ব্যতিরেকী পদ্ধতিটি অপসারণের কোন নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত? ব্যতিরেকী পদ্ধতির সূত্রটিকে উল্লেখ করাে।

ব্যতিরেকী পদ্ধতিটি অপসারণের কোন নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত? ব্যতিরেকী পদ্ধতির সূত্রটিকে উল্লেখ করাে। Class 12 | Philosophy (মিলের পরিক্ষণমূলক পদ্ধতি) 8 Marks

উত্তর:-

অপসারণের দ্বিতীয় সূত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত ব্যতিরেকী পদ্ধতি 

ব্যতিরেকী পদ্ধতিটি অপসারণের দ্বিতীয় সূত্রের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। অর্থাৎ, কোনাে ঘটনাকে অপসারণ বা বর্জন করলে যদি কার্যটি ঘটার ক্ষেত্রে কোনাে অসুবিধা হয়, তাহলে সেই ঘটনাটি কারণ বা কারণের অংশরূপে বিবেচিত। দুটি দৃষ্টান্তের মধ্যে একটি মাত্র বিষয়ের অমিল বা ব্যতিরেকের ওপর নির্ভর করেই এরূপ পদ্ধতিটির সাহায্যে কার্যকারণ সম্পর্কটিকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। অর্থাৎ, একটি মাত্র বিষয়ের ব্যতিরেকের মাধ্যমে কার্যকারণ সম্পর্কটিকে নির্ণয় করার চেষ্টা করা হয় বলে এরূপ পদ্ধতিটিকে বলা হয় ব্যতিরেকী পদ্ধতি। 

ব্যতিরেকী পদ্ধতির সংজ্ঞা 

তর্কবিদ মিল (J.S. Mill)-এর মতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির সূত্রটি হল যে দৃষ্টান্তে বিচার্য ঘটনাটি উপস্থিত আছে এবং যে দৃষ্টান্তে ওই ঘটনাটি উপস্থিত নেই, তাদের মধ্যে একটি ছাড়া আর সব ব্যাপারেই যদি মিল থাকে, তাহলে যে ব্যাপার প্রথম দৃষ্টান্তে উপস্থিত আছে এবং দ্বিতীয় দৃষ্টান্তে অনুপস্থিত আছে, সেটি বিচার্য ঘটনার কারণ অথবা কার্য অথবা কারণের অপরিহার্য অংশরূপে বিবেচিত। অর্থাৎ, পারিপার্শ্বিক অবস্থাসমূহ একরকম থাকলেও, যদি কোনাে ঘটনাকে সরিয়ে নিলে অন্য একটি ঘটনাও সরে যায় এবং সেটি হাজির করলে ওই ঘটনাটিও আবার এসে হাজির হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে, ওই দুটি ঘটনার মধ্যে একপ্রকার কার্যকারণ সম্বন্ধ আছে। 

ব্যতিরেকী পদ্ধতির দুটি রূপ 

ব্যতিরেকী পদ্ধতির দুটি রূপ দেখা যায়। [1] অগ্রবর্তী বা পূর্ববতী ঘটনাগুলি থেকে কোনাে ঘটনা বাদ দিলে, অনুবর্তী ঘটনার ক্ষেত্রেও কিছু বাদ পড়ে যায়। [2] পূর্ববর্তী ঘটনার সঙ্গে কিছু নতুন ঘটনা যুক্ত করার ফলে লক্ষ করা যায় যে, অনুবর্তী ঘটনার ক্ষেত্রেও সঙ্গে সঙ্গে নতুন কোনাে বিষয় যুক্ত হয়ে যায়।

সাংকেতিক উদাহরণ 1:

পূর্ববতী ঘটনা (কারণ)অনুবর্তী ঘটনা (কার্য)
ABC (সদর্থক ঘটনা)abc (সদর্থক ঘটনা)
-BC (নঞর্থক ঘটনা)-bc (নঞর্থক ঘটনা)

∴ A হল a-এর কারণ।

সাংকেতিক উদাহরণ 2:

পূর্ববতী ঘটনা (কারণ)অনুবর্তী ঘটনা (কার্য)
BC (নঞর্থক ঘটনা)bc (সদর্থক ঘটনা)
+ABC (সদর্থক ঘটনা)+abc (নঞর্থক ঘটনা)

∴ A হল a-এর কারণ।

উদাহরণ:

কোনাে পাত্র যদি বায়ুতে পূর্ণ থাকে এবং তার মধ্যে যদি ঘণ্টাধবনি সৃষ্টি করা হয়, তাহলে তা শােনা যায়। কিন্তু পাত্রটি থেকে যদি বায়ুকে বের করে দেওয়া হয় অর্থাৎ, বাদ দেওয়া হয়—তাহলে ঘণ্টা নাড়ালেও তা শােনা যায় না। সুতরাং অনুমান করা যায় যে, বায়ুর উপস্থিতিই হল ঘণ্টাধবনি শােনার কারণ।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment