেও ছাপিয়ে যাবে। উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবে এই বিপুল জনসংখ্যা। বেকার, ক্ষুধার্থ, বিচ্ছিন্ন মানসিকতার মানুষের সৃষ্টি করতে পারে।
ভারত হল একটি উন্নয়নশীল দেশ। ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ বিষয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই। এতদসত্ত্বেও আতঙ্কিত হয়ে পড়ার মত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। ভারতে খাদ্যের উৎপাদন ও মাথাপিছু আয় ধীরগতিতে হলেও বাড়ছে। খাদ্য উৎপাদনে ভারত স্বয়ম্ভরতা অর্জন করেছে। বিগত বেশ কয়েকবছর ধরে ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে খাদ্যোৎপাদন বৃদ্ধির হার ছাড়িয়ে গেছে। আবার গ্রেট ব্রিটেন, ইতালি, জাপান প্রভৃতি উন্নত দেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি। ভারতে কিন্তু জনসংখ্যার ঘনত্ব সেই তুলনায় কম। ভারতের জনসংখ্যার উপযুক্ত পরিকল্পনা করতে পারলে এই জনসংখ্যাই ভারতের সম্পদ হিসাবে পরিচালিত হবে।
মানদণ্ড ত্রিবিধ: (১) কতকগুলি এলাকার উর্বরতার হার অত্যন্ত অধিক। এই কারণে এই সমস্ত এলাকায় পরিবার পরিকল্পনার প্রকল্পসমূহের প্রয়ােগের ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ-আয়ােজন গ্রহণ করা দরকার; (২) কিছু কিছু এলাকায় পরিবার পরিকল্পনার কর্মসূচীর প্রয়ােগের সুবাদে উর্বরতার হার নিয়ন্ত্রিত হয়েছে; এবং (৩) কতকগুলি এলাকায় পরিবার পরিকল্পনার প্রকল্প প্রযুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও উর্বরতার হার কম। এভাবে আঞ্চলিক বিভাজনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবার পরিকল্পনার প্রকল্প প্রণয়ন ও প্রয়ােগের ব্যাপারে উদ্যোগআয়ােজন গ্রহণ করা দরকার। তা হলে পরিবার পরিকল্পনা প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবে।
মূল্যায়ন (Evaluation) : প্রকৃত প্রস্তাবে জনস্ফীতি রােধের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহুবিধ উদ্যোগআয়ােজন গ্রহণ করা দরকার। পরিবার পরিকল্পনার কর্মসূচীকে সাফল্যমণ্ডিত করে তােলার জন্যও বিভিন্ন বিষয়ে নানা সদর্থক ব্যবস্থা অবলম্বন করা আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে সাফল্যের স্বার্থে দরকার হল জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা ও আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করা। শিক্ষার বিকাশ ও বিস্তার এ ক্ষেত্রে অপরিহার্য প্রতিপন্ন হয়। শিক্ষার সম্প্রসারণের সুবাদে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা জাগ্রত ও বিকশিত হলে জনস্ফীতি রােধে সাফল্য পাওয়া যাবে। তা ছাড়া জনসাধারণের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনার পক্ষে প্রেরণামূলক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
অধ্যাপক আহুজা পরিবার পরিকল্পনার কর্মসূচীর সাফল্যের স্বার্থে বিবাহের বয়স বৃদ্ধি করার কথা বলেছেন এবং একাধিক সন্তান প্রজননের মধ্যে ব্যবধান বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি নির্বীজকরণের উপর অধিক গুরুত্ব আরােপের পক্ষপাতী ছিলেন না।
জনস্ফীতি রােধ ও পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থাদির মাধ্যমে অল্পবিস্তর সুফল পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আইনী পথে খুব বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যাবে না। জনস্ফীতি রােধের ক্ষেত্রে আর্থনীতিক উন্নয়নই হল সর্বাধিক অর্থবহ উপায়।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।