জাতীয় শিক্ষা পরিষদ — টীকা লেখাে। 

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ — টীকা লেখাে।  4 Marks/Class 10

উত্তর:

ভূমিকা : বঙ্গভঙ্গ-বিরােধী আন্দোলনকালে জাতীয় শিক্ষাধারণার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ (১৯০৬ খ্রি.)। 

প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য : জাতীয় শিক্ষা পরিষদ (১৯০৬ খ্রি.) প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি হল— (১) ব্রিটিশ প্রবর্তিত শিক্ষানীতির বিরােধিতা করা এবং (২) দেশের প্রয়ােজনে স্বদেশি ধাঁচে এক বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তােলা। এই শিক্ষাব্যবস্থার দুটি দিক ছিল যথা—সাধারণ বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যা শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা। 

কার্যাবলি : জাতীয় শিক্ষা পরিষদের কার্যাবলির বিভিন্ন দিক হল —

১) ন্যাশনাল কলেজ : সাধারণ বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যা শিক্ষার জন্য জাতীয় শিক্ষা পরিষদ বউবাজারে ‘বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ’ ও স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন জাতীয়তাবাদী চরমপন্থী নেতা অরবিন্দ ঘােষ

২) বিদ্যালয় : জাতীয় শিক্ষা পরিষদের অধীনে ও উৎসাহে দেশের বিভিন্ন স্থানে (রংপুর, ঢাকা, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা প্রভৃতি) জাতীয় বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। 

৩) টেকনিক্যাল কলেজ : বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যা না কারিগরি শিক্ষার ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে—এ প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষা পরিষদের কর্মকর্তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয় এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিষদের সদস্য তারকনাথ পালিতের উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট’ (২৫ জুলাই, ১৯০৬ খ্রি:)।

ব্যর্থতার কারণ : জাতীয় শিক্ষা পরিষদ ভারতে প্রথমবার জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে সচেষ্ট হলেও শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়। এই ব্যর্থতার কারণগুলি হল— (১) বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় অর্থসংকট দেখা দেওয়া; (২) বেতনের স্বল্পতার কারণে শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠান ত্যাগ; (৩) চাকরির বাজারে প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ডিগ্রি বা সার্টিফিকেটের গুরুত্বহীনতা; (৪) তৎকালীন চরমপন্থী নেতাদের এই পরিষদকে অস্বীকার ইত্যাদি।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment