প্রশ্ন – উদবাস্তু সমস্যার সমাধানে ভারত সরকারের উদ্যোগ বিশ্লেষণ করাে। অথবা, উদবাস্তু পুনর্বাসনে সরকারি উদোগের ক্ষেত্রে কী বিতর্ক দেখা যায়। Class 10 | 4 Marks
উত্তর: – ভমিকা : ভারতে পশ্চিম পাঞ্জাব থেকে আসা উদবাস্তুর পূর্ব পাঞ্জাব, দিল্লি, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয় এবং পূর্ববঙ্গ থেকে আসা উদ্বাস্তুরা কলকাতা ও কলকাতা সন্নিহিত চব্বিশপরগনা, নদিয়া, মুরশিদাবাদ, মালদহ, দিনাজপুর প্রভৃতি স্থানে আশ্রয় নেয়।
সরকারের উদ্যোগ : উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধানে ভারত। সরকারের উদ্যোগের বিভিন্ন দিকগুলি হল—
১। পুনর্বাসন নীতি : ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু উদ্বাস্তু সমস্যার ব্যাপকতা উপলব্ধি করেন এবং এই ছিন্নমূল উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের নীতির ওপর গুরুত্ব দেন বলে স্বাধীনতার প্রথম পাঁচ বছর পুনর্বাসনের যুগ’ নামে পরিচিত।
২। উদ্বাস্তু শিবির : উদ্বাস্তুদের বাসস্থান, আহার ও নিরাপত্তাদানের জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পূর্বপাঞ্জাব ও। পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর সংখ্যক অস্থায়ী বাসস্থান বা শিবির তৈরি করা। হয়, যেখানে নথিভুক্ত উদ্বাস্তুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব ও সরকারি সাহায্য প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়।
৩। সরকারি সাহায্য : গ্রামীণ স্তরের উদ্বাস্তুদের জমিদান, কষিঋণ ও গৃহনির্মাণে ভরতুকি বা সরকারি সাহায্য দেওয়া হয় এবং শহরাঞ্চলে উদ্বাস্তুদের জন্য শিল্প ও কারিগরি শিক্ষা প্রদান। ও কুটিরশিল্প প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে।
৪। দিল্লি চুক্তি : ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকৎ আলি খানের সঙ্গে নেহরু-লিয়াকৎ চুক্তিতে আবদ্ধ হন (এপ্রিল, ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ), যেখানে বলা হয় যে, সংখ্যালঘুরা যে যার রাষ্টের প্রতি অনুগত থাকবে এবং তার কাছেই প্রতিকার
চাইবে। ভবিষ্যৎ দাঙ্গা প্রতিহতকরণের ব্যবস্থা করা হবে এবং উদ্বাস্তুদের নিজের দেশে প্রত্যাবর্তনে উৎসাহদান করা হবে।
উপসংহার : উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধানে ভারত সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও তা ছিল মূলত দিল্লি ও পূর্ব পাঞ্জাব-নির্ভর। তুলনামূলকভাবে পশ্চিমবঙ্গের উদ্বাস্তু সমস্যা অবহেলিত হয়েছিল। তা ছাড়া উদ্বাস্তু শিবিরগুলি ছিল শহর থেকে দূরে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেখানে পানীয় জল, শৌচালয় বা ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিসেবাও ছিল না।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।