মিলের যুগ্ম পদ্ধতি বা অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতি আলােচনা করাে। [সংজ্ঞা, আকার, দৃষ্টান্ত, সুবিধা (২টি), অসুবিধা (২টি)]

মিলের যুগ্ম পদ্ধতি বা অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতি আলােচনা করাে। [সংজ্ঞা, আকার, দৃষ্টান্ত, সুবিধা (২টি), অসুবিধা (২টি)] Class 12 | Philosophy (মিলের পরিক্ষণমূলক পদ্ধতি) 8 Marks

উত্তর:-

সংজ্ঞা

অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতির সূত্রটিকে তর্কবিদ মিল (Mill) নিম্নোক্তভাবে উপস্থাপিত করেছেন—“বিচার্য ঘটনাটি যেসব দৃষ্টান্তে উপস্থিত আছে, তাদের ঠিক পূর্বগামী বা অনুগামী ঘটনাগুলির মধ্যে যদি আর-একটি ব্যাপার অবশ্যই উপস্থিত থাকে এবং বিচার্য ঘটনাটি যেসব দৃষ্টান্তে অনুপস্থিত, তাদের ঠিক পূর্বগামী বা অনুগামী ঘটনাগুলির মধ্যে যদি ওই ব্যাপারটি সর্বদাই অনুপস্থিত থাকে, তাহলে বুঝতে হবে যে, সেটি বিচার্য ঘটনার কার্য অথবা কারণ অথবা কারণের অপরিহার্য অংশরূপে বিবেচিত।

আকার:

সদর্থক দৃষ্টান্ত

পূর্ববর্তী ঘটনা (কারণ)অনুবর্তী ঘটনা (কার্য)
ABCabc
APRapr
ARMarm

নঞর্থক দৃষ্টান্ত

পূর্ববর্তী ঘটনা (কারণ)অনুবর্তী ঘটনা (কার্য)
BCDbcd
CDEcde
EFGefg

∴ A হল a-এর কারণ।

মিলের যুগ্ম পদ্ধতির সুবিধা:

i. অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতির প্রয়ােগক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক বা বিস্তৃত। কারণ, এই পদ্ধতিকে অন্বয়ী পদ্ধতির দ্বৈত প্রয়ােগরূপে অভিহিত করা হয়। সুতরাং, অন্বয়ী পদ্ধতির ন্যায় এই পদ্ধতিটিও পর্যবেক্ষণ নির্ভর বলে, কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একে ব্যাপকভাবে প্রয়ােগ করা যায়। আবার যেসমস্ত ক্ষেত্রে ব্যতিরেকী পদ্ধতির প্রয়ােগ সম্ভব নয়, সেই সমস্ত ক্ষেত্রেও এই অন্বয় ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে প্রয়ােগ করা যায়। 

ii. অন্বয় ব্যতিরেকী পদ্ধতির ক্ষেত্রে আমরা একদিকে যেমন কারণ থেকে কার্যে উপনীত হতে পারি, অপরদিকে তেমনি আবার কার্য থেকে কারণেও যেতে পারি। এর ফলে কার্যকারণ সম্পর্কিত ধারণাটিকে বিস্তৃত ও যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি সুনিশ্চিত না হলেও, সিদ্ধান্তের সম্ভাবনাটি অনেক বেশি বেড়ে যায়। এই পদ্ধতিটিকে তাই অন্যান্য পর্যবেক্ষণলব্ধ পদ্ধতির এক উন্নতরূপ হিসেবে স্বীকার করা হয়। 

মিলের যুগ্ম পদ্ধতির অসুবিধা:

i. পর্যবেক্ষণলব্ধ পদ্ধতি বলে এই পদ্ধতির মধ্যে পর্যবেক্ষণের যেসমস্ত অসুবিধা আছে, সেগুলি যথারীতি উপস্থিত। এই পদ্ধতিটিকে আমরা কখনােই সুনিশ্চিত বলে প্রমাণ করতে পারি না। এই পদ্ধতির মধ্যে প্রাপ্ত সিদ্ধান্তটি তাই সবসময়ই সম্ভাব্য বলে বিবেচিত, কখনােই নিশ্চিতরূপে গণ্য নয়। 

ii. অন্বয় ব্যতিরেকী পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত সিদ্ধান্তটি অনেক সময় ব্যাবহারিক দোষে দুষ্ট হতে পারে। কারণ, এই পদ্ধতির ক্ষেত্রেও আলােচ্য ঘটনার কারণ অন্বেষণ করার সময় যেসমস্ত পূর্ববতী ঘটনাসমূহকে পর্যবেক্ষণ করা উচিত ছিল বলে মনে হয়, তার সবগুলিকেই যে পর্যবেক্ষণ করা গেছে—এমন দাবি কখনােই করা যায় না। ফলত এক্ষেত্রেও অপর্যবেক্ষণমূলক দোষের সম্ভাবনাও থেকে যায়।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

2 thoughts on “মিলের যুগ্ম পদ্ধতি বা অন্বয়-ব্যতিরেকী পদ্ধতি আলােচনা করাে। [সংজ্ঞা, আকার, দৃষ্টান্ত, সুবিধা (২টি), অসুবিধা (২টি)]”

Leave a Comment