উচচশিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থসংস্কার, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন ও অন্যান্য সংস্কার সম্পর্কিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের সুপারিশগুলি লেখাে। Class 12 | Education | 8 Marks
উত্তর:
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থসংস্কার, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন ও অন্যান্য সংস্কার সম্পর্কিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের সুপারিশসমূহ
1948 খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার শিক্ষা সম্পর্কে ব্যাপক অনুসন্ধান ও তার উন্নতির জন্য স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষা কমিশন বা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করে। এই কমিশন শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কারসাধনের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুপারিশ পেশ করে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থ বা ব্যনির্বাহ সম্পর্কিত সুপারিশ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থসংস্কারের জন্য কমিশন কিছু সুপারিশ করেন। কমিশনের মতে, উচ্চশিক্ষার ব্যয়নির্বাহের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে৷ ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন গঠনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অর্থসাহায্য বণ্টনের ব্যবস্থা করতে হবে। কমিশনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়গুলির আর্থিক সচ্ছলতা না থাকলে উচ্চশিক্ষার প্রসার বা মানােন্নয়ন, কোনােটাই সম্ভব নয়। কমিশনের মতে, নিম্নলিখিত ব্যয়গুলি নির্বাহ করার জন্য সরকার থেকে মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা প্রয়ােজন—
[1] মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহনির্মাণের জন্য অর্থ অনুদান।
[2] প্রয়ােজনীয় সাজ-সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য আর্থিক সাহায্য।
[3] গ্রন্থাগারের উন্নয়ন ও বইপত্র কেনার জন্য আর্থিক অনুদান।
[4] মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস পরিচালনার জন্য আর্থিক সাহায্য।
[5] মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের। বেতন, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও পেনশন প্রভৃতির জন্য উপযুক্ত সাহায্য দান।
[6] গবেষণামূলক কাজ পরিচালনার জন্য অর্থসাহায্য।
[7] মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য অর্থসাহায্য।
[8] উচ্চতর কারিগরি বিদ্যায় পঠনপাঠন ও গবেষণার জন্য আর্থিক অনুদান।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন ও অন্যান্য সংস্কার সম্পর্কিত সুপারিশ
কমিশন দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রদায়িক সনদ বাতিলের প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কিছু সংস্কারের প্রসঙ্গেও অভিমত ব্যক্ত করে। এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল—
[1] রাধাকৃয়ণ কমিশন বেনারস ও আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা ও অসুবিধা বিচার করে এদের সাম্প্রদায়িক সনদ (Denominational Charter) বাতিল করার সুপারিশ করে।
[2] কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে শিক্ষার্থীরা সর্বভারতীয় ভিত্তিতে পঠনপাঠনের সুযােগ পায়তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থাগ্রহণের সপক্ষে কমিশন অভিমত ব্যক্ত করে।
[3] এ ছাড়া নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রসঙ্গে কমিশন বলে যে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সুপারিশ অনুসারে দেশের বিভিন্ন অংশে নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তােলা হবে। এর জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রথমে অস্থায়ী সনদ (Temporary Charter) প্রদান করবেন এবং ওই সনদের মেয়াদ অতিক্রান্ত হলে তবেই স্থায়ী সনদ প্রদান করা হবে।
[4] নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সময় উন্নতমানের গবেষণার বিষয়টির ওপর গুরুত্ব আরােপ করতে হবে।
[5] বােলপুরের বিশ্বভারতী এবং দিল্লির জামিয়া-মিলিয়া ইসলামিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার পাশাপাশি প্রয়ােজনীয় আর্থিক অনুদান দিতে হবে| বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।