চতুস্পদঘটিত দোষের বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গিগুলি কী?

চতুস্পদঘটিত দোষের বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গিগুলি কী? অথবা,চতুপদঘটিত দোষের বিভিন্ন প্রকারগুলি উল্লেখ করাে। Class 12 | Education (নিরপেক্ষ ন্যায়) | 8 Marks

উত্তর:-

চতুষ্পদঘটিত দোষের বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি

অনেক সময় চতুষ্পদঘটিত দোষে চারটি পদকেপরিষ্কার ভাবে লক্ষ করা যায়। কিন্তু এমন কতকগুলি চতুষ্পদঘটিত দোষ আছে—যেগুলি আকারে চতুষ্পদঘটিত পদকে সূচিত না করলেও অর্থগতভাবে চারটি পদকে উল্লেখ করে। এধরনের বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই আরও তিনটি দোষের উদ্ভব হয়। যেমন

অনেকার্থক হেতু দোষ : হেতুপদটি যদি দু-জায়গায় ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়, তাহলে যে দোষের উদ্ভব হয়, তাকে বলে অনেকাথক হেতু দোষ (fallacy of ambiguous middle)। অথাৎ, এরূপ দোষ হেতু প্রধান যুক্তিবাক্য এবং অপ্রধান যুক্তিবাক্য দুটি ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করে।

সরস্বতী হন ঠাকুর (A)।

উদাহরণ

রবীন্দ্রনাথ হন ঠাকুর (A) l

.:. রবীন্দ্রনাথ হন সরস্বতী (A)।

ব্যাখ্যা

এই ন্যায় অনুমানটির ক্ষেত্রে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় তিনটি পদ দুবার করেই অভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু গভীরভাবে বিশ্লেষণ। করলে দেখা যায় যে, এখানে হেতপদ তথা ‘ঠাকুর’ প্রধান এবং অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে দুবার ভিন্ন অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে। প্রধান আশ্রয়বাক্যে ‘ঠাকুর’ অর্থে ‘দেবতা এবং অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে ঠাকুর’ অর্থে ‘পদবি’কে বােঝানাে হয়েছে। ফলত হেতুপদটি অনেকাৰ্থক সূচক। অতএব এই ন্যায় অনুমানটি অনেকর্থিক হেতু দোষে দুষ্ট। 

অনেকাৰ্থক পক্ষ দোষ ; পক্ষপদটি যদি দু-জায়গায় ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়, তাহলে সেই চতুষ্পদঘটিত দোষকে বলা হয় অনেকাৰ্থক পক্ষ দোষ (fallacy of ambiguous minor) |

উদাহরণ

সকল পরিশ্রমলব্ধ বস্তু হয় দামি (A)।

দণ্ড হয় পরিশ্রমলব্ধ বস্তু (A)। 

.:. দন্ড হয় দামি (A)।

ব্যাখ্যা

এই অনুমানটি অনেকাৰ্থক পক্ষ দোষে দুষ্ট। কারণ, এখানে পক্ষপদটি তথা দণ্ড দুবার ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে ‘দণ্ড’-র অর্থ হল ‘শাস্তি’, কিন্তু সিদ্ধান্তে এর অর্থ হল ‘সময়।।

অনেকাৰ্থক সাধ্য দোষ : যে চতুষ্পদঘটিত দোষে সাধ্যপদটি দুবার ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়, সেই দোষকে বলা হয় অনেকাৰ্থক সাধ্য দোষ (fallacy of ambiguous major)।

উদাহরণ

সকল পদ হয় বচনের অপরিহার্য অংশ (A)।

কোনাে পা নয় বচনের অপরিহার্য অংশ (A)।

.;. কোনাে পা নয় পদ (A)।

ব্যাখ্যা

এই ন্যায় অনুমানটি অনেকাৰ্থক সাধ্য দোষে দুষ্ট। কারণ, সাধ্যপদটি তথা ‘পদ’ শব্দটি দু-জায়গায় দুরকম অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রধান আশ্রয়বাক্যে‘পদ’ শব্দটি কোনােবাক্য বাবচনের উদ্দেশ্য বাবিধেয় অর্থে ব্যবহৃত, কিন্তু সিদ্ধান্তে তা ‘পা’ অর্থে ব্যবহৃত। সেকারণেই এই ন্যায় অনুমানটি অবশ্যই অবৈধরূপে গণ্য হবে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।