তুলনামূলক শিক্ষার পদ্ধতি গুলি লেখো

তুলনামূলক শিক্ষার পদ্ধতি গুলি লেখো

উত্তর : 

তুলনামূলক শিক্ষার পদ্ধতি

সমাজবিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয়ের ন্যায় তুলনামূলক শিক্ষার বিকাশের জন্য।রাতন স্তরে কতগুলি পদ্ধতি (Method) অনুসরণ করা হয়। তুলনামূলক শিক্ষাকে অনুধাবন করতে এবং বিস্তৃতির উদ্দেশ্যে অনেক শিক্ষাবিদ এবং বিভিন্ন সংস্থা যেমন–UNO, INESCO, ILO বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন এবং বিষয়টি সমৃদ্ধ করেছেন। তুলনামূলক শিক্ষার এইরকম কয়েকটি পদ্ধতি হলাে— 1. পরিসংখ্যানভিত্তিক পদ্ধতি, 2. বর্ণনামূলক পদ্ধতি, 3. ঐতিহাসিক পদ্ধতি, 4. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, 5. সংশ্লেষাত্মক পদ্ধতি।

1. রিসংখ্যানভিত্তিক পদ্ধতি : বিংশ শতাব্দীতে পরিসংখ্যান পদ্ধতিটি ছিল খুবই জনপ্রিয়। এই পদ্ধতিতে সামগ্রিক উন্নয়ন পরিস্থিতির পরিচয় অথবা কালানুক্রমিক উন্নয়নের রূপরেখা পরিসংখ্যান সহযােগে উপস্থিত করা হয়। এতে পুরাে ব্যাপারটি অনেক সহজবােধ্য হয় এবং একটি পরিমাণগত ধারণা গড়ে উঠার ফলে পর্যায়ক্রমিক বিশ্লেষণও বিজ্ঞানসম্মত হয়।

তুলনামূলক শিক্ষা বিভিন্ন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য তুলে ধরে এবং শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রণকারী প্রভাবকগুলির বিশ্লেষণ করে। পরিসংখ্যানভিত্তিক পদ্ধতির UNESCO, ILO মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যাবলি থেকে কোনাে একটি দেশের উন্নয়ন বা অবনতি পরিমাপ করা যায়। 

2. বর্ণনামূলক পদ্ধতি : বর্ণনামূলক পদ্ধতি বহুল ব্যবহৃত হয় ঊনবিংশ শতকে। কারণ এইসময়ে শিক্ষাবিদদের উদ্দেশ্যই ছিল শিক্ষাব্যবস্থায় ভালাে এবং উপযােগী। বিষয়গুলি অন্য দেশের শিক্ষাব্যবস্থা হতে নিয়ে যুক্ত করতে হবে। আর এজন্যই অন্যান্য দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বর্ণনা করার প্রয়ােজন হতাে। অনেক শিক্ষাবিদ অন্যান্য শের শিক্ষাব্যবস্থার পূর্ণ উপস্থাপন করেছেন বর্ণনার মাধ্যমে। এই পদ্ধতির মল কাজ হলাে একটি শিক্ষাব্যবস্থাকে পূর্ণভাবে বর্ণনা করে তা থেকে খুবই ব্যবহার উপযােগী, কার্যকরী, উন্নয়নমূলক দিকটি গ্রহণ করা |

3. ঐতিহাসিক পদ্ধতি : ঐতিহাসিক পদ্ধতিতে আধুনিক শিক্ষার সমস্যাগুলি আলােচনা করা হয়। এই পদ্ধতি দেখিয়ে দেয় যে আধুনিক শিক্ষা কোন শিক্ষাব্যবস্থার উপর দাঁড়িয়ে আছে; কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এই ঐতিহাসিক জ্ঞান। শুধুমাত্র অপ্রয়ােজনীয় দিকগুলিকেই বাদ দেয় না বরং উপযােগী বিষয়কে শিক্ষাব্যবস্থায় যুক্ত করে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার উপযােগী প্রভাবকে ব্যবহার করে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নই মূল লক্ষ্য। 

4. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি : বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সাধারণত গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হয়। সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে তুলনা করতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চারটি ধাপ অনুসরণ করা হয়। সেগুলি হলাে – 1)  শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ, 2) সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক তথ্যের সংব্যাখ্যান, 3) তুল্যমান নির্ণয় করা, 4) সংব্যাখ্যান ও সিদ্ধান্ত।

সংশ্লেষাত্মক পদ্ধতি :

তুলনামূলক শিক্ষার আলােচনায় বর্তমানে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্ব মানা হয়েছে। এই পদ্ধতি অনুযায়ী শিক্ষার সমস্যাগুলিকে আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে আলােচনা করা হয়। E. King তাঁর ‘World Perspective in Education” বইতে এই পদ্ধতির পক্ষে বক্তব্য পেশ করেন। যখন আমরা বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপদ্ধতি সম্পর্কে বিচার করি বা ভাবি আমরা সেগুলির সহজাত বৈসাদৃশ্যের মধ্যে কতকগুলি বিশ্বজনীন সত্য প্রত্যক্ষ করি। কারণ সারা পৃথিবীর মানুষের প্রয়ােজন ও আকাঙ্ক্ষার মিল রয়েছে। এই সাধারণ মিল সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতার ব্যাপারে যথেষ্ট অবদান আছে সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জের। সংশ্লেষণাত্মক পদ্ধতি এখনও পূর্ণ বিকশিত হয়ে ওঠার অপেক্ষায় বিকাশমুখী অগ্রগতির পথে অগ্রসরমান।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment