শিক্ষার সঙ্গে মনােবিজ্ঞানের পার্থক্য লেখাে। শিক্ষা-মনােবিজ্ঞানের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি আলােচনা করাে
উত্তর:
শিক্ষার সঙ্গে মনােবিজ্ঞানের পার্থক্য
বিষয় | শিক্ষা | মনােবিজ্ঞান |
প্রকৃতি | এটি নিয়মনিষ্ঠ ও প্রয়ােগমূলক বিজ্ঞান। | এটি বিষয়নিষ্ঠ ও শুদ্ধ বিজ্ঞান |
মৌলিকতা | এতে নানা বিষয়ের সমন্বয়। লক্ষ করা যায়, যেমন — দর্শন, মনােবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, পরিবেশবিদ্যা ইত্যাদি। | এটি একটি মৌলিকমৌলিক বিজ্ঞান নয়। |
লক্ষ্য | ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নসাধন। | মানসিক প্রক্রিয়ার বিশ্লেষণ ও নিয়ন্ত্রণে উন্নয়নসাধন সহায়তাদান। |
পরিবর্তনশীলতা | এটি পরিবর্তনশীল। | এটি পরিবর্তনশীল নয়। |
শিক্ষা-মনােবিজ্ঞানের পদ্ধতি :
শিক্ষা-মনােবিজ্ঞানে যেসকল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি এখানে আলােচনা করা হল
[1] অন্তর্দর্শন : এই পদ্ধতির দ্বারা যে-কোনাে মানুষ আপন অনুভূতি, আবেগ, প্রেষণা, ভাবনা ইত্যাদি মানসিক প্রক্রিয়াসমূহকে পরীক্ষা করার সুযােগ লাভ করে। এটি ব্যক্তিনির্ভর পদ্ধতি হলেও শিক্ষা-মনােবিজ্ঞানে এবং সাধারণ মনােবিজ্ঞানে এটি ব্যবহৃত হয়।
[2] পর্যবেক্ষণ : এই পদ্ধতির সাহায্যে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ব্যক্তির আচরণের প্রতি লক্ষ রাখা হয়। শিক্ষাক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়ােগ করে শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য খুবই নির্ভরযােগ্য এবং যে-কোনাে শিক্ষণ-শিখন পরিস্থিতিতে এই পদ্ধতি প্রয়ােগ করা যায়, তবে এর জন্য পর্যবেক্ষকের পরিবর্তে তিন-চারজন পর্যবেক্ষক দ্বারা তথ্যসংগ্রহ করতে পারলে ভালাে ফল পাওয়া যায়।
[3] চিকিৎসামূলক পদ্ধতি : এই পদ্ধতিতে সমস্যাবহুল ব্যক্তিকে বিস্তৃতভাবে অনুশীলনের ব্যবস্থা করা হয়। এর মাধ্যমে ব্যক্তির আপন সমস্যার পাশাপাশি পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের দ্বারা প্রভাবিত সমস্যাকেও যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করা হয়। এই পদ্ধতিতে সমস্যা নির্ণয়ের পাশাপাশি সমস্যা সমাধানের দিকটিও নির্ধারণ করা হয়।
[4] পরীক্ষামূলক পদ্ধতি : শিক্ষা মনােবিজ্ঞানের গবেষণার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি খুবই প্রচলিত। এই পদ্ধতিতে কাজ করার সময় গবেষকরা প্রথমে কয়েকটি হাইপােথেসিস (Hypothesis) নির্বাচন করেন। তথ্যসংগ্রহের পর রাশিবিজ্ঞানের সহায়তায় ওই তথ্যগুলিকে বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে হাইপােথেসিসগুলির মধ্যে কোটি বা কোনগুলি গৃহীত বা বর্জিত হবে তা ঠিক করা হয়।
[5] পার্থক্যমূলক পদ্ধতি : পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রেখে ব্যক্তি বা বিষয়বস্তুকে নিরীক্ষণ করার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। একদল শিক্ষার্থীর মধ্যে কোনাে একটি শিক্ষার্থীর অবস্থান বা একটি দলের সঙ্গে অন্য দলের সম্পর্ক জানার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয়।
[6] রাশিবিজ্ঞানমূলক পদ্ধতি : এই পদ্ধতিটি পরীক্ষামূলক পদ্ধতি এবং পার্থক্যমূলক পদ্ধতির ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া রাশিবিজ্ঞানে ব্যবহৃত সকল পদ্ধতিই এর। অন্তর্গত।
[7] সমাজমিতি পদ্ধতি : একটি দলের মধ্যে অবস্থিত ব্যক্তিগণের মধ্যে কোনাে একটি ব্যক্তির স্বীকৃতির মাত্রা নির ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি ব্যবহৃত হয়।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।