মৃত্তিকা ক্ষয় কীভাবে প্রতিরােধ করে তাকে সংরক্ষণ করা যাবে? অথবা, ভারতে মৃত্তিকা ক্ষয় প্রতিরােধের উপায় ব্যাখ্যা করাে।

মৃত্তিকা ক্ষয় কীভাবে প্রতিরােধ করে তাকে সংরক্ষণ করা যাবে? অথবা, ভারতে মৃত্তিকা ক্ষয় প্রতিরােধের উপায় ব্যাখ্যা করাে।   Class 10 | Geography | 5 Marks

উত্তর: মৃত্তিকা ক্ষয় প্রতিরােধের উপায় নাম ক্ষয় রােধ করা এবং উর্বরতা শক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য মাটি সংরক্ষণ করা একান্ত প্রয়ােজন। মৃত্তিকা সংরক্ষণের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল—

1. বৃক্ষরােপণ : উদ্ভিদের শিকড় একদিকে যেমন মাটিকে ধরে রাখে, তেমনি উদ্ভিদ মাটির ওপর বৃষ্টিকে সরাসরি পড়তে দেয় না। বৃষ্টির জল গাছের ওপর পড়ে তারপর মাটিতে যায়। এতে মৃত্তিকা ক্ষয় কম হয়। তাই ফাঁকা জায়গায় স্থানীয় জলবায়ু অনুযায়ী মৃত্তিকা ক্ষয় রােধে গাছপালা লাগানাে উচিত।

2. সমােন্নতিরেখা বরাবর চাষ : পার্বত্য অঞ্চলে উঁচু, নীচু এলাকায় সমান উচ্চতাযুক্ত বিন্দুগুলিকে যােগ করে যে রেখা পাওয়া যায়, তাকে সমােন্নতিরেখা বলে। এই সমােন্নতিরেখা বরাবর শস্যক্ষেত্র তৈরি করে কৃষিকাজ করলে জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় কমে।

3. ধাপচাষ : পাহাড়ি বা ঢালু জমিতে ঢাল অনুযায়ী সিঁড়ি বা ধাপ গঠন করলে ঢালের কৌণিক মান হ্রাস পায়। ধাপ তৈরি করে কৃষিকাজ করলে সেখানে জলের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই ধাপচায়। পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিক্ষয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ধাপচাষ। 

4. গালিক্ষয় রােধ : যেখানে ভূমিভাগ নরম মাটি দিয়ে গঠিত, সেখানে খুব বৃষ্টি হলে গালি ক্ষয় হয়। এই ধরনের ক্ষয় রােধ করার জন্য নালী ক্ষয় অঞ্চলে খাতের মধ্যে চারাগাছ বা দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। এমন গাছ বা ঘাস রােপণ করা হয়। এর ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় কমে।

5. ঝুমচাষ রােধ : ঝুমচাষের ক্ষেত্রে কয়েক বছর অন্তর কৃষিজমি পরিবর্তন করা হয়। অর্থাৎ, বৃক্ষচ্ছেদন করে একটি জমিতে কয়েক বছর চাষ করার পর জমির উর্বরতা কমে গেলে কৃষকরা অনা। জমিতে কৃষিকাজ শুরু করেন। একে স্থানান্তর কৃষিও বলে। এই কৃষিকাজ পরিবেশে ভূমির অবনমনে সর্বাধিক ভূমিকা নেয়। তাই ঝুমচাষ বন্ধ করলে মৃত্তিকা ক্ষয় অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

মৃত্তিকা ক্ষয় প্রতিরােধের অন্যান্য উপায়

1. ফালিচাষ : পাহাড়ি অঞলে ঢালু জমিতে আড়াআড়িভাবে ফিতে বা পঙতির মতাে জমি তৈরি করে ক্ষয় প্রতিরােধী শস্য চাষ করার পদ্ধতিকেই ফালিচাষ বলে। শিম, ডাল, সয়াবিন, ভুট্টা প্রভৃতি শস্য চাষ করা হয়। এতে ভূমিক্ষয় রােধ হয় ও মাটির জলধারণক্ষমতা বাড়ে। 

2. বাঁধ নির্মাণ : কংক্রিট দিয়ে নদীর পাড় ও সমুদ্র উপকূলে বাঁধ নির্মাণ করলে বা বাঁধিয়ে দিলে মৃত্তিকা ক্ষয় অনেকাংশে কমে যায়। 

3. মালচিং : শুষ্ক অঞ্চলে মাটির বাষ্পীভবনের হার কমানাের জন্য ও আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য মাটির ওপর শুকনাে আগাছা, খড়কুটো বিছিয়ে দেওয়া হয়। একে মালচিং বলে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment