বধির শিশুদের শ্রেণিবিভাগ আলােচনা করো।

বধির শিশুদের শ্রেণিবিভাগ আলােচনা করো। Class 12 | Education (ভিন্ন ধরনের সক্ষমতার শিশুদের শিক্ষা) 4 Marks

উত্তর:-

বধির শিশুদের শ্রেণিবিভাগ

বধির শিশুদের বিভিন্নভাবে ভাগ করা যায়। যেমন— [1] মাত্রানুযায়ী শ্রেণীবিভাগ, [2] বয়স অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ, [3] ভাষাগত অভিজ্ঞতা

অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ, [4] কর্ণের ত্রুটি অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ এবং [5] কেন্দ্রীয় বধিরতা অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ। এগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করা হল। 

[1] মাত্রানুযায়ী বধিরতা: শ্রবণজনিত ত্রুটির মাত্রানুযায়ী শিশুদের প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এদের একটি হল বধির (deaf) এবং অন্যটি আংশিক বধির (hard of hearing)। বধির বলতে সেইসব শিশুদের বােঝায় যারা সম্পূর্ণরূপে শ্রবণক্ষমতা হারিয়েছে। এইসব শিশুদের শ্রবণমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও এরা শ্রবণের অনুভূতি গ্রহণ করতে পারে না, অর্থাৎ শুনতে পায় না। অন্যদিকে, আংশিক বধির বলতে সেইসব শিশুদের বােঝায়। যাদের মধ্যে শ্রবণের ক্ষমতা অল্প হলেও বর্তমান। এসব শিশুদের শ্রবণমূলক প্রশিক্ষণ দিলে বা শ্রবণযন্ত্র ব্যবহার করলে এই ধরনের শিশুরা আংশিক হলেও শুনতে পায়।

ভারত সরকারের জনকল্যাণ মন্ত্রকের তথ্যের ভিত্তিতে মাত্রানুযায়ী বধিরতাকে ছয়ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলি হল— মাঝারি বধিরতা, গুরুতর বধিরতা, সম্পূর্ণ বধিরতা, মৃদু বধিরতা, প্রায় সম্পূর্ণ বধিরতা।

[2] বয়স অনুযায়ী বধিরতা: বয়স অনুযায়ী বধিরতাকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলি হল— জন্মগত বধিরতা, সংগঠিত বধিরতা।

জন্মগতভাবে যারা বধির, তারা জন্মের পর কোনােদিনই কিছু শুনতে পায় না। অন্যদিকে, সংগঠিত বধিরতার ক্ষেত্রে শিশু জন্মের পর ভালােভাবে শুনতে পেলেও পরবর্তীকালে কোনাে রােগব্যাধির জন্য বধিরতাপ্রাপ্ত হয়। 

[3] ভাষাগত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বধিরতা: এই জাতীয় বধিরতাকে দুভাগে ভাগ করা যায়। ভাগগুলি হল— ভাষাগত বিকাশের পূর্ববর্তী বধিরতা, ভাষাগত বিকাশের পরবর্তী বধিরতা।

শিশুর জন্মগ্রহণের পর তার ভাষাগত বিকাশের আগেই শ্রবণজনিত ত্রুটির কারণে যে বধিরতা হয়, তাকে ভাষাগত বিকাশের পূর্ববর্তী বধিরতা (pre-language deafness) বলে। অন্যদিকে, শিশুর জন্মের পর তার ভাষাগত বিকাশ কিছুটা হওয়ার পর যদি কোনাে বিশেষ কারণে শ্রবণজনিত ত্রুটি ঘটে, তাহলে ভাষাগত বিকাশের পরবর্তী বধিরতা (post-language deafness) দেখা যায়। 

[4] কর্ণের ত্রুটি অনুযায়ী বধিরতা: শােনার ক্ষেত্রে তিন ধরনের ত্রুটি লক্ষ করা যায়, যথা— i. বহিঃকর্ণ ও মধ্যকর্ণের গঠনগত কোনাে সমস্যা থেকে শ্রবণ সারণের বধিরতা (conductive loss), ii. অন্তঃকর্ণের ককলিয়া এবং অর্ধবৃত্তাকার নালী থেকে বহির্গত স্নায়ুজনিত বধিরতা (sensory neural loss) এবং iii. প্রথম ও দ্বিতীয় উভয় প্রকার দুটি মিলিয়ে মিশ্র বধিরতা (mixed loss)।

[5] কেন্দ্রীয় বধিরতা: এইপ্রকার বধিরতা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অংশ মস্তিষ্কের শ্রবণকেন্দ্রের ত্রুটির ফলে ঘটে থাকে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment