ভারত ছাড়াে আন্দোলন পর্বে নারীদের অংশগ্রহণ আলােচনা করাে। 4 Marks/Class 10
উত্তর:-
ভূমিকা : স্বাধীনতা আন্দোলনের শেষ বৃহৎ গণ আন্দোলন অর্থাৎ ভারত ছাড়াে আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ ও জাতীয় আন্দোলনে তাদের ভূমিকা অধিকতর স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল।
নারীর যােগদান : ভারত ছাড়াে আন্দোলনে নারীদের যােগদান আইন অমান্য আন্দোলনের মতাে পরিকল্পিত ও কর্মসূচিভিত্তিক না হলেও নারীরা যেভাবে যােগদান করে তা হল —
১. মধ্যবিত্ত নারীর যােগদান : এই আন্দোলনে স্কুল-কলেজের ছাত্রী-সহ শিক্ষিত মধ্যবিত্ত নারীরা প্রকাশ্য ও গােপন দু’ধরনের আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিল, যেমন—উষা মেহতা বােম্বাইয়ে গােপন রেডিয়াে কেন্দ্র গড়ে তুলে গান্ধির করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ আদর্শ সহ জাতীয় আদর্শ প্রচার করতেন।
২. নারীদের সংগঠন : নারীদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে অরুণা আসফ আলি ও সুচেতা কৃপালিনীর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। অরুণা আসফ আলি গােপনে জাতীয় আন্দোলন গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন এবং ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ৯ আগস্ট বােম্বাই-এর আগস্ট ক্রান্তি ময়দানে তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করেন।
৩. মাতঙ্গিনী হাজরা : ভারত ছাড়াে আন্দোলনে মেদিনীপুরের মাতঙ্গিনী হাজরা তমলুক থানা দখল অভিযানের জন্য গড়ে ওঠা একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেন এবং পুলিশের গুলিতে জখম হন ও শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
৪. ভগিনী সেনা : ভারত ছাড়াে আন্দোলনের সময় বাংলার মেদিনীপুরে ‘তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি গ্রামীণ মহিলারা ব্রিটিশ বিরােধী প্রতিরােধ সংগ্রাম চালানাের জন্য নারী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। এইরূপ সংগঠন ‘ভগিনী সেনা’ নামে পরিচিত । ভগিনী সেনার অনেক নারী জেলবন্দি হন ও ৮৪ জনেরও বেশি নারী ধর্ষিতা হন।
উপসংহার : ভারত ছাড়াে আন্দোলনে বাংলা, বােম্বাই, আসাম, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, কর্ণাটকে অংশগ্রহণকারী নারীদের অধিকাংশই কংগ্রেস দলের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত ছিল। তুলনামূলকভাবে কংগ্রেস সােশ্যালিস্ট পার্টি এই সময় আন্দোলনের নেতৃত্বে এগিয়ে এসেছিল। তবে এই আন্দোলনে বামপন্থী মনােভাবাপন্ন ও কমিউনিস্ট দলের নারী সদস্যদের যােগদান ছিল সীমিত।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।