Class 12 Class 12 Sociology দারিদ্র্য বলতে কি বােঝায়? এই প্রসঙ্গে দারিদ্রের অশুভ চক্র বর্ণনা কর চিরম দারিদ্র্য বা পুরােদস্তুর দারিদ্র্য ও আপেক্ষিক দারিদ্র বলতে কী বােঝ?

দারিদ্র্য বলতে কি বােঝায়? এই প্রসঙ্গে দারিদ্রের অশুভ চক্র বর্ণনা কর চিরম দারিদ্র্য বা পুরােদস্তুর দারিদ্র্য ও আপেক্ষিক দারিদ্র বলতে কী বােঝ?

দারিদ্র্য বলতে কি বােঝায়? এই প্রসঙ্গে দারিদ্রের অশুভ চক্র বর্ণনা কর চিরম দারিদ্র্য বা পুরােদস্তুর দারিদ্র্য ও আপেক্ষিক দারিদ্র বলতে কী বােঝ? Class 12 | Sociology (সাম্প্রতিক কালের সামাজিক বিচার্য বিষয়) 3+5=8 Marks

উত্তর : সাধারনভাবে বলা যায় জীবনধারনের জন্য ন্যূনতম প্রয়ােজনীয় খাদ্য, পরিধেয়, আবাসন জোগাড় করার মত আয়ের অভাবই হলাে দারিদ্র্যতা।

সমাজতাত্ত্বিক দিক থেকে বলা যায় দারিদ্র হল একটি বিশেষ অবস্থা। এই অবস্থা হলাে মানুষের যা আছে’ বা ‘যা থাকা উচিত এই দুইয়ের মধ্যে বৈষম্য। আবার ‘যা থাকা উচিত’ তা স্থান, কাল ও ব্যক্তি বিশেষে পরিবর্তনশীল। বিভিন্ন দেশে দারিদ্র সম্পর্কিত ধারণা সংশ্লিষ্ট সমাজের ন্যূনতম জীবনযাত্রা বা সুন্দর জীবনযাত্রার মানের উপর নির্ভরশীল। দারিদ্র সম্পর্কিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ও ভারতীয় ধারণা ভিন্ন। কারণ দুটি দেশের। মানুষের গড় জীবনযাত্রার মানের ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য বর্তমান।

দারিদ্র্যর অশভ চক্ক: সমাজতাত্ত্বিক দিক থেকে বিচার-বিবেচনা করলে বলতে হয় যে দারিদ্রতা একটি অশুভ চক্রের মধ্যে আবর্তিত হতে থাকে। দরিদ্ররা দরিদ্র পরিবেশ-পরিমণ্ডলের মধ্যে বসবাস করে। তাই তারা তাদের সন্তান-সন্ততিদের লেখাপড়ার জন্য বিদ্যালয়ে পাঠাতে পারে না। অর্থাৎ তাদের সন্তানেরাও। উপযুক্ত শিক্ষার অভাবে ভাল চাকরি পায় না; পেলেও ছােটোখাটো কম বেতনের চাকরি পায়। অর্থাৎ পরবর্তী। প্রজন্মকেও দারিদ্রের মধ্যে কাটাতে হয়। দরিদ্র হওয়ার জন্য তারা নিম্নমানের খাবার খেয়ে কোনােক্রমে জীবন-ধারণ করে। অর্থাৎ শারীরিকভাবে দরিদ্ররা অনেকাংশে অসমর্থ থাকে বা প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ে। দুর্বল শরীর নিয়ে দরিদ্ররা কোনাে ভারি কাজ করতে পারে না। কম বেতনের হাল্কা কাজ তাদের করতে হয়। অর্থাৎ এইভাবে চিরকাল তাদের দরিদ্র থাকতে হয়। সুতরাং দরিদ্রদের প্রতিটি প্রজন্মের জীবনচক্রের শুরু ও সমাপ্তি দারিদ্রের মধ্যেই ঘটে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পরিবারের বিশেষ কাউকে অধিক পরিশ্রম বা প্রতিভার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হতে হয়। আমাদের সমাজে এই রকম ব্যক্তির উদাহরণ প্রচুর। যারা আপন প্রচেষ্টায়। প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজেকে এবং পরিবারকে দারিদ্রর এই অশুভ চক্র থেকে মুক্ত করেছেন।

পুরােদস্তর ও আপেক্ষিক দারিদ্র : সমাজতাত্ত্বিক আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘পুরােদস্তর দারিদ্র’, চরম দারিদ্র (absolute poverty) এবং আপেক্ষিক দারিদ্র’ (relative poverty)-এর কথা বলা যায়।অভিন্ন গােষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত অন্যান্যদের সঙ্গে তুলনার পরিপ্রেক্ষিতে আপেক্ষিকভাবে কোনাে ব্যক্তি দরিদ্র প্রতি হতে পারে। কারণ সংশ্লিষ্ট গােষ্ঠীর অন্যান্যরা হল অপেক্ষাকৃত সম্পদশালী। এ হল আপেক্ষিক দান ধারণা। অপরদিকে পুরােদস্তর দারিদ্র বলতে বােঝায় যে, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজের এবং পরিবাহে ন্যূনতম সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নির্বাহে একেবারে অসমর্থ। এই কারণে দেশভেদে দারিদ্রের মাপকাঠি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে বাস্তবে জীবনের ন্যূনতম প্রয়ােজনসমূহ পুরণের অসামর্থ্যসূচক অবস্থাকে স৯ দারিদ্র বলা হয়। কিন্তু এই ন্যূনতম প্রয়ােজনসমূহের প্রকৃতি দেশ-কালভেদে পৃথক প্রতিপন্ন হয়। সততা পুরােদস্তুর দারিদ্র হল চূড়ান্তভাবে নিচু জীবনযাত্রার মানের অবস্থা। এই অবস্থায় এমনকি অপবিতার অভাবসমূহেরও পরিতৃপ্তি ঘটে না।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment