প্রমাণ করাে যে, প্রধান আশ্রয়বাক্য বিশেষ এবং অপ্রধান আশ্রয়বাক্যটি নর্থক হলে, কোনাে বৈধ সিদ্ধান্ত সম্ভব নয়। Class 12 | Philosophy ( নিরপেক্ষ ন্যায় ) ৮ Marks
উত্তর:-
প্রমাণ — প্রধান অশ্রিয়বক্য বিশেষ এবং অপ্রধান আশ্রয়বাক্যটি নঞর্থক হলে, কোনো বৈধ সিদ্বান্ত সম্ভব নয়।
ন্যায় অনুমানের দশম নিয়মে বলা হয়েছে যে, প্রধান যুক্তিবাক্যটি যদি বিশেষ বচন হয় এবং অপ্রধান যুক্তিবাক্যটি যদি নঞর্থক বচন হয়, তাহলে তা থেকে কোনাে বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া সম্ভব নয়। এরূপ দাবির সমর্থনে যে প্রমাণের উপস্থাপনা করা যায়, তাকে নীচে উল্লেখ করা হল—
ধরা হল যে, [i] কোনােন্যায় অনুমানের প্রধান যুক্তিবাক্যটি হল বিশেষ বচন, তাহলে তা হবে হয় (I) বচন অথবা (0) বচন| আরও ধরা হল যে, [2] কোনাে ন্যায় অনুমানের অপ্রধান যুক্তিবাক্যটি হল নঞর্থক বচন, তাহলে তা হবে হয় (E) বচন অথবা (0) বচন| এই দুটি শর্তে প্রধান ও অপ্রধান যুক্তিবাক্যসমন্বিত ন্যায় অনুমানের সম্ভাব্য জোড়গুলি হল : IE, I0, OE, 00। এই চারটি জোড় ছাড়া ন্যায় অনুমানের আর কোনাে সম্ভাব্য জোড় হতে পারে না| এখন এই চারটি সম্ভাব্য জোড়গুলিকে একে একে পরীক্ষা করে দেখা যাক যে, সেগুলি থেকে কোনাে বৈধ সিদ্ধান্ত নিষ্কাশিত হতে পারে কি না।
প্রথম সম্ভাব্য জোড়ের পরীক্ষা
প্রথম সম্ভাব্য জোড়টি হল: IE
ন্যায়ের নিয়ম অনুযায়ী এরূপ সম্ভাব্য জোড়ের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি অবশ্যই (0) বচন হবে। আর সিদ্ধান্তটি যদি (0) বচন হয় তাহলে ন্যায় অনুমানের পূর্ণাঙ্গ আকারটি হবে নিম্নরূপ:
উদাহরণ
কোনাে কোনাে M হয় P (I) | → প্রধান যুক্তিবাক্য |
কোনাে M নয় S (E) | → অপ্রধান যুক্তিবাক্য |
কোনাে কোনাে S নয় P (0) | → সিদ্ধান্ত |
ব্যাখ্যা
P পদটি প্রধান যুক্তিবাক্যে (I) বচনের বিধেয়তে অবস্থান করায় তা ব্যাপ্য নয়। কারণ, (I) বচন উদ্দেশ্য বা বিধেয়–কোনাে পদকেই। | ব্যাপ্য করে না। আর এই P নামক পদটি সাধ্যপদ হওয়ায় এক্ষেত্রে।
অবৈধ সাধ্য দোষের উদ্ভব ঘটেছে। সুতরাং IE এরূপ সম্ভাব্য জোড় থেকে কোনাে সিদ্ধান্ত পাওয়া সম্ভব নয়।
দ্বিতীয় সম্ভাব্য জোড়ের পরীক্ষা
দ্বিতীয় সম্ভাব্য জোড়টি হল : I0
ন্যায় অনুমানের নিয়ম অনুযায়ী এরূপ সম্ভাব্য জোড়ের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি হবে (0) বচন। আর সিদ্ধান্তটি যদি (0) বচন হয়, তাহলে এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ ন্যায়। অনুমানের আকারটি হবে নিম্নরূপ:
উদাহরণ।
কোনাে কোনাে M হয় P (I) | → প্রধান যুক্তিবাক্য |
কোনাে M নয় S (O) | → অপ্রধান যুক্তিবাক্য |
কোনাে কোনাে S নয় P (O) | → সিদ্ধান্ত |
ব্যাখ্যা
এরূপ যুক্তির আকারটিতে দেখা যায় যে, সিদ্ধান্তটি (0) বচন হওয়ায় তার বিধেয় পদ তথা P ব্যাপ্য হয়েছে | কিন্তু ওই বিধেয় পদটি আবার প্রধান যুক্তিবাক্যে (I) বচনের বিধেয় স্থানে অবস্থান করায় ব্যাপ্য। নয়। কারণ, (I) বচন উদ্দেশ্য বা বিধেয় কোনাে পদকেই ব্যাপ্য করে। না| আর এই P পদটি সাধ্যপদপে গণ্য হওয়ায় ন্যায়ের চতুর্থ নিয়মকে লঙ্ঘন করে অবৈধ সাধ্য দোষের আবির্ভাব ঘটিয়েছে| অর্থাৎ IO এই সম্ভাব্য জোড় থেকে প্রমাণিত হয় যে, কোনাে বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া এক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
তৃতীয় ও চতুর্থ জোড়ের পরীক্ষা
তৃতীয় ও চতুর্থ সম্ভাব্য জোড়টি হল :
OE এবং OO |এই দুটি সম্ভাব্য জোড় থেকেই কোনাে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। কারণ, এই দুটি সম্ভাব্য জোড়ই হল পম নিয়মের বিরােধী। পঞ্চম নিয়ম অনুসারে দাবি করা যায় যে, দুটি যুক্তিবাক্য যদি নঞর্থক হয় তাহলে তা থেকে কোনাে বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় | এ দুটি ক্ষেত্রে তাই দুটি নঞর্থক যুক্তিবাক্যজনিত দোষের উদ্ভব ঘটে।
সিদ্ধান্ত: ওপরের সম্ভাব্য জোড়গুলিকে পরীক্ষা করে দেখা গেল যে, ওই চারটি সম্ভাব্য জোড় থেকে কোনাে বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। কারণ, এগুলি থেকে যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাহলে সেগুলি বিভিন্ন রকম দোষের উদ্ভব ঘটায়। সুতরাং প্রমাণিত হয় যে, প্রধান যুক্তিবাক্যটি যদি বিশেষ হয় এবং অপ্রধান যুক্তিবাক্যটি যদি নঞর্থক হয়, তাহলে কোনাে বৈধ সিদ্ধান্তই পাওয়া সম্ভব নয়।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।