‘ উৎসাহে তাহার রাত্রে নিদ্রা হয় না ।—উদ্দিষ্টের উৎসাহের ‘পিছনে লেখক যে ট্র্যাজিক আভাস দিয়েছেন তা বর্ণনা করো ।

উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ফটিক মামা বিশ্বম্ভরবাবুর সঙ্গে কলকাতায় যাওয়ার পরম উৎসাহে রাত্রে ঠিকমতো ঘুমোতে পারত না । 

পল্লিজীবনের গ্রাম্য পরিবেশে বড়ো হয়ে ওঠা ফটিকের কাছে তার আবাল্য পরিচিত ও ভালোবাসার স্মারক ছিল তার জন্মভূমি, উন্মুক্ত প্রকৃতি ও স্বচ্ছন্দ বিচরণক্ষেত্র নদীর ধার। তার দুরন্তপনায় ইতি টানতে ও পড়াশোনায় মন বসাতে বিশ্বম্ভরবাবু তাকে কলকাতায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। চেয়েছিলেন বনের পাখিকে খাঁচায় বন্দি করতে। গ্রামীণ জীবন থেকে ‘ছুটি’ নিয়ে শহর কলকাতার যান্ত্রিক জীবনে যাওয়াই যে তার শেষ যাওয়া, এই পৃথিবীর মুক্ত প্রকৃতিতে সে যে আর ফিরতে পারবে না—লেখক সেই ইঙ্গিতই যেন তার বিদায়ের দৃশ্যে দিয়েছেন। যে ভাইয়ের সাথে তার খুনসুটি লেগেই থাকত, ঠিকমতো বনিবনা হত না, যে ভাইকে সে মিথ্যাবাদী বলে চড় কষিয়েছিল, কলকাতায় যাওয়ার সময় তাকেই পরম আদরে তার খেলার সব সরঞ্জাম দিয়ে গেল। রবীন্দ্রনাথ বোঝাতে চাইলেন, মানুষ মৃত্যুর পূর্বে যেমন উত্তরাধিকারী নির্বাচিত করে, ফটিকও তেমনি জীবন থেকে ‘ছুটি’ নেওয়ার পূর্বে তার প্রাণাধিক প্রিয় সম্পত্তিগুলির উত্তরাধিকারী ছোটো ভাই মাখনকে দিয়ে গেল। লেখক সুকৌশলে এখানেই এ গল্পের ট্র্যাজিক আভাস দিয়ে রাখলেন। মামার বাড়ি যাওয়ার আনন্দের বৈপরীত্যে দিয়ে রাখলেন বিচ্ছেদের করুণ সুরের আভাস । ফটিকের মায়ের বুকে যেন আশঙ্কা বাজল, তিনি ব্যথিত হলেন, ফটিক হাসিমুখে ‘ছুটি’ নিল।

Read Also

“ তিনি ঈষৎ ক্ষুণ্ণ হইলেন । – কে, কার প্রতি ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন ? তাঁর ক্ষুণ্ণ হওয়ার কারণ কী?

‘বিধবা এ প্রস্তাবে সহজেই সম্মত হইলেন ।—বিধবার কাছে কে, কী প্রস্তাব করেছিলেন? তিনি তাতে সম্মত হয়েছিলেন কেন?

‘কিন্তু অন্যান্য পার্থিব গৌরবের ন্যায় ইহার আনুষঙ্গিক যে বিপদের সম্ভাবনাও আছে, তাহা তাহার কিম্বা আর-কাহারও মনে উদয় হয় নাই । — রচনার নামোল্লেখ-সহ উদ্ধৃতাংশের প্রসঙ্গ নির্দেশ করো। উক্তিটি ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দাও ।

এই অকাল-তত্ত্বজ্ঞানী, মানব সকলপ্রকার ক্রীড়ার অসারতা সম্বন্ধে নীরবে চিন্তা করিতে লাগিল । — বক্তা কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছেন? উক্তিটির অর্থ লেখো

পূর্বাপেক্ষা আর-একটা ভালো খেলা মাথায় উদয় হইয়াছে — পূর্বের খেলাটি কী ছিল? এখনকার খেলাটিই-বা কী এবং তার পরিণতি কী হয়েছিল ?

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment