ভারতীয় ফুটবল খেলা কীভাবে জাতীয়তাবােধে উন্নীত হয়? Mark 4 | Class 10
উত্তর:-
ভূমিকা : আধুনিক ভারতে দেশজ খেলাধুলার (শতরঞ্জ, পাশা, বাঘবন্দী, হাডু-ডু, কুস্তি, গেণ্ডুয়া ও গুলতি) পাশাপাশি ইংরেজ শাসকদের হাত ধরে ক্রিকেট, হকি ও ফুটবল খেলা। জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
জাতীয়তাবাদের উন্মেষ : ভারতে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি খেলার প্রসার ইংরেজদের সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদী প্রকল্প হলেও তা ভারতীয়দের কাছে ক্রমশ জাতীয়তাবাদ প্রকাশে মাধ্যম হয়ে ওঠে ।
১) পৌরুষ প্রদর্শন : ইংরেজ শাসনের শুরু থেকেই ইংরেজসহ ইউরােপীয়দের দৃষ্টিভঙ্গিতে বাঙালি জাতিসহ ভারতীয়রা ছিল ‘দুর্বল’, ‘অক্ষম’, ‘কাপুরুষােচিত’, কিন্তু ফুটবল খেলার মাধ্যমে ভারতীয়রা তাদের প্রতি এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিবাদ করেছিল ও তাদের পৌরুষ প্রদর্শন করেছিল।
২) ভারতীয় ফুটবলের জনক : নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীকে ভারতীয় ফুটবলের জনক বলা হয়, কারণ—
প্রথমত, তিনি কিশাের বয়সেই ‘বয়েজ ক্লাব’, ‘ফ্রেন্ডস ক্লাব’, ‘ওয়েলিংটন ক্লাব’ প্রভৃতির সংগঠকরূপে বাংলার ফুটবলসহ খেলাধুলাের ক্ষেত্রে এক নবজাগরণ আনেন।
দ্বিতীয়ত, দেশবাসীকে ফুটবল খেলার মাধ্যমে শারীরিকভাবে শক্তপােক্ত করে তুলে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটাতে চেয়েছিলেন।
৩) মােহনবাগানের জয়লাভ : ইংরেজরা যেখানে বুট পরে ফুটবল খেলত, সেখানে দরিদ্র ভারতীয়দের খেলতে হত খালি পায়ে। খালি পায়ে বুটপরা খেলােয়াড়দের মােকাবিলা করা খুব সহজ ছিল না। তাই ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে আই এফ এ শিল্ড প্রতিযােগিতায় মােহনবাগান দলের ভারতীয় খেলােয়াড়রা যখন খালি পায়ে ফুটবল খেলে ২-১ গােলে ইংরেজদের ইস্ট ইয়র্ক ক্লাবকে হারিয়ে দেয়, তখন তা পরাধীন দেশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করার মতােই এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়ে ওঠে। এই ভাবেই ভারতীয় ফুটবল ভারতীয় জাতীয়তাবােধকে উজ্জীবিত করে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।