১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনােভাব কীভাবে প্রকাশিত হয়েছিল? 4 Marks/Class 10
উত্তর:–
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনােভাব আদৌ সদর্থক ছিল না। শান্তিপ্রিয় বদ্ধিজীবী বাঙালি রাজনৈতিক প্রশাসনিক ও বৌদ্ধিক কারণে কোনােভাবেই এই বিদ্রোহে অংশ নেননি।
বাঙালি সমাজের মনােভাব : তাদের কাছে এই বিদ্রোহ ছিল সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও শুধুমাত্র সিপাহিদেরই বিদ্রোহ। উনিশ শতকের স্বনামধন্য বাঙালিরা যেমন কিশােরিচাদ মিত্র, শম্ভুচন্দ্র মুখােপাধ্যায়, হরিশচন্দ্র মুখােপাধ্যায়, রাজনারায়ন বসু, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ সকলেই সিপাহি বিদ্রোহকে সামরিক বিদ্রোহ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। কিশােরীচাদ তার ‘The Mutinies’ (১৮৫৮) গ্রন্থে বলেছেন “The insurrection is essentially a miltary insurrection; দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সিপাহিদের স্বার্থেই সিপাহিরা এই বিদ্রোহ করেছিল এবং এই বিদ্রোহের কোনাে গণচরিত্র ছিল না। প্রাবন্ধিক ও ব্রাত্মনেতা অক্ষয়কুমার দত্ত, কবি সাংবাদিক ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তও এই বিদ্রোহকে সমর্থন জানাননি।
সামন্ততান্ত্রিক প্রবণতার বিরােধিতা : রাজা রাধাকান্ত দেব, কালীপ্রসন্ন সিংহ প্রমুখ কলকাতার সম্রান্ত ব্যক্তিরা কলকাতা হিন্দু মেট্রোপলিটান কলেজে সিপাহিদের বিদ্রোহের নিন্দা এবং ইংরেজ সরকারকে সর্বপ্রকার সাহায্যের প্রস্তাব গ্রহণ করেন (২৫ মে ১৮৫৭ খ্রি.)। তাঁরা দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ, নানাসাহেব লক্ষ্মীবাই প্রমুখ সামন্ততান্ত্রিক নেতা ও নেত্রীর প্রতিও নিন্দা করা হয়।
উপসংহার : অধিকাংশ শিক্ষিত বাঙালি ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের বিরােধিতা করলেও —
প্রথমত, হরিশ্চন্দ্র মুখােপাধ্যায় সহ খুব অল্পসংখ্যক বাঙালি সিপাহি বিদ্রোহের প্রতি সদয় ছিলেন।
দ্বিতীয়ত, সিপাহি বিদ্রোহের পরবর্তীকালে অবশ্য বাঙালির উপনিবেশ-বিরােধী আন্দোলনের সূচনা করেন।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।