প্রশ্নঃ জল দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কে আলোচনা করো ।
উত্তরঃ-
জল দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন :
উঃ জনস্বাস্থ্য একটি সামাজিক বিষয়। জনস্বাস্থ্য সামগ্রিকভাবে যে কয়েকটি জিনিসের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় সেগুলি হল- জল, খাদ্য, বাসস্থান, বস্ত্র এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। নিরাপদ ও পানের যোগ্য জল সরবরাহ করা সম্ভব না হলে জনস্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সেই কারণে পানীয় জলকে সবসময় নিরাপদ, দূষণমুক্ত এবং পান করার যোগ্য হতে হবে এবং তার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যেমন দরকার, তেমনি আইনি সুরক্ষা বন্দোবস্তেরও প্রয়োজন রয়েছে।
এই উদ্দেশ্যে ১৯৭৪ সালের জল দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন তৈরি হয়।
জল (প্রতিরোধ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ) আইন, 1974 অনুসারে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাজঃ
এই আইনের বলে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাজ হল-
১) রাজ্যস্তরে বিভিন্ন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাজগুলির মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করা।
২) জলদূষণ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা।
৩) জলদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সব ধরনের সাহায্য দেওয়া।
এ ছাড়া, কেন্দ্রীয় সরকারকে জলদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য পরামর্শ দেওয়াও এই কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ পর্যদের কাজ।
জল (প্রতিরোধ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ) আইন, 1974 অনুসারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাজ :
আলোচ্য আইনের ধারা অনুসারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাজ হল-
১) নদী, নলকূপ ও পাতকুয়োর জলে দূষণ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ এবং হ্রাস করার উদ্দেশ্যে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
৩) রাজ্য সরকারকে জলদূষণ নিবারণের জন্য পরামর্শ দান করা।
৩) জলদূষণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা এবং দুষণ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাস করার উদ্দেশ্যে তথ্য সরবরাহ করা।
৪) জলদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গবেষণায় উৎসাহ দান করা।
৫) কেন্দ্রীয় দূষণ পর্ষদের সঙ্গে সহযোগিতা স্থাপন করা।
জল (প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ) আইন, 1974.-এর অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি ব্যবস্থা (Provisions]:
১) এই আইনের ২৪ ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তি নদী, পুকুর, জলাশয়, পাতকুয়ো বা তার পাড় ও তলদেশে কোনো ধরনের বিষাক্ত ও দূষিত পদার্থ ফেলতে পারবে না।
২) এই আইনের ২৫ (১) ধারা অনুসারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি এমন কোনো শিল্প, কারখানা বা উৎপাদন সংস্থা স্থাপন বা পরিবর্তন বা সম্প্রসারণ করতে পারবে না, যেগুলি থেকে দূষিত আবর্জনা নদী বা পুকুর বা পাতকুয়ো বা যে-কোনো ধরনের কূপের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।
৩) এই আইনের 25 (২) ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি ছাড়া কোনো তরল দূষিত পদার্থ বা দূষিত আবর্জনা সরানোর জন্য কোনো নতুন নালা বা নির্গমন পথ নির্মাণ করতে পারবে না, এমনকি পুরাতন নির্গমন পথের পরিবর্তন করতে পারবে না।
৪) উক্ত আইনের ৪১ (১) ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তি এই আইনে বর্ণিত ব্যবস্থাগুলিকে লঙ্ঘন করলে তাকে তিন মাসের জেল বা 5,000 টাকা জরিমানা বা দুটি শাস্তি একই সঙ্গে দেওয়া যেতে পারে।
Read Also
বায়ু দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কে আলোচনা করো
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।