ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Chuti Question Answer | Class 11 | Semester 2 | WBCHSE

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 11 এর ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের একাদশ শ্রেনীর Semester 2 -তে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ছুটি গল্প রয়েছে। গল্পের থেকে ৫ নম্বরের সম্ভাব্য সমস্ত প্রশ্ন উত্তর গুলি আমরা এখানে দিয়ে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

ছুটি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Chuti Question Answer

উৎস

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ছুটি’ গল্পটি রচনা করেন ১২৯৯ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ‘সাধনা’ পত্রিকায় ১২৯৯, পৌষ (১৮৯২, ডিসেম্বর) সংখ্যায়। বর্তমানে ‘ছুটি’ গল্পটি গল্পগুচ্ছের প্রথম খণ্ডে সংকলিত।

‘ছিন্নপত্রাবলী’-র ২৪ সংখ্যক পত্রে রবীন্দ্রনাথ সাজাদপুর থেকে ইন্দিরা দেবীকে লিখেছিলেন—“ডাঙার উপর একটা মস্ত নৌকোর মাস্তুল পড়েছিল। গোটাকতক বিবস্ত্র ক্ষুদে ছেলে মিলে অনেক বিবেচনার পর ঠাওরালে যে, যদি যথোচিত কলরব-সহকারে সেইটেকে ঠেলে ঠেলে গড়ানো যেতে পারে তা হলে খুব একটা নতুন এবং আমোদজনক খেলার সৃষ্টি হয়।” এই সামান্য দৃশ্যপটেই অসামান্য ‘ছুটি’ গল্পের সৃষ্টি।

বিষয়সংক্ষেপ

ফটিক গ্রামের দুরন্ত বালক। তেরো-চোদ্দো বছর বয়সের ফটিক সমবয়সি বালকদের সর্দার। খেলার সময় প্রতি মুহূর্তে তার মাথায় নতুন নতুন চিন্তার উদয় হয়। সেদিন বিকালে সেরকমই এক উদ্ভাবনী চিন্তা আসে ফটিকের মাথায়—নদীর ধারে পড়ে থাকা একটি শালকাঠের গুঁড়িকে তাদের খেলার সরঞ্জাম হিসেবে গড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বালকেরা যখন গুঁড়িটি ঠেলার জন্য প্রস্তুত তখন বিঘ্ন ঘটায় ফটিকের ভাই মাখনলাল। অতর্কিতে সে গম্ভীরভাবে সেই গুঁড়ির ওপর গিয়ে বসে পড়ে। অন্য বালকেরা নামতে বললেও সে নামে না। ফটিক সর্দারি মনোভাব নিয়ে ভয় দেখায়, তবুও মাখন দার্শনিকের মতো চুপ করে বসে থাকে। মাথায় আবার নতুন চিন্তার উদয় হয়—মাখন সমেত গুঁড়িটিকে ঠেলা হবে। বালকেরা ভাবল বেশ মজা হবে। মাখন ভাবল, এতে তার গৌরব বৃদ্ধি হবে। কিন্তু খেলার ফল হয় মারাত্মক। গুঁড়ি একপাক ঘুরতে-না-ঘুরতেই মাখন তার গাম্ভীর্য সমেত মাটিতে পড়ে যায়। রাগ গিয়ে পড়ে দাদার ওপর। ফটিককে অন্ধভাবে মারতে থাকে মাখন। তার নাকে মুখে আঁচড় কেটে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির দিকে রওনা দেয়। অচিরেই খেলা ভঙ্গ হয় ৷

আনমনা ফটিক নদীর ধারে নৌকার ওপর বসে কাশের গোড়া চিবোতে থাকে। সেইসময় ঘাটে আসে একটি বিদেশি নৌকা। অর্ধবয়সি এক ভদ্রলোক নৌকা থেকে নেমে চক্রবর্তীদের বাড়ি যাওয়ার ঠিকানা জানতে চাইলে ফটিক সদুত্তর দেয় না। ফটিকের মন ভালো নেই, সে একাকী থাকতে চায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর বাঘা বাগদির সক্রিয় চেষ্টায় ফটিককে বাড়ি ফিরতে হয়।

মায়ের সামনে মাখন মিথ্যা বলে ফটিককে অপরাধী প্রমাণ করতে চাইলে ফটিক মাখনের গালে সবেগে এক চড় কষায়। মা মাখনের পক্ষ নিলে অভিমানী ফটিক মাকে ঠেলে দেয়। ঠিক সেই মুহূর্তে সেই বিদেশি বাবু তাদের বাড়িতে আসেন। তাঁকে দেখেই ফটিকের মা বিস্ময়ে আনন্দে দাদা বলে প্রণাম করে। আসলে সেই বিদেশি ভদ্রলোক হলেন ফটিকের মামা বিশ্বম্ভরবাবু। বহুদিন তিনি পশ্চিমে কর্মে নিযুক্ত ছিলেন। বাড়ি ফিরে বোন-ভাগ্নেদের দেখতে এসেছেন। ফটিকের মায়ের বিয়ের পরে তিনি একবারও আসেননি। ইতিমধ্যে ফটিক ও মাখনের জন্ম হয়েছে, তাদের বাবাও মারা গেছে, তারা ক্রমশ বড়ো হয়ে উঠেছে। দাদার না-আসা নিয়ে ফটিকের মায়ের কিছু অভিমানও আছে।

মামার সস্নেহ আদরে কিছুদিন তাদের বেশ সমারোহে কাটে। বিশ্বম্ভরবাবু ছেলেদের পড়াশোনা ও মানসিক উন্নতির খোঁজ নেওয়ার সময় জানতে পারেন ফটিক অবাধ্য, উচ্ছৃঙ্খল ও পাঠে অমনোযোগী এবং মাখন সুশীল, শান্ত ও বিদ্যানুরাগী। তাই ফটিককে তিনি কলকাতায় নিয়ে গিয়ে নিজের কাছে রেখে পড়াশোনা করানোর প্রস্তাব দেন। এ প্রস্তাবে ফটিক ও তার মা সহজেই রাজি হয়ে যায়। ফটিক কলকাতায় যাওয়ার সময় তার সমস্ত খেলার সরঞ্জাম উত্তরাধিকারী হিসেবে মাখনকে দিয়ে যায়।

বালকদের সর্দার ফটিক কলকাতায় এলে তার মামার বাড়িতে যথাযথ সমাদর পায় না। মামা ছাড়া কেউ তাকে ভালোবাসে না। মামার তিনটি সন্তান। মামীর অনাদর, উপেক্ষা, অবিচার ফটিককে আঘাত দেয়। গ্রামের মুক্ত পরিবেশে অভ্যস্ত ফটিক শহরের যান্ত্রিক বদ্ধ পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে না, হাঁপিয়ে ওঠে। তার দুরন্তপনা শহরের বদ্ধতায় শান্ত হয়ে যায়। বনের উন্মুক্ত পাখি যেন খাঁচায় বন্দি হয়ে থাকে। ফটিক মুক্তি চায়, সে বাড়ি ফিরতে চায়। কিন্তু পুজোর ছুটি না-হওয়া অবধি তাকে অপেক্ষা করতে হয়। কার্তিক মাসে পুজোর ছুটিতে মামা তাকে বাড়ি নিয়ে যাবে। কিন্তু শহর কলকাতা ফটিকের মানসলোকে এতই বিরূপ হয়ে ওঠে যে ফটিক পুজোর ছুটি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় না। শ্রাবণের অবিশ্রান্ত ধারায় জ্বর গায়ে একদিন কাউকে কিছু না-জানিয়ে সে পালিয়ে যায়। প্রবল বৃষ্টির মধ্যে পুলিশের গাড়ি আবার তাকে পৌঁছে দেয় মামার বাড়ি। জ্বর ক্রমশ বেড়েই চলে। প্রবল জ্বরে প্রলাপ বকতে থাকে ফটিক। মামা অস্থির হয়ে চিকিৎসক ডাকেন, ফটিকের মাকে খবর দেন। কিন্তু পরিস্থিতি ভালো না-ঠেকায় রুমালে চোখ মোছেন । ফটিকের মা গ্রাম থেকে এসে ঝড়ের বেগে ঘরে প্রবেশ করে। মাকে দেখে ফটিক চলে যে তার ছুটি হয়েছে, সে বাড়ি যাচ্ছে। খালাসিদের মতো সুর করে প্রলাপ বকে চলে ফটিক। ফটিক ‘ছুটি’ চায়, জীবনের অন্তহীন সমুদ্রে তলিয়ে যেতে চায়। তাই পৃথিবী থেকে সে চিরদিনের মতো ছুটি নেয়। তার এই ‘ছুটি’ গল্পে গভীর ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করে।

ছুটি গল্পের নামকরণ কতখানি সার্থক তা আলোচনা করো

ছুটি গল্পে মামাবাড়িতে গিয়ে ফটিকের যে দুরবস্থা হয়েছিল তা নিজের ভাষায় লেখো

ছুটি গল্পে ফটিকের মামীর চরিত্র বিশ্লেষণ করো

প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিগুঢ় আত্মিক সম্পর্কের গভীর তাৎপর্য ব্যাপ্ত হয়ে আছে গল্পটির সর্বাঙ্গে।–আলোচ্য উক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ‘ছুটি’ গল্পের প্রাকৃতিক রূপ আলোচনা করো

মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি।—উদ্ধৃত উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

ছুটি গল্পে বিশ্বম্ভরবাবুর ভূমিকা আলোচনা করো

ছুটি গল্পে ফটিকের চরিত্র আলোচনা করো

মামা, আমার ছুটি হয়েছে কি ?—প্রসঙ্গ নির্দেশ করে ‘ছুটি’ শব্দটির ব্যঞ্জনার্থ বুঝিয়ে দাও ।

‘ ফটিক খালাসিদের মতো সুর করিয়া বলিতে লাগিল, এক বাঁও মেলে না, দো বাঁও মেলে-এ-এ না ।—ফটিকের এই উক্তি গল্পে কতটা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে আলোচনা করো।

‘ অতএব তাঁহাদের নিকট হইতে উপেক্ষা অত্যন্ত দুঃসহ বোধ হয় ।’—কোন্ প্রসঙ্গে কথাটি বলা হয়েছে? মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

‘ তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই ।—মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

‘ উৎসাহে তাহার রাত্রে নিদ্রা হয় না ।—উদ্দিষ্টের উৎসাহের ‘পিছনে লেখক যে ট্র্যাজিক আভাস দিয়েছেন তা বর্ণনা করো ।

“ তিনি ঈষৎ ক্ষুণ্ণ হইলেন । – কে, কার প্রতি ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন ? তাঁর ক্ষুণ্ণ হওয়ার কারণ কী?

‘বিধবা এ প্রস্তাবে সহজেই সম্মত হইলেন ।—বিধবার কাছে কে, কী প্রস্তাব করেছিলেন? তিনি তাতে সম্মত হয়েছিলেন কেন?

‘কিন্তু অন্যান্য পার্থিব গৌরবের ন্যায় ইহার আনুষঙ্গিক যে বিপদের সম্ভাবনাও আছে, তাহা তাহার কিম্বা আর-কাহারও মনে উদয় হয় নাই । — রচনার নামোল্লেখ-সহ উদ্ধৃতাংশের প্রসঙ্গ নির্দেশ করো। উক্তিটি ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দাও ।

পূর্বাপেক্ষা আর-একটা ভালো খেলা মাথায় উদয় হইয়াছে — পূর্বের খেলাটি কী ছিল? এখনকার খেলাটিই-বা কী এবং তার পরিণতি কী হয়েছিল ?

এই অকাল-তত্ত্বজ্ঞানী, মানব সকলপ্রকার ক্রীড়ার অসারতা সম্বন্ধে নীরবে চিন্তা করিতে লাগিল । — বক্তা কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছেন? উক্তিটির অর্থ লেখো

Read Also

ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বিদ্যাপতি | Bhab Sammilon Poem Question Answer | Class 11 | Semester 2 | WBCHSE

তেলেনাপোতা আবিষ্কার প্রশ্ন উত্তর | Telenopota Abishkar Question Answer | Class 11 | Semester 2 | WBCHSE

ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Chuti Question Answer | Class 11 | Semester 2 | WBCHSE

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

2 thoughts on “ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Chuti Question Answer | Class 11 | Semester 2 | WBCHSE”

Leave a Comment