‘স্মৃতিকথা’ কি ইতিহাসের নির্ভরযােগ্য উপাদান? Mark 4 | Class 10
উত্তর:-
স্মৃতিকথা : আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা হল ব্যক্তির জীবন ও স্মৃতিমূলক সাহিত্য।
প্রথমত, এখানে লেখক তার জীবনে ঘটে যাওয়া প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষ ঘটনা এবং সমসাময়িক দেশকালের স্মৃতি রােমন্থন করে। গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন।
দ্বিতীয়ত, এ প্রসঙ্গে বিপিনচন্দ্র পালের ‘সত্তর বছর’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবনস্মৃতি’ও সরলাদেবী চৌধুরানির ‘জীবনের ঝরাপাতা’ নামক আত্মজীবনীর কথা বলা যায়।
স্মৃতিকথার ব্যবহার : বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ইতিহাসচর্চায় স্মৃতিকথা বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। যেমন—
১) নাৎসি অত্যাচারের ইতিহাস : জার্মানিতে হিটলারের নাৎসি অত্যাচারের তথ্য বেশিরভাগই সংগৃহীত হয়েছে স্মৃতি-নির্ভর রচনা থেকে।
২) ভারতের দেশভাগের ইতিহাস : ভারতবর্ষের মানুষের দেশভাগের অভিজ্ঞতার অধিকাংশ ইতিহাস বিবৃত রয়েছে বিভিন্ন গ্রন্থে, প্রবন্ধে, সাংবাদিক রচনায়।
সীমাবদ্ধতা : স্মৃতিকে ইতিহাসের মূল্যবান উপাদান হিসেবে যদি ধরাও যায়, তবুও স্মৃতিকথাকে ইতিহাসে ব্যবহার করার অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, যেমন—
১) নির্ভরযােগ্যতায় প্রশ্ন : স্মৃতিকথা থেকে উঠে আসা তথ্য কতটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য বা নির্ভরযােগ্য, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। স্মৃতিকথা সাধারণত বার্ধক্য বা প্রৌঢ়ত্বের ফসল।
২) অস্পষ্টতা : লেখকের স্মৃতি, লেখককে বিভ্রান্ত বা প্রতারিত করতেই পারে। স্মৃতি সেখানে স্পষ্ট নাও হতে পারে।
৩) ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি : স্মৃতিকথা মানেই ইতিহাসের উপাদান নয়, কারণ এগুলিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন পড়ে যা ইতিহাসের উপাদান হয়ে উঠতে বাধা দেয়।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।