Class 12 Class 12 Education জাতীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা সম্পর্কে জাতীয় শিক্ষানীতি (1986)-র বক্তব্যগুলি উল্লেখ করাে

জাতীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা সম্পর্কে জাতীয় শিক্ষানীতি (1986)-র বক্তব্যগুলি উল্লেখ করাে

জাতীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা সম্পর্কে জাতীয় শিক্ষানীতি (1986)-র বক্তব্যগুলি উল্লেখ করাে Class 12 | Education | 8 Marks

উত্তর:-

জাতীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা সম্পর্কে জাতীয় শিক্ষানীতি (1986) র বক্তব্যসমূহ

 জাতীয় শিক্ষানীতির তৃতীয় অধ্যায়ে জাতীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা সম্পর্কে বিশদ আলােচনা করা হয়েছে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি নীচে উল্লেখ করা হল— 

[1] সাধারণ শিক্ষা কাঠামাে: জাতীয় শিক্ষানীতি জাতীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে যে শিক্ষার প্রস্তাব করে, তাতে বলা হয়——সারা দেশে একই প্রকারের শিক্ষা কাঠামাে (10+2+3) চালু করা প্রয়ােজন। এই শিক্ষানীতিতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত। শিক্ষাকে 5 বছরের নিম্নপ্রাথমিক, 3 বছরের উচ্চপ্রাথমিক ও 2 বছরের নিম্নমাধ্যমিক — এই তিন ভাগে ভাগ করার কথা বলা হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক হবে 2 বছরের এবং উচ্চশিক্ষা হবে 3 বছরের।

[2] সাধারণ কোর পাঠক্রম-সহ জাতীয় পাঠক্রম: সমগ্র দেশের জন্য র লিক্ষাব্যবস্থাটি একটি জাতীয় ভিত্তিতে প্রণীত পাঠক্রমকে কেন্দ্র করে তােলা হবে। এই পাঠক্রমে এমন কতকগুলি বিষয়কে স্থান নিতে তা সমগ্র দেশের একই পর্যায়ের সকল ছাত্রছাত্রী অধ্যয়ন করবে। এই বিষয় গুলিকে বলা হবে কোন বিষয়। এ ছাড়া ঐচ্ছিক কিছু বিষয়ও থাকবে, ছাত্রছাত্রীরা পছন্দের ভিত্তিতে গ্রহণ করবে।

পাঠক্রমকের সামাজিক তাৎপর্য: আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির উচিত এদের সামাজিকভাবে সচেতন করে তােলা। এর জন্য প্রয়ােজন –  i. পড়া শিখনে পরিবেশের সাহায্য নেওয়া; ii. শিক্ষার্থীদের তাদের অগলিকে অনুধাবন করতে সক্ষম করে তােলা ও সমাধানে প্রয়ােজনীয় অবস্থা গ্রহণ করা; iii. কমিউনিটির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্রিয় হওয়া। 

[3] ভাষানীতি: ভাষা সম্পর্কে জাতীয় শিক্ষানীতির বক্তব্য হল, কোঠারি কমিশন (1964-66) যে ভাষানীতি সুপারিশ করেছে এবং যা 1968 সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে অনুমােদিত হয়েছে তা বজায় রাখা। যেমন— 

i. প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাস্তর পর্যন্ত শিক্ষার মাধ্যম হবে মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা।

ii. ভাষাশিক্ষার ক্ষেত্রে ত্রিভাষা সূত্র চালু থাকবে। যেমনa) নিম্ন-প্রাথমিক স্তরে ছাত্রছাত্রীরা একটি ভাষা শিখব b) উচ্চপ্রাথমিক স্তরে ছাত্রছাত্রীরা দুটি ভাষা শিখবে৷ c) মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রছাত্রীরা তিনটি ভাষা শিখবে। d) উচ্চ-মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রছাত্রীরা দুটি ভাষা শিখবে | e) কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাশিক্ষা অতিরিক্ত বিষয় বলে বিবেচিত হবে।

iii. 1986 খ্রিস্টাব্দের 23 ও 24 জানুয়ারি দিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীদের নিয়ে যে সম্মেলন হয়, সেখানে সব শিক্ষাস্তরে ইংরেজিতে বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষা দেবার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব পায়। এর কারণ হল বিভিন্ন ভাষাভাষী ভারতীয় জনগণের কাছে যােগাযােগের ভাষা (link language) হিসেবে হিন্দি ভাষা যথেষ্ট সমৃদ্ধ নয় এবং অদূর ভবিষ্যতে এর সম্ভাবনাও কম| তবে আগামী 10 বছরের মধ্যে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহৃত হবে। 

iv. ভারতের সাংস্কৃতিক ধারা বজায় রাখা ও জাতীয় সংহতি রক্ষার জন্য সংস্কৃত ভাষাশিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত। 

v. আমাদের রাষ্ট্রভাষা হিন্দি৷ এই ভাষার উন্নতিসাধন করে যারা হিন্দিভাষী নন, তাদের কাছেও একে গ্রহণযােগ্য করে তােলা প্রয়ােজন। 

[4] উচ্চশিক্ষার সর্বজনীনতা; প্রতিটি ভারতীয়কে মেধার ভিত্তিতে উচ্চশিক্ষায় ভরতির সুযােগ করে দিতে হবে। 

[5] সম্পদের জোগান: দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যাতে পারস্পরিক সাহায্যগ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় প্রকল্পগুলিতে অংশ নিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি বৈষম্য দূরীকরণে, শিক্ষার রূপান্তরে, বয়স্ক সাক্ষরতা প্রকল্পে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণায় উন্নতির জন্য এবং দেশকে মাগ্রকভাবে সম্পদ সরবরাহের জন্য এগিয়ে আসতে হবে।

[6] মুক্তশিক্ষা ও দূরাগত শিক্ষার বিকাশসাধন: সার্বিক সাক্ষরতার লক্ষ্যে বিদ্যালয়-ছুট যুবক যুবতি, গৃহবধূ, কৃষি ও কলকারখানার শ্রমিকদের জন্য। তাদের পছন্দের নিরিখে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে| এর জন্য মুক্ত ও দূরাগত শিক্ষার বিকাশসাধন বিশেষভাবে প্রয়ােজন। 

[7] জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করা: ভারতে যেসব জাতীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল UGC (University Grants Commission), AICTE (All India Council of Technical Education), ICAR (Indian Council of Agricultural Research), MCI (Medical Council of India) ইত্যাদি। এই কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে NCERT (National Council of Education Research and Training), NIEPA (National Institute of Educational Planning and Administration) প্রভৃতির পরামর্শ ও পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করে জাতীয় শিক্ষানীতির সফল রূপায়ণে অগ্রসর হতে হবে। 

[8] অর্থপূর্ণ অংশীদারিত্ব : 1986 সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে ‘অর্থপূর্ণ অংশীদারিত্ব’ বলতে বােঝায় যুগ্ম তালিকায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা কী হবে তার ব্যাখ্যা।

রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার পারস্পরিক সহযােগিতার ভিত্তিতে যদি অগ্রসর না হয়, তাহলে শিক্ষার ক্ষেত্রটি ব্যাহত হবে, যার ফলে দেশের অগ্রগতিও পদে পদে ব্যাহত হবে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!