বৃদ্ধি কাকে বলে | বৃদ্ধির শর্তগুলি উল্লেখ করো | বৃদ্ধির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো

বৃদ্ধি কাকে বলে ? বৃদ্ধির শর্তগুলি উল্লেখ করো । বৃদ্ধির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো । উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান (HS Education)

উত্তর: 

বৃদ্ধি (Growth) 

বৃদ্ধি বলতে সাধারণভাবে আমরা দৈহিক আচরণগত পরিবর্তনকে বুঝি। অর্থাৎ এই অর্থে বৃদ্ধি এক ধরণের জৈবিক পরিণমন। কারণ জীবনের ধর্ম হচ্ছে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হওয়া। মনােবিদরা বৃদ্ধি বলতে শুধুমাত্র আকার ও আয়তনের পরিবর্তন বােঝায়। আবার এই বৃদ্ধির ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে। যদিও এই পরিবর্তন ঘটে প্রাণীর আপন বৈশিষ্ট্যের দ্বারা। যা প্রাণী পেয়ে থাকে নিজের পূর্বপুরুষের কাছ থেকে। সুতরাং বৃদ্ধি বলতে বােঝায় বিকাশের ক্ষমতা। অতএব বৃদ্ধি হল একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পথে শিশু বিকশিত হওয়ার প্রতিক্রিয়া। আর এই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য শিশুর সম্মিলিত প্রচেষ্টা হল বৃদ্ধি।

বৃদ্ধির শর্ত

বৃদ্ধির কতকগুলি শর্ত আছে সেগুলি নিম্নরুপে আলোচনা করা হল 

১) অপরিনত অবস্থা: শিশু অপরিনত অবস্থায় থাকে বলেই সে বিকশিত হতে পারে। 

২) নমনীয়তা: পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরিবর্তিত পরিবেশে নিজস্ব আচরণধারাকে পরিবর্তিত করার প্রক্রিয়া। 

৩) অভিযােজন ক্ষমতা: ব্যক্তির অন্তঃজীবন ও বহিঃজীবনের নানা উপাদানের পারম্পরিক ক্রিয়ার উপরই বৃদ্ধি নির্ভরশীল। বৃদ্ধি নির্ভর করে অনেক উপাদানের যথাযথ ক্রিয়ার বা অভিযােজন ক্ষমতার উপর। 

৪) ক্রমবৃদ্ধি: ধীরে ধীরে অথচ নিরবচ্ছিন্ন ধারায় ঘটে বৃদ্ধি। ক্রমবৃদ্ধি ও প্রতিটি স্তর আগেকার স্তরের উপর নির্ভরশীল। ক্রমবৃদ্ধি এবং শিক্ষা আসে পরিবেশ ও ব্যক্তির পারস্পরিক ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। 

বৃদ্ধির বৈশিষ্ট্য 

বৃদ্ধির শর্তগুলি পর্যালােচনা করলে আমরা বৃদ্ধির কতগুলি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করি, সেই বৈশিষ্ট্য গুলি ছকের সাহায্যে বিস্তারিতভাবে আলােচনা করা হল

১) দৈহিক বিকাশ: দৈহিক বিকাশ বলতে ব্যক্তির আয়তন বৃদ্ধি, দৈর্ঘ্যবৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি এবং হাত, পা অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বৃদ্ধি বােঝানো হয়। অথাৎ বৃদ্ধির দ্বারা নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দেহ কাঠামাের সার্বিক পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের ফলে দৈহিক বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন পূর্ববর্তী অবস্থার তুলনায় উন্নত স্তরে বিচরন করে। 

২) বিকাশ প্রক্রিয়া: বৃদ্ধির গুনগত দিককে আমরা বিকাশ প্রক্রিয়া বলে গন্য করি। বৃদ্ধির গুনগত প্রকাশ আচরন ধারার পরিবর্তনে লক্ষ্য করা যায়। 

৩) ক্রমবর্ধমান প্রক্রিয়া: বৃদ্ধির ফলে যে গুনগত ও পরিমানগত পরিবর্তন ঘটে সেই পরিবর্তনের পর্যায়গুলি কখনাে এলােমেলাে ভাবে সম্পাদিত হয় না। ক্রম উন্নয়নশীল পরিবর্তনের মাধ্যমে সংগঠিত হয়। সুতরাং বৃদ্ধি একটি ক্রমবর্ধমান প্রক্রিয়া যার একটি নির্দিষ্ট হার আছে এবং ক্রম আছে। 

৪) সময়ের সঙ্গে সম্পর্কিত: বৃদ্ধি কথাটির সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট কালের সম্পর্ক বর্তমান। অর্থাৎ বৃদ্ধি হল পরিমাণগত পরিবর্তন। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে কি কি পরিবর্তন ঘটেছে তা বৃদ্ধির মাধ্যমে বােঝা সম্ভব হয়। 

৫) বৃদ্ধির সমাপ্তি ঘটে: বৃদ্ধি যেমন নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হয় তেমনি নির্দিষ্ট সময়ে অর্থাৎ পরিণমন পর্যায়ে এসে গেলে বৃদ্ধির সমাপ্তি ঘটে।

৬) বৃদ্ধি পরিমাপযােগ্য: বৃদ্ধি সর্বদাই পরিমাপ করা যায়। বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে বৃদ্ধির যথাযথ পরিমাপ করা সম্ভব।

Read Also

বিকাশের সংজ্ঞা দাও l বিকাশের বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!