মাধ্যমিক শিক্ষা কাকে বলে? মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি মিশনের সুপারিশ আলোচনা করো।
উত্তরঃ-
মাধ্যমিক শিক্ষা: ভারতীয় জাতীয় শিক্ষার তৃতীয় স্তরের শিক্ষা হল মাধ্যমিক শিক্ষা। সাধারণত প্রাথমিক শিক্ষা উচ্চশিক্ষার মধ্যবর্তী স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থাকেই মাধ্যমিক শিক্ষা বলা হয়। যেমন- নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা।
মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি মিশনের সুপারিশ: কোঠারি মিশন (1964-66) মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য, কাঠামো ও পাঠক্রম বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছিল।
মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য সম্পর্কে সুপারিশ: দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার সার্বিক অগ্রগতির জন্য কোঠারি কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করে যথা-
1) মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য হবে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিসত্তার পরিপূর্ণ বিকাশে সহায়তা করা।
2) শিক্ষার্থীর কর্মকেন্দ্রিক মনোভাব গড়ে তোলা।
3) শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে সহায়তা করা।
4) আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত ধ্যান-ধারণা গঠনে সহায়তা করা।
5) দেশের জাতীয় সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব গড়ে তোলা ইত্যাদি।
কাঠামো সম্পর্কে সুপারিশ: কোঠারি কমিশনের সুপারিশ অনুসারে দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার সময়কাল হবে 4 বা 5 বছর। এই স্তর থেকে শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি বিশেষ বিশেষধর্মী শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং শিক্ষা দুটি পর্যায়ে বিভক্ত হয়ে পরিচালিত হবে যথা নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা।
পাঠক্রম সম্পর্কে সুপারিশ: কোঠারি কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার দুটি পৃথক পর্যায়ের জন্য দু’ধরনের পাঠক্রমের সুপারিশ করেছিল যথা –
1) নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রম: অষ্টম থেকে দশম বা নবম শ্রেণীর শিক্ষা হলো নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা।
(i) ভাষা: তিনটি ভাষা যথা মাতৃভাষা হিন্দি বা ইংরেজি ভাষা এবং ঐচ্ছিক ভাষা।
(ii) অন্যান্য বিষয়: এছাড়াও এই স্তরে পাঠক্রমে থাকবে গণিত, বিজ্ঞান, (ভৌত বিজ্ঞান, জীবন বিজ্ঞান), ইতিহাস, ভূগোল, চারুশিল্প, কর্ম অভিজ্ঞতা ও সমাজ সেবা, শারীরিক শিক্ষা এবং নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা।
2) উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্যক্রম: একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা পরিচালিত। কমিশনের সুপারিশ অনুসারে এই স্তরের পাঠ্যক্রমের বিষয় গুলি হল –
(i) ভাষা: যে কোনো দুটি ভাষা অর্থাৎ আধুনিক ভারতীয় ভাষা সমূহ, বিদেশী ভাষা এবং প্রাচীন ভাষা সমূহের মধ্যে যে কোনো দুটি ভাষা।
(ii) তিনটি ঐচ্ছিক বিষয়: নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর মধ্যে যে কোন তিনটি ঐচ্ছিক বিষয় হবে যথা- একটি অতিরিক্ত ভাষা, ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, তর্ক শাস্ত্র মনোবিদ্যা, সমাজবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন বিদ্যা, জীব বিদ্যা, গার্হস্থ্য বিদ্যা, অর্থশাস্ত্র ইত্যাদি।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।