বিজ্ঞানশিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি উল্লেখ করাে। Class 12 | Education (শিক্ষার কৌশল) | 8 Marks
উত্তর:-
বিজ্ঞানশিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহু
কোঠারি কমিশন বিজ্ঞানশিক্ষার ক্ষেত্রে একাধিক সুপারিশ করেছে। এখানে সুপারিশগুলি উল্লখ করা হল
[1] সাধারণ শিক্ষায় বাধ্যতামূলকভাবে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান শেখানাে হবে।
[2] বিজ্ঞানশিক্ষা এমনভাবে সংগঠিত হবে যাতে বিজ্ঞান তার উপযুক্ত উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্যে পৌঁছােতে পারে। এজন্য বিভিন্ন শিক্ষাস্তরে বিজ্ঞানের কী কী বিষয়ে শিক্ষাদান করা প্রয়ােজন, তা উল্লিখিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভৌতবিজ্ঞান ও জীবনবিজ্ঞান সম্পর্কিত বিভিন্ন ধারণা, ঘটনা, পদ্ধতি ও নীতি জানানাে প্রয়ােজন। নিম্নপ্রাথমিক স্তরে সামাজিক, ভৌতবিজ্ঞান ও জীবনবিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান করতে হবে।
[1] Class I-II: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বাড়ানাে ইত্যাদি শিক্ষা দেওয়া প্রয়ােজন।
[2] Class III-IV: সমস্ত বিষয়কে আরও ব্যাপকভাবে শিক্ষা দিতে হবে। এই স্তরে গাছপালা, প্রাণী, বায়ু, জল, আবহাওয়া প্রভৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান দেওয়া প্রয়ােজন। বাগান তৈরি ইত্যাদির মাধ্যমে বিজ্ঞানশিক্ষা দানের ব্যবস্থা করতে হবে।
[3] Class IV: এই স্তরে Roman Alphabet শেখাতে হবে, কারণ বিভিন্ন প্রতীকচিহ্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এগুলি অত্যন্ত প্রয়ােজন।
[4] Class V-VII: এই স্তরে পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা ও জীববিদ্যা পড়ানাের ব্যবস্থা করতে হবে।
[6] Class VII: এই স্তরে পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, জীববিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ্যা পড়ানাের ব্যবস্থা করতে হবে।
Class V থেকে আলাদা পর্যবেক্ষণ শেখানাে দরকার। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে Science Corner থাকবে। পড়াবার ক্ষেত্রে বিভিন্ন চার্ট, মডেল ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্তত একটি পরীক্ষাগার কাম শ্রেণিকক্ষ থাকা দরকার।
মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞানশিক্ষা
[1] নিম্নস্তরে বিজ্ঞান অঙ্গন (Science Corner)-এর ব্যবস্থা করতে হবে।
[2] প্রতিভাবান ছেলেমেয়েদের জন্য নির্ধারিত নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নত বিজ্ঞানের পাঠক্রম অনুসরণ করা দরকার।
[3] গ্রামীণ অঞ্চলে কৃষির সঙ্গে ও শহরাঞ্চলে কারিগরি শিক্ষার সঙ্গে বিজ্ঞানশিক্ষাকে যুক্ত করতে হবে।
[4] বিজ্ঞানশিক্ষা পদ্ধতির উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। নিম্নমাধ্যমিক স্তর হবে উচ্চশিক্ষায় বিজ্ঞানশিক্ষার সােপান। এই স্তরে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যা, ভূমিবিদ্যা আবশ্যিক হিসেবে থাকবে৷
ভূমিবিদ্যা (earth science)-এ, ভূবিদ্যা (geology) ও ভূগােল (geography)-কে অভিন্ন বিষয় হিসেবে পড়ানাের ব্যবস্থা রাখা প্রয়ােজন।
উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষা আবশ্যিক হবে না। বিজ্ঞান বিভাগের তিনটি বিষয়কে শিক্ষার্থীরা ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে নিতে পারবে।
এই বিভাগের মধ্যে রয়েছে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, নৃতত্ত্ব বিদ্যা ও গণিত ইত্যাদি।
তবে শিক্ষার্থীরা দুটি বিজ্ঞানের বিষয়ের সঙ্গে একটি কলা বিষয়কে বা দুটি কলা বিষয়ের সঙ্গে একটি বিজ্ঞান বিষয়কে ঐচ্ছিক হিসেবে নিতে পারবে। কমিশন মনে করে, বিজ্ঞানশিক্ষার ক্ষেত্রে গাণিতের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হয়। সেজন্য গতানুগতিক বিষয়গুলিকে বাদ দিয়ে গণিতের বিভিন্ন শাখাগুলিকে সুসমন্বিতভাবে পাঠ্যসূচিতে গ্রহণ করতে হবে।
উচ্চশিক্ষা স্তরে বিজ্ঞানশিক্ষা কমিশন
উচ্চশিক্ষা স্তরে বিজ্ঞানশিক্ষা সম্পর্কে সুপারিশ করতে গিয়ে বলেন, কলা বিষয়ের মতােই বিজ্ঞান বিষয়েও প্রথম ডিগ্রি স্তর 3 বছরের কম হবে। দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তরের স্থিতিকাল হবে 2 বা 3 বছরের। কলা বিষয়ের মতােই বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে 2 বছরের MSc ডিগ্রি চালু করা যেতে পারে৷ সুপরিকল্পিত উপায়ে যদি এই ডিগ্রি স্তরে মেধাবী ছাত্র ভরতি করা যায়, তাহলে সুদক্ষ ও যােগ্য নাগরিক সৃষ্টি করা যেতে পারে। উচ্চশিক্ষায় বিজ্ঞানের গবেষণার ক্ষেত্রে অনুসন্ধান, মৌলিক নীতি উপলদ্ধির প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে সংকেত, চার্ট, মানচিত্র এবং পরিসংখ্যান সংক্রান্ত টেব-এর ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।