ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সম্পর্কিত ধারাগুলি উল্লেখ করাে। অথবা, ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত শিক্ষা সংক্লান্ত সুপারিশগুলি উল্লেখ করাে।

ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সম্পর্কিত ধারাগুলি উল্লেখ করাে।
অথবা, ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত শিক্ষা সংক্লান্ত সুপারিশগুলি উল্লেখ করাে।   Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 8 Marks

উত্তর:-

ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সম্পর্কিত ধারাসমূহ : সংবিধানের নির্দেশক নীতি অংশ থেকে সপ্তম তপশিল পর্যন্ত শিক্ষা ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বহু ধারা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যেমন —

[1] প্রাথমিক শিক্ষা: সংবিধানের 45 নং ধারা অনুযায়ী, সংবিধান চালু হওয়ার দশ বছরের মধ্যে রাষ্ট্র দেশের প্রতিটি ছেলেমেয়ের জন্য 14 বছর বয়স পর্যন্ত বাধ্যতামূলক, অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে সচেষ্ট হবে।

[2] দুর্বলতর শ্রেণির রক্ষাকবচ: সংবিধানের 46 নং ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্র বিশেষ যত্নের সঙ্গে সমাজের অনগ্রসর, বিশেষ করে তপশিলি জাতি ও উপজাতি শ্রেণির জন্য শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন করবে। 

[3] শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মশিক্ষা ও ধর্মীয় উপাসনা প্রসঙ্গে: সংবিধানের 28 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকারি অনুদানে পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হবে না। 

28(3) ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বা অনুমােদিত কোনাে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধর্মীয় শিক্ষাদান বা শিক্ষা-অনুষ্ঠানের আয়ােজন করলে, ছাত্রছাত্রীরা সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য নয়।

[4] সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা: 29 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, ভারতে বসবাসকারী সমস্ত নাগরিকদের স্বতন্ত্র লিপি, ভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষার অধিকার থাকবে | 

29(1) নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার পরিচালিত বা সরকারি অনুদানে পরিচালিত কোনাে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভরতির ক্ষেত্রে জাতি, ধর্মসম্প্রদায়, ভাষা অথবা যে-কোনাে একটি বিষয়ের অজুহাত দিয়ে ভারতীয় কোনাে নাগরিককে শিক্ষার সুযােগ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। 

29(2) নং ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্র পরিচালিত বা সাহায্যপ্রাপ্ত কোনাে বিদ্যালয়ে ধর্ম, জাতি, সম্প্রদায় কিংবা ভাষার অজুহাতে কোনাে ছাত্রছাত্রীকে ভরতি নিতে অস্বীকার করা যাবে না | 

[5] সংখ্যালঘুদের নিজস্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাপনের অধিকার: সংবিধানের 30(1) নং ধারা অনুসারে সমস্ত ধর্মগত ও ভাষাগত সংখ্যালঘু মানুষের নিজেদের ইচ্ছামতাে বিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার অধিকার থাকবে | 30(2)অংশেবলাহয়েছে, সাহায্যদানের ক্ষেত্রে ধর্ম ও ভাষার ভিত্তিতে সংখ্যালঘু, এই অজুহাতে রাজ্য সরকার কোনাে বৈষম্য করতে পারবে না।

[6] মাতৃভাষা সংক্রান্ত: 350 (i) নং ধারা অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্যকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুদের প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষালাভের সুযােগ দিতে হবে। 

[7] হিন্দি ভাষার উন্নতির জন্য: 351 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, হিন্দি ভাষার উন্নতি ও প্রসার ভারত সরকারের দায়িত্ব। 

[8] অ্যাংলাে-ইন্ডিয়ান বিদ্যালয়ে সাহায্য: 337 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সংবিধান চালু হওয়ার তিন বছর পর্যন্ত অ্যাংলাে ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে 1948 সালের মার্চ মাসে যে সাহায্য দেওয়া হত, তা দেওয়া হবে।

[9] কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শিক্ষা : 239 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, পার্লামেন্ট কর্তৃক বিধিবদ্ধ আইন ছাড়াও রাষ্ট্রপতি প্রশাসক নিয়ােগ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শিক্ষার ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। 
[10] কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব: 62, 63, 64, 65, 66 ও 67 নং ধারায়, শিক্ষাক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব ব্যক্ত হয়েছে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

1 thought on “ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সম্পর্কিত ধারাগুলি উল্লেখ করাে। অথবা, ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত শিক্ষা সংক্লান্ত সুপারিশগুলি উল্লেখ করাে।”

Leave a Comment