ম্পিয়ারম্যানের দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি আলােচনা করাে

ম্পিয়ারম্যানের দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি আলােচনা করাে। অথবা, বুদ্ধির দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি বিবৃত করাে। অথবা, মানসিক ক্ষমতা সংক্রান্ত দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করাে। অথবা, স্পিয়ারম্যানের দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি চিত্র-সহ ব্যাখ্যা করাে | Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 8 Marks

উত্তর:

সিম্পয়ারম্যানের দ্বি-উপাদান তত্ত্ব

ব্রিটিশ মনােবিজ্ঞানী চার্লস স্পিয়ারম্যান 1904 খ্রিস্টাব্দে সম্পূর্ণ গণিতনির্ভর মানসিক ক্ষমতার একটি তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দেন। American Journal of Psychology-o ‘General Intelligence Objectively Determined and Measured’ নামে একটি প্রবন্ধে তিনি তার দ্বি-উপাদান তত্ত্বটি প্রকাশ করেন| এই তত্ত্বে তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছেন, যে-কোনাে বৌদ্ধিক কাজে দুটি উপাদান কার্যকরী হয়। একটি সাধারণ উপাদান (General factor বা সংক্ষেপে G) এবং অন্যটি হল বিশেষ উপাদান (Special factor বা সংক্ষেপে S)। সাধারণ উপাদানটি সব ধরনের কাজে কমবেশি প্রয়ােজন হয় এবং বিশেষ উপাদান কেবলমাত্র নির্দিষ্ট কাজে প্রয়ােজন হয়।

স্পিয়ারম্যানের দ্বি-উপাদান তত্ত্বটিকে একটি জ্যামিতিক চিত্রে রূপ। দেওয়া যেতে পারে। পাশের চিত্রে বৃত্তটি হল ‘G’ বা সাধারণ উপাদানের ভাণ্ডার। w1  ,  w 2, w 3 হল তিনটি কাজ। S1 , S2, S3 হল তিনটি বিশেষ উপাদান | w1, কাজে। সাধারণ উপাদান বা ‘G’ এর পরিমাণ হল ‘G1, ‘। একইভাবে w 2 এবং w 3 , কাজে সাধারণ উপাদান বা ‘G’ এর পরিমাণ হল যথাক্রমে G2, ও G3,।। আবার w1, W2 , W3 , কাজে বিশেষ উপাদান হিসেবে প্রয়ােজন হয়েছে যথাক্রমে S1, S2 ও S3 এর। এখানে উল্লেখ্য যে G1, G2, ও G3 গুণগতভাবে এক কিন্তু পরিমাণে ভিন্ন। অর্থাৎ, প্রতিটি কাজে সাধারণ উপাদান বা ‘G ভিন্ন পরিমাণে প্রয়ােজন হতে পারে। অন্যদিকে বিশেষ

উপাদানগুলি S1, S2, S3, গুণগতভাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে পরিমাণের প্রশ্ন আসে না। এক্ষেত্রে ‘G’ বা সাধারণ ক্ষমতাকেই বুদ্ধি বলা হয়েছে। দুটি কাজের মধ্যে যত বেশি পরিমাণে ‘G’ থাকবে, ততই কাজ দুটির মধ্যে সহগতির মান বেশি হবে। 

ম্পিয়ারম্যানের তত্ত্বের শিক্ষাগত তাৎপর্য

ম্পিয়ারম্যানের দ্বি-উপাদান তত্ত্বের শিক্ষামূলক তাৎপর্য এক কথায় অনস্বীকার্য। শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম | ছাত্রছাত্রীকে যদি সঠিকভাবে শিক্ষামূলক ও বৃত্তিমূলক নির্দেশনা দান করতে হয়, তাহলে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে অবশ্যই এই তত্ত্বের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই তত্ত্বটি বিশেষভাবে সহায়ক হয়| যেকোনাে বিষয়ে সাফল্য লাভ করতে হলে, ওই বিষয়ের ওপর বিশেষ দক্ষতার প্রয়ােজন হয়। যেমন—বিজ্ঞান শাখায় সাফল্য লাভ করতে হলে ছাত্রছাত্রীদের অবশ্যই বিজ্ঞানমনস্ক হতে হবে। এই ক্ষমতা সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষিকা অবহিত হওয়ার পর যদি ছাত্রছাত্রীদেরকে পাঠক্রম নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্দেশ দেন, তাহলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছাত্রছাত্রী সফলতা অর্জন করবে। মােট কথা, ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ ক্ষমতার সঙ্গে সংগতি রেখে পাঠক্রম নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই তত্ত্বটি শিক্ষকশিক্ষিকার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রছাত্রীদের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি নির্বাচনেও এই তত্ত্বটি সহায়ক হয়।

Read Also

ম্যাসলোর চাহিদার ক্রমপর্যায় তত্ত্ব | Maslow’s Hierarchy of Needs Theory in Bengali

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment