একা আন্দোলন (১৯২১-২২ খ্রিস্টাব্দ) – টীকা লেখাে। 

টীকা লেখাে : একা আন্দোলন (১৯২১-২২ খ্রিস্টাব্দ)।   4 Marks/Class 10

উত্তর: ১৯২১-২২ খ্রিস্টাব্দে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস ও খিলাফতি নেতাদের উদ্যোগে এবং মাদারি পশির নেতৃত্বে হরদৌই, সীতাপুর, বারাচ, বারবাকি জেলায় যে কৃষক আন্দোলন শুরু হয়, তা একা বা একতা আন্দোলন নামে পরিচিত। 

নামকরণ : আন্দোলনকারীরা ঐক্যবদ্ধ (একতা) থাকার জন্য প্রতিজ্ঞাগ্রহণ করায় এই আন্দোলন একা আন্দোলন নামে পরিচিত।

একা আন্দোলনের কর্মসূচি/শপথ পাঠ : কৃষকরা মাটিতে গর্ত করে জল রেখে তাকে গঙ্গাজল বলে মনে করত এবং সেই জল ছুঁয়ে তারা নিম্নে বর্ণিত শপথ গ্রহণ করত— 
(১) জমি বেদখল হলে তারা জমি ছাড়বে না, (২) রেকর্ডভুক্ত নির্দিষ্ট খাজনা ছাড়া অতিরিক্ত কিছু দেওয়া হবে না, (৩) রসিদ ছাড়া খাজনা দেওয়া হবে না, (৪) বাটাই বা শস্যের ভাগ দ্বারা খাজনা না দিলে টাকায় খাজনা দেওয়া হবে, (৫) বেগার প্রথা বন্ধ করা হবে, (৬) গ্রামে সংঘটিত বিবাদ, পঞ্চায়েতে মীমাংসা করা হবে, (৭) যে-কোনাে পরিস্থিতিতে কৃষকদের মধ্যে একতা রক্ষা করতে হবে।

জাতীয় কংগ্রেস ও একা আন্দোলন : প্রাথমিক পর্যায়ে কংগ্রেস ও খিলাফতি নেতাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরবর্তীকালে একা আন্দোলন কংগ্রেস নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে নিজস্ব পথে চলা শুরু করে। মাদারি পাশি ও অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণির কিষাণ নেতা এই আন্দোলনকে তাদের নিজস্ব পথে পরিচালিত করায় কংগ্রেস এই আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

একা আন্দোলনে হিংসার প্রকাশ : একা আন্দোলন ক্রমে হিংসাত্মক হয়ে ওঠে— কুমায়ুন অঞলের সংরক্ষিত অরণ্য জ্বালিয়ে দেওয়া হলে এবং জমিদার ও তালুকদারদের গৃহ আক্রান্ত হলে সরকার দমননীতি প্রয়ােগ করে একা আন্দোলন দমন করে। 

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, এই আন্দোলন ছিল স্বতঃস্ফূর্ত কৃষক বিদ্রোহ।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment