Class 12 Class 12 Education কর্মের জন্য শিক্ষা কী? এর তাৎপর্য উল্লেখ করাে।

কর্মের জন্য শিক্ষা কী? এর তাৎপর্য উল্লেখ করাে।

কর্মের জন্য শিক্ষা’ কী? এর তাৎপর্য উল্লেখ করাে।  1+3     Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 4 Marks

উত্তর:-

কর্মের জন্য শিক্ষা : জীবনব্যাপী শিক্ষার দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হল কর্মের শিক্ষা। কর্মের শিক্ষার অর্থ শুধুমাত্র কাজ সম্পন্ন করা নয়, কাজে উৎকর্ষ আনা, কাজে দক্ষ হওয়া এবং নতুন পরিস্থিতিতে দলবদ্ধভাবে কাজ করা। শিক্ষাগ্রহণের সময়ে শিক্ষার্থীকে যদি কৰ্ম অভিজ্ঞতার বা সামাজিক কাজে অংশ নেওয়ার সুযােগ করে দেওয়া যায়, তাহলে কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ তৈরি হয়। তারা নিজের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা ব্যবহারের সুযােগ পায় ও কাজে দক্ষতা অর্জনের পরিবেশ গড়ে ওঠে। কর্মদক্ষতা অর্জন করতে না পারলে কারও পক্ষে ব্যক্তিজীবনে ও সমাজজীবনে সার্থকভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। 

কর্মের জন্য শিক্ষার তাৎপর্য : কর্মের জন্য শিক্ষার তাৎপর্যগুলি নীচে উল্লেখ করা হল —

[1] শিক্ষাবিদগণ ও কর্মের শিক্ষা : বিশ্বের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদরা শিক্ষার লক্ষ্য আলােচনা করতে গিয়ে কর্মশিক্ষার প্রয়ােজনীয়তার উল্লেখ করেছেন। রুশাে (Rousseau) শিশুকে সক্রিয় করে তােলার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, শিশুকে তার কর্মেন্দ্রিয়গুলির পরিচালন ক্ষমতা অর্জনে এবং শিশুকে তার দৈহিক ক্ষমতাগুলির যথােপযুক্ত ব্যবহার করতে সহায়তা করতে হবে। উন্মুক্ত। প্রাকৃতিক পরিবেশে শিশু দৌড়ঝাপ, খেলাধুলার মধ্যে দিয়েই শিখবে। এর ফলে শিশুর কর্মের প্রতি আগ্রহ এবং কর্মদক্ষতা বিকশিত হবে।

[2] কর্মমূলক মাত্রার বিকাশ : কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষার ফলেই ব্যক্তিসত্তার কর্মমূলক মাত্রার (psychometer) বিকাশ এবং দক্ষতা অর্জনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। নির্দিষ্ট বিষয়ে পাঠদানের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর কী ধরনের বিকাশ ঘটবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তা পাঠদানের উদ্দেশ্য বিবৃত করতে গিয়ে বলা হয়। 

[3] অনুভুতিমুলক মাত্রার বিকাশ : কর্মসম্পাদনের ফলে কর্মশিক্ষায়। নির্দিষ্ট শিক্ষার্থী তৃপ্তি অনুভব করে। তার মধ্যে সাফল্যের আনন্দ দেখা দেয় | এইভাবে অনুভূতির বিকাশ ঘটার সুযােগ সৃষ্টি হয়। 

[4] বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কর্মসম্পাদনের যােগ্যতা অর্জন : কর্মশিক্ষার মধ্যে দিয়ে ব্যক্তি জীবনের অন্যান্য কর্মমূলক পরিস্থিতিতে সফলতা অর্জন করার প্রশিক্ষণ পায়।

জ্যাক ডেলরস্ (Jacques Delors)-এর মতে, সকলকে নিয়ে কাজ করার সুযােগ কর্মমূলক শিক্ষায় থাকে, শিক্ষার অন্যান্য ক্ষেত্রে যার অভাব দেখা যায়। 

[5] সামাজিক বিকাশ : কর্মমূলক শিক্ষার মধ্যে দিয়ে সমাজে প্রয়ােজনীয় উৎপাদনমূলক দ্রব্য উৎপন্ন হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীর মধ্যে সমাজচেতনা জাগ্রত হয়, যা সামাজিক বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

[6] মানবসম্পদের ব্যবহার : প্রতিটি শিক্ষাথী কমবেশি কাজ করার সামর্থ্য নিয়ে জন্মায়। কর্মমূলক শিক্ষা এই সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে মানবসম্পদের ব্যবহার করে। ফলে ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ই উপকৃত হয়।

পূর্বোক্ত আলােচনা থেকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছােনাে যায় যে, জীবনব্যাপী শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল কর্মের শিক্ষা মানুষের জীবনের প্রয়ােজনীয় দিকগুলি, যেমন—কর্ম ও অনুভূতিমূলক মাত্রার বিকাশ, কর্ম সম্পাদনে যােগ্যতা অর্জন,দলের সঙ্গে কাজ করা, সামাজিক বিকাশ, সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ, মানবসম্পদের ব্যবহার, শ্রমের মর্যাদা দান, কর্মে নৈপুণ্য অর্জন, বৃত্তি পরিকল্পনা, দৈহিক সুস্থতা ইত্যাদি কর্মমূলক শিক্ষার মাধ্যমেই পূর্ণতা লাভ করে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!