ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় কী বলা হয়েছে? সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের অভিমত কী? 3+ 5 Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 8 Marks
উত্তর:-
ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা :
“We, the people of India, having solemnly resolved to constitute India into a sovereign socialist secular democratic republic and to secure to all its citizens : Justice, social, economic and political; Liberty of thought, expression, belief, faith and worship; Equality of status and of opportunity and to promote among them all; Fraternity assuring the dignity of the individual and the unity and integrity of the Nation; In our Constituent Assembly this twenty-sixth day of November, 1949, do hereby adopt, enact and give to ourselves this Constitution.”
অর্থাৎ, “আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্ররূপে গড়ে তুলতে এবং তার সব নাগরিকই যাতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা, মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম ও উপাসনার স্বাধীনতা পায় এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তির মর্যাদা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুনিশ্চিতকরণের মাধ্যমে যাতে ভ্রাতৃত্বের ভাব গড়ে ওঠে তার জন্য সত্যনিষ্ঠা, সঙ্গে শপথ গ্রহণ করে, আমাদের গণপরিষদে আজ, 1949 সালের 26 নভেম্বর এতদ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ, বিধিবদ্ধ এবং নিজেদের অর্পণ করছি।”
সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারা সম্পর্কে কোঠারি কমিশন :
সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধারার মধ্যে কোঠারি কমিশন সংবিধানের নির্দেশক নীতির 45 নং এবং 46 নং ধারা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অভিমত প্রকাশ করে।
সংবিধানের নির্দেশক নীতির 45 নং ধারায় উল্লেখ করা হয়েছিল যে 1950 খ্রিস্টাব্দের পর থেকে আগামী দশ বছরের মধ্যে 6 থেকে 14 বছর পর্যন্ত সব ছেলেমেয়ের শিক্ষাকে সর্বজনীন, অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করতে হবে। এই নির্দেশ অনুসারে 1960 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই লক্ষে পৌঁছােনাের কথা ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার বাস্তবে তা করে উঠতে পারেনি l কোঠারি কমিশন এর কারণ অনুসন্ধান করেছে এবং জানিয়েছে যে, জনসংখ্যার অত্যধিক চাপ, মানুষের আর্থিক দুরবস্থা, বাবা-মায়ের নিরক্ষরতা প্রভৃতি কারণের জন্য লক্ষ্যে পৌঁছােনাে যায়নি।
প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করার উদ্দেশ্যে কমিশন কতকগুলি সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশগুলি হল—
[1] প্রত্যেক রাজ্য সরকারকে প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তারের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে,
[2] প্রয়ােজনমতাে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে,
[3] অপচয় এবং অনুন্নয়ন বন্ধ করতে হবে,
[4] প্রত্যেক শিশুর বসবাস অঞ্চলের মধ্যে বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে,
[5] অভিভাবকেরা যাতে প্রথম শ্রেণিতে প্রতিটি শিশুকে ভরতি করেন আইনের মাধ্যমে তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
সংবিধানের নির্দেশক নীতির 46 নং ধারায় অনগ্রসর সম্প্রদায়, বিশেষত তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার সুপারিশ করা হয়। কোঠারি কমিশন লক্ষ করেছিল, তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার সেভাবে ঘটেনি। এই বিষয়ে ইউ এন ধেবরের সভাপতিত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশগুলি কোঠারি কমিশন গ্রহণ করে। এই সুপারিশগুলি হল—
[1] তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আগেকার সব সুযােগসুবিধা বুলবৎ থাকবে।
[2] যাযাবর ও আধা-যাযাবর সম্প্রদায়ের জন্য আরও বেশি সুযােগসুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
[3] তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য বিদ্যালয় এবং ছাত্রাবাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
[4] এ ছাড়া, আবাসিক বিদ্যালয় নির্মাণে বৃত্তি হিসেবে আর্থিক সাহায্য প্রদান, উপজাতিদের ভাষায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থাগ্রহণ এবং আদিবাসীদের জীবনের উপযােগী শিক্ষার বিষয়বস্তু নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে কমিশন সুপারিশ করে।
সংবিধানের 44 নং ধারায়, সারা ভারতে সকলের জন্য একই আইনের ব্যবস্থা করা হবে ও 30 নং ধারায়, ভাষা ও ধর্মের জন্য শিক্ষায় বৈষম্য করা হবে না বলে উল্লেখ করা আছে। জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংহতির জন্য যে-কোনাে বৈষম্য পরিহার করতে হবে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।