বৃত্তিমুখী শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার সম্পর্ক | মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানসমূহ

বৃত্তিমুখী শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার সম্পর্ক | মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানসমূহ
অথবা, বৃত্তিমুখী শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার সম্পর্ক লেখাে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলি উল্লেখ করাে। Class 12 | Education (কোঠারি কমিশন) | 8 Marks

উত্তর:-

বৃত্তিমুখী শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার সম্পর্ক 

বৃত্তিমুখী শিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষার ধারণার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও অনেক বিষয়ে উভয়ের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য দেখা যায়। যেমন— 

[1] সর্বজনীনতার অভাব: উভয় ধরনের শিক্ষাই সর্বজনীন নয়। ফলে সমাজের সব শিক্ষার্থী এই শিক্ষায় অংশ নিতে পারে না।

[2] লক্ষ্য: উভয় শিক্ষার লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের কোনাে বৃত্তিলাভে পারদর্শিতা অর্জনে সাহায্য করা। 

[3] সাধারণ পাঠক্রমবিহীন: উভয় শিক্ষার জন্য নির্দিষ্ট কোনাে সাধারণ পাঠক্রম থাকে না। তবে কিছু পরিমাণে সাধারণ শিক্ষার প্রয়ােজন হয়। 

[4] প্রয়োগযােগ্যতা: উভয় প্রকারের শিক্ষার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল ব্যাবহারিক জ্ঞানার্জন এবং বাস্তবক্ষেত্রে তার প্রয়ােগ।

[5] সৃজনশীলতার সুযােগ: বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষা ব্যক্তির সৃজনশীলতা ও আত্মবিকাশের সুযােগ সৃষ্টি করে। 

[6] কাজের সুযােগ সৃষ্টি: উভয় শিক্ষাই তুলনামূলকভাবে ব্যক্তির কাজের সুযােগ তৈরি করে। [7] কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষা: উভয় শিক্ষা নির্দিষ্ট কর্মক্ষেত্রকে সামনে রেখে পরিচালিত হয়৷ 

[8] জ্ঞানের বিশেষীকরণ: এই দুই শিক্ষায় কোনাে একটি বিষয়ে সম্পূর্ণ বিষয়গত জ্ঞানের পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট অংশের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণের সুযােগ ঘটে।

[9] আর্থিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা: উভয় ধরনের শিক্ষাই আর্থিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।

[10] চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা: এই ধরনের শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশের চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা করা হয়। চাহিদা কম বা বেশি হলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। উপরােক্ত আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য করা যায় যে, বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষা পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। প্রক্রিয়াগত কিছু পার্থক্য থাকলেও উভয়েরই লক্ষ্য প্রায় এক। 

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানসমূহ 

আমাদের দেশে সাধারণ শিক্ষার মতাে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার স্তরভেদ আছে।

[1] মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলি হল— 

i. জুনিয়ার টেকনিকাল বিদ্যালয়: প্রধানত সরকার দ্বারা পরিচালিত এই বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণরাই ভরতি হতে পারে। নানারকমের বৃত্তি, যেমন—ফিটার, ব্ল্যাকস্মিথ, টার্নার, ওয়েল্ডিং ইত্যাদির কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। 

ii. ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট: ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট বা ITI হল সরকার পরিচালিত বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলি সাধারণত শহরে বা মফসসলে স্থাপিত হয়। অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণরাই এখানে ভরতি হতে পারে। এখনে ফিটার, টার্নার, কার্পেন্টার, ওয়েল্ডার প্রভৃতি কাজের শিক্ষা দেওয়া হয়। 

[2] উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমুহ: উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম হল পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, ইনফরমেশন টেকনােলজি, মাইনিং ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানাে হয়।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment