কারিগরি শিক্ষার বিকাশে বাংলায় ‘বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের’ কী ভূমিকা ছিল? 4 Marks/Class 10
উত্তর:– বিশ শতকে বাংলায় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ স্থাপিত হলে কারিগরি শিক্ষা প্রসারের উদ্যোগ সূচিত হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠা : বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যা না কারিগরি শিক্ষার ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে—এ প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষা পরিষদের কর্মকর্তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। এই পরিষদের সদস্য তারকনাথ পালিতের উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয় বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট বা বি টি আই (জুলাই, ১৯০৬ খ্রি.)।
পঠনপাঠন : বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের পাঠ্যক্রম ছিল কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রিক এবং এখানে তিন বছরের ইন্টারমিডিয়েট ও চার বছরের সেকেন্ডারি বা মাধ্যমিক শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়। সমকালীন শিক্ষক বিনয় সরকার উপহাস করে এই প্রতিষ্ঠানকে ‘মিস্তিরি তৈরির কারখানা’ বলে অভিহিত করেন।
তিন বছরের ‘ইন্টারমিডিয়েট’-এ ভর্তি হওয়া ছাত্রদের পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত ও ইংরেজি শিক্ষার পাশাপাশি ফিটিং, ডাইয়িং বা রঞ্জনকার্য, কারপেনট্রি বা ছুতােরের কাজ, সাবান তৈরি ও ট্যানিং-এর কাজ শিখতে হত। অন্যদিকে চার বছরের সেকেন্ডারীতে ভর্তি হওয়া ছাত্রদের মেকানিক্যাল, টেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফলিত রসায়ণ ও ভূবিদা চর্চা করতে হত।
জাতীয় শিক্ষা পরিষদের সঙ্গে সংযুক্তি : বি.টি.আই প্রাথমিক পর্বে শুধুই প্রায়ােগিক বিদ্যা শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছিল। এই ব্যবস্থা জাতীয় শিক্ষা পরিষদের পছন্দ ছিল না তথাপি বি.টি.আই শেষপর্যন্ত জাতীয় শিক্ষা পরিষদের সঙ্গে সংযুক্ত হয় (২৫ মে, ১৯১০ খ্রি.)।
বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট মানিকতলার পঞ্চবটী ভিলা থেকে যাদবপুরে স্থানান্তরিত হয় (১৯২৪ খ্রি.) ও পরবর্তী কালে বি টি আই কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ উন্নীত হয় (১৯২৮ খ্রি.) এবং একেই কেন্দ্র করে পরবর্তীকালে গড়ে ওঠে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৫৫ খ্রি.) যা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত। এরপর খুব শীঘ্রই এই প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার পীঠস্থানে পরিণত হয়। বাংলার বহু ছাত্র এখান থেকে শিক্ষা লাভ করে স্বনির্ভর ও স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।
Nice 👍