ন্যায়ের তৃতীয় ও চতুর্থ নিয়মের লঙ্ঘনে কোন্ কোন্ দোষের উদ্ভব ঘটে — তা উদাহরণসহ আলােচনা করাে।

ন্যায়ের তৃতীয় ও চতুর্থ নিয়মের লঙ্ঘনে কোন্ কোন্ দোষের উদ্ভব ঘটে — তা উদাহরণসহ আলােচনা করাে। Class 12 | Education (নিরপেক্ষ ন্যায়) | 8 Marks

উত্তর:-

ন্যায়ের তৃতীয় ও চতুর্থ নিয়ম লঙ্ঘনজনিত দোষ

নিরপেক্ষ ন্যায়ের ক্ষেত্রে যে দশটি সাধারণ নিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে প্রথম পাঁচটি নিয়মকে লঙ্ঘন করলে বিভিন্ন রকম দোষের উদ্ভব হয়। এখন তৃতীয় ও চতুর্থ নিয়মকে লঙ্ঘন করলে কোন্ দোষের উদ্ভব হয় — সেগুলিকে পরর উল্লেখ করে, উদাহরণসহ একে একে নীচে আলােচনা করা হল। 

তৃতীয় নিয়মের লঙ্ঘনজনিত

দোষ ন্যায় অনুমানের তৃতীয় নিয়মে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হেতুপদকে যুক্তিবাক্য দুটির মধ্যে অবশ্যই একবার না একবার ব্যাপ্য হতেই হয়। এই নিয়মকে লঙ্ঘন করলে যে দোষের উদ্ভব হয়, তাকে বলা হয় অব্যাপ্য হেতু (719 (fallacy of undistributed middle)

উদাহরণ

সকল বাঘ হয় মাংসাশী (A) →  প্রধান যুক্তিবাক্য

সকল কুকুর হয় মাংসাশী (A) →  অপ্রধান যুক্তিবাক্য

সকল কুকুর হয় বাঘ (A) → সিদ্ধান্ত

ব্যাখ্যা

এরূপ ন্যায় অনুমানটিতে দেখা যায় যে, হেতুপদ (A) তথা মাংসাশী— উভয় যুক্তিবাক্যে (A) বচনের বিধেয় স্থানে অবস্থান করায় একবারও ব্যাপ্য নয়। কারণ, (A) বচন শুধুমাত্র উদ্দেশ্যকেই ব্যাপ্য করে, বিধেয়কে করে না। সুতরাং এক্ষেত্রে অব্যাপ্য হেতু দোষের উদ্ভব হয়েছে।

চতুর্থ নিয়মের লঙ্ঘনজনিত দোষ

ন্যায়-অনুমানের চতুর্থ নিয়মে বলা হয়েছে — যে পদ যুক্তিবাক্যে ব্যাপ্য নয় সে। পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারে না। এই নিয়মটিকে লঙ্ঘন করলে দুটি দোষের উদ্ভব ঘটে — [1] অবৈধ সাধ্য দোষ (fallacy of illicit major) এবং [2] অবৈধ পক্ষ দোষ (fallacy of illicit minor)। এই দুটি দোষকে এখন পৃথক পৃথকভাবে উদাহরণসহ আলােচনা করা হল। 

[1] অবৈধ সাধ্য দোষ: আমরা জানি সাধ্যপদ একবার প্রধান যুক্তিবাক্যে এবং আর-একবার সিদ্ধান্তে উপস্থিত থাকে। সাধ্যপদটি প্রধান যুক্তিবাক্যে ব্যাপ্য না হয়ে যদি সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়, তাহলে যে দোষের উদ্ভব হয়—তাকে বলা হয় অবৈধ সাধ্য দোষ।

উদাহরণ

সকল কুকুর হয় চতুষ্পদ (A) → প্রধান যুক্তিবাক্য

কোনাে গােরু নয় কুকুর (E) → অপ্রধান যুক্তিবাক্য

.:. কোনাে গােরু নয় চতুষ্পদ (E)  → সিদ্ধান্ত

ব্যাখ্যা

এরূপ ন্যায় অনুমানে সাধ্যপদ হল চতুষ্পদ। এই চতুষ্পদ শব্দটি প্রধান যুক্তিবাক্যে (A) বচনের বিধেয় স্থানে অবস্থান করায় ব্যাপ্য নয়। কিন্তু ওই পদটি সিদ্ধান্তে (E) বচনের বিধেয় স্থানে অবস্থান করায় ব্যাপ্য হয়েছে। সুতরাং এরূপ যুক্তিটিতে অবৈধ সাধ্য দোষের উদ্ভব হয়েছে।

[2] অবৈধ পক্ষ দোষ ; আমরা জানি যে, পক্ষপদ একবার অপ্রধান। যুক্তিবাক্যে এবং আর একবার সিদ্ধান্তে অবস্থান করে। পক্ষপদটি অপ্রধান। যুক্তিবাক্যে ব্যাপ্য না হয়ে যদি সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়, তাহলে যে দোষের উদ্ভব হয়—তাকে বলা হয় অবৈধ পক্ষ দোষ।

উদাহরণ

কোনাে মানুষ নয় সংযত (E) → প্রধান যুক্তিবাক্য।

 সকল মানুষ হয় প্রাণী (A) → অপ্রধান যুক্তিবাক্য 

.’. কোনাে প্রাণী নয় সংযত (E) →  সিদ্ধান্ত 

ব্যাখ্যা

এরূপ ন্যায় যুক্তিটিতে দেখা যায় যে, পক্ষপদ তথা প্রাণী অপ্রধান # যুক্তিবাক্য (A) বচনের বিধেয় স্থানে অবস্থান করায় তা ব্যাপ্য নয় । কিন্তু ওই প্রাণী পদটি (E) বচনের উদ্দেশ্য স্থানে অবস্থান করায়। ব্যাপ্য হয়েছে। সুতরাং এক্ষেত্রে অবৈধ পক্ষ দোষের উদ্ভব হয়েছে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment