Gita Mahatto Bangla – গীতা মাহাত্ম্য

গীতা মাহাত্ম্য – Gita Mahatto Bangla

গীতাশাস্ত্রমিদং পুণ্যং যঃ পঠেৎ প্রযতঃ পুমান্ ।
বিষ্ণোঃ পদমবাপ্নোতি ভয়শোকাদিবর্জিতঃ।।১।।  

অনুবাদঃ শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতার নির্দেশকে যথাযথভাবে অনুসরণ করতে পারলে, অতি সহজেই সমস্থ ভয় ও উদ্ভেগ থেকে মুক্ত হওয়া যায়। এই জীবনে ভয় ও শোকাদি বর্জিত হয়ে পরবর্তী চিন্ময় স্বরূপ অর্জন করা যায়।  

গীতাধ্যায়নশীলস্য প্রাণায়মপরস্য চ। 
নৈব সন্তি হি পাপানি পূর্বজন্মকৃতানি চ।।২।।  

অনুবাদঃ কেউ যদি আন্তরিকভাবে এবং অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ভগবদ্ গীতা পাঠ করে, তা হলে ভগবানের করুণায় তার অতীতের সমস্ত পাককর্মের ফল তাকে প্রভাবিত করে না।  

মলিনে মোচনং পুংসাং জলস্নানং দিনে দিনে। 
সকৃদ্ গীতামৃতস্নানং সংসারমলনাশনম্।।৩।।

অনুবাদঃ প্রতিদিন জলে স্নান করে মানুষ নিজেকে পরিচ্ছন্ন করতে পারে, কিন্তু কেউ যদি ভগবদ্ গীতার গঙ্গাজলে একটি বারও স্নান করে, তা হলে তার জড় জীবনের মলিনতা একেবারেই বিনষ্ট হয়ে যায়।   

গীতা সুগীতা কর্তব্যা কিমন্যৈঃ শাস্ত্রবিস্তরৈঃ। 
যা স্বয়ং পদ্মনাভস্য মুখপদ্মাদ্ বিনিসৃতা।।৪।।

অনুবাদঃ যেহেতু ভগবদ্ গীতার বাণী স্বয়ং পরম পুরুষোত্তম ভগবানের মুখনিঃসৃত বাণী, তাই এই গ্রন্থ পাঠ করলে আর অন্য কোন বৈদিক সাহিত্য পড়বার দরকার হয় না। গভীর নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিয়মিতভাবে ভগবদ্ গীতা শ্রবণও কীর্তন করলে আমাদের অন্তর্নিহিত ভগবদ্ভক্তির স্বাভাবিক বিকাশ হয়। বর্তমান জগতে মানুষের নানা রকম কাজে এতই ব্যস্ত থাকে যে,  তাদের পক্ষে সমস্ত বৈদিক সাহিত্য পাঠ করা সম্ভব নয়।সমস্ত বৈদিক সাহিত্য পড়বার প্রয়োজনও নেই। এই একটি গ্রস্থ ভগবদ্ গীতা পাঠ করলেই মানুষ সমস্ত বৈদিক জ্ঞানের সারমর্ম উপলব্দি করতে পারবে, কারণ ভগবদ্ গীতা হচ্ছে বেদের সার এবং এই গীতা স্বয়ং ভগবানের মুখনিঃসৃত উপদেশ বাণী।  

ভারতামৃতসর্বস্বং বিষ্ণুবক্ত্রাদ্ বিনিঃসৃতম্।
গীতাগঙ্গোদকং পীত্বা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে।।৫।। 

অনুবাদঃ গঙ্গাজল পান করলে অবধারিতভাবে মুক্তি পাওয়া যায়, আর যিনি ভগবদ্ গীতার পুণ্য পীযূষ পান করেছেন, তাঁর কথা আর কি বলবার আছে? ভগবদ্ গীতা হচ্ছে মহাভারতের অমৃতরস, যা আদিবিষ্ণু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলে গেছেন। ভগবদ্ গীতা পরম পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত, আর গঙ্গা ভগবানের চরণপদ্ম থেকে উদ্ভূত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ভগবানের মুখ ও পায়ের মধ্যে অবশ্য কোন পার্থক্য নেই। তবে আমাদের এটি বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, ভগবদ্ গীতার গুরুত্ব গঙ্গার চেয়েও বেশি।  

সর্বোপনিষদো গাবো দোগ্ধা গোপালনন্দনঃ। 
পার্থো বৎসঃ সুধীর্ভোক্তা দুগ্ধং গীতামৃতং মহৎ।।৬।।

অনুবাদঃ এই গীতোপনিষদ্ ভগবদ্ গীতা সমস্ত উপনিষদের সারাতিসার এবং তা ঠিক একটি গাভীর মতো এবং রাখাল বালকরুপে প্রসিদ্ধ ভগবান শ্রীকৃষ্ণই এই গাভীকে দোহন করেছেন। অর্জুন যেন গোবৎসের মতো এবং জ্ঞানীগুণী ও শুদ্ধ ভক্তেরাই ভগবদ্ গীতার সেই অমৃতময় দুগ্ধ পান করে থাকেন।  

একং শাস্ত্রং দেবকীপুত্রগগীতম্ 
একো দেবো দেবকীপুত্র এব। 
একো মন্ত্রস্তস্য নামানি যানি 
কর্মাপ্যেকং তস্য দেবস্য সেবা।।৭।।

অনুবাদঃ বর্তমান জগতে মানুষ আকুলভাবে আকাঙ্ক্ষা করছে একটি শাস্ত্রের, একক ভগবানের, একটি ধর্মের এবং একটি বৃত্তির। তাই, একং শাস্ত্রং দেবকীপুস্ত্রগীতম্- সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য সেই একক শাস্ত্র হোক ভগবদ্ গীতা। একো দেবো দেবকীপুত্র এব- সমগ্র বিশ্বচরাচরের একক ভগবান হোন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। একো মন্ত্রসস্তস্য নামানি- একক মন্ত্র, একক প্রার্থনা, একক স্তোত্র হোক তাঁর নাম কীর্তন-  

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে। 
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।৮।। 

এবং কর্মাপ্যেকং তস্য দেবস্য সেবা- সমস্ত মানুষের একটিই বৃত্তি হোক- পরম পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা।। 

শ্রীল ব্যাসদেব কৃত গীতা- মাহাত্ম্য

গীতা সগীতা কর্তব্যা কিমন্যৈঃ শাস্ত্রবিস্তরৈঃ। 
যা স্বয়ং পদ্মনাভস্য মুখপদ্মাদ্বিনিঃসৃতা।।১।। 
সর্বশাস্ত্রময়ী গীতা সর্বদেবময়ী যতঃ
সর্বধর্মময়ী যস্মাত্তস্মাদেতাং সমভ্যসেৎ।।২।।

অনুবাদঃ গীতা স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের মুখপদ্ম থেকে নিঃসৃত হয়েছেন। সেই গীতা সুন্দরভাবে পাঠ করতে হবে। অন্যান্য বহু রকমের শাস্ত্রের প্রয়োজন নেই। যেহেতু শ্রীমদ্ভাগবদ্ গীতা সর্বশাস্ত্রময়ী, সর্বদেবময়ী ও সর্বধর্মময়ী, সুতরাং গীতা অভ্যাস করা একান্ত কর্তব্য।    

শালগ্রামশিলাগ্রে তু গীতাধ্যায়ং পঠেত্তু যঃ। 
মন্বন্তরসহস্রাণি বসতে ব্রহ্মণঃ পুরে।।৩।। 
হত্বা হত্বা জগৎ সর্বং মুষিত্বা সচরাচরম্। 
পাপৈর্ন লিপ্যতে চৈব গীতাধ্যায়ী কথঞ্চন। 
তেনেষ্টং ক্রতুভিঃ সর্বৈর্দত্তং তেন গবাযুতম্।।৪।।
গীতামভ্যস্যতা নিত্যং তেনাপ্তং পদমব্যয়ম্।।৫।। 

অনুবাদঃ ‍যিনি শালগ্রাম শিলার সামনে গীতাধ্যায় পাঠ করেন, তিনি সহস্র মন্বন্তর ব্রহ্মলোকে বাস করেন। যদি কোন ব্যক্তি বারংবার জগৎ নাশ বা চৌর্য-কর্ম করে, এমন জনও গীতাধ্যায়ী হলে কোন প্রকার পাপে লিপ্ত হয় না। উপরন্তু তিনি সর্বজ্ঞ হন এবং দশহাজার গো-দানের ফল লাভ করেন। প্রত্যহ গীতাধ্যায়ী ব্যক্তি অভয়পদ প্রাপ্ত হন।  

গীতাধ্যায়ং পঠেদ্ যস্তু শ্লোকং শ্লোকার্ধমেব বা। 
ভবপাপবিনির্মুক্তো যাতি বিষ্ণোঃ পরং পদম্।।৬।।

অনুবাদঃ যিনি গীতার একটি অধ্যায়, একটি শ্লোক কিংবা অর্ধ শ্লোক মাত্র পাঠ করেন, তিনি সংসার-পাপ থেকে মুক্ত হয়ে বিষ্ণুধামে গমন করেন।  

যো নিত্যং বিশ্বরূপাখ্যমধ্যায় পঠতি দ্বিজঃ। 
বিভূতিং দেবদেবস্য তস্য পুণ্যং বদাম্যহম্।।৭।। 
বেদৈরধীতৈর্যৎ পুণ্যং সেতিহাসৈঃ পুরাতনৈঃ। 
শ্লোকেনৈকেন তৎ পুণ্যং লভতে নাত্র সংশয়ঃ।।৮।। 
আব্রহ্মস্তম্ভপর্যন্তং জগত্তৃপ্তিং করোতি সঃ। 
বিশ্বরূপং সদাধ্যায়ং বিভূতিঞ্চ পঠেত্তু যঃ।।৯।। 

অনুবাদঃ যে ব্রাহ্মণ ভগবদ্ গীতার শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপ নামক একাদশ অধ্যায় ও বিভূতিযোগ নামক দশম অধ্যায় নিত্য পাঠ করেন, আমি এখন তাঁর পুণ্যের কথা বলছি। সমগ্র বেদ, ইতিহাস, পুরাণ অধ্যয়ন করলে যে পুণ্য হয় এক শ্লোকেই সেই পুণ্য হয়ে থাকে। ‍যিনি প্রতিদিন বিশ্বরূপ ও বিভুতিযোগ নামক অধ্যায় পাঠ করেন তিনি আব্রহ্ম স্তম্ভ পর্যন্ত জগতের প্রীতি সাধন করেন। 

অহন্যহনি যো মর্ত্যো গীতাধ্যায়ং পঠেত্তু বৈ। 
দ্বাত্রিংশদপরাধাংস্ত্ত ক্ষমতে তস্য কেশবঃ।।১০।। 
লিখিত্বা বৈষ্ণবানাঞ্চ গীতাশাস্ত্রং প্রযচ্ছতি। 
দিনে দিনে চ যজতে হরিং চাত্র ন সংশয়ঃ।।১১।। 
চতুর্ণামেব বেদানাং সারমুদ্ধৃত্য বিষ্ণুনা। 
ত্রৈলোক্যস্যোপকারায় গীতাশাস্ত্রং প্রকাশিতম্।।১২।। 

অনুবাদঃ কেশব প্রত্যহ গীতাধ্যায়ী ব্যক্তির বত্রিশ প্রকার অপরাধ ক্ষমা করেন। ‍যিনি গীতাশাস্ত্র লিখে বৈষ্ণবকে প্রদান করেন তিনি প্রত্যহ শ্রীহরিপূজার ফল প্রাপ্ত হন সন্দেহ নেই। বিষ্ণু চারি বেদের সার উদ্ধার করে ত্রিভুবনের উপকারের জন্য এই গীতাশাস্ত্র প্রকাশ করেছেন 

ভারতমৃতসর্বস্বং বিষ্ণোর্বক্ত্রাদ্বিনিঃসৃতম্। 
গীতা-গঙ্গোদকং পীত্বা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে।।১৩।। 
ধর্মং চার্থঞ্চ কামঞ্চ মোক্ষঞ্চাপীচ্ছতা সদা। 
শ্রোতব্যা পঠনীয়া চ গীতা কৃ্ষ্ণমুখোদ্ গতা।।১৪।।

অনুবাদঃ মহাভারতের সারসুধা, বিষ্ণুমুখনির্গত গীতারূপ গঙ্গাবারি পান করলে পুনর্জন্ম হয় না। চতুর্বর্গ ফলাভিলাষী ব্যক্তির প্রত্যহই কৃষ্ণমুখবিনির্গত গীতা শ্রবণ ও পাঠ করা কর্তব্য।

যো নরঃ পঠতে নিত্যং গীতাশাস্ত্রং দিনে দিনে । 
বিমুক্তঃ সর্বপাপেভ্যো যাতি বিষ্ণোঃ পরং পরম্।।১৫।। 

অনুবাদঃ যিনি নিত্যই গীতা পাঠ করেন, তিনি সব রকমের পাপ থেকে মুক্ত হয়ে শ্রীকৃষ্ণের পরম ধামে গমন করেন।

শ্রীবৈষ্ণবীয় তন্ত্রসারে গীতা-মাহাত্ম্য

ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়
শৌনক উবাচ
গীতায়াশ্চৈব মহাত্মং যথাবৎ সূত মে বদ। 
পুরা নারায়য়ণক্ষেত্রে ব্যাসেন মুনিনোদিতম্।।১।। 

অনুবাদঃ শৌনক ঋষি বললেন, হে সূত, পুরাকালে নারায়ণ ক্ষেত্রে মহামুনি ব্যাস-কথিত গীতামাহাত্ম্য আমাকে বলুন।  

সূত উবাচ
ভদ্রং ভগবতা পৃষ্টং যদ্ধি গুপ্ততমং পরম্।
শক্যতে কেন তদ্বক্তুং গীতামাহাত্ম্যমুত্তমম্।।২।।

অনুবাদঃ সূত গোস্বামী বললেন, হে ভগবন্, আপনি উত্তম জিজ্ঞাসা করেছেন। যা পরম গোপনীয়তম সেই উত্তম গীতামাত্ম্য কে বলতে সমর্থ?  

কৃষ্ণো জানাতি বৈ সম্যক্ কিঞ্চিৎ কুন্তীসুতঃ ফলম্।
ব্যাসো বা স্যাসপুত্রো যা যাজ্ঞবল্ক্যোহথমৈথিলঃ।।৩।।

অনুবাদঃ শ্রীকৃষ্ণই তা সম্যকভাবে জানেন। কুন্তীপুত্র অর্জুন তার কিঞ্চিৎ ফল জানেন। আর ব্যাসদেব, শুকদেব, যাজ্ঞবল্ক্য ও রাজর্ষি জনক তাঁরাও কিছু কিছু জ্ঞাত আছেন।  

অন্যে শ্রবণতঃ শ্রত্বা লেশং সঙ্কীর্তয়ন্তি চ। 
তস্মাৎ কিঞ্চিদবদাম্যত্র ব্যাসস্যাস্যান্ময়া শ্রুতম্।।৪।। 

অনুবাদঃ এছাড়া অন্যেরা পরম্পরা ধারায় শ্রবণ করে তার লেশমাত্র কীর্তন করে থাকেন। আমি ব্যাসদেবের কাছে যেভাবে শ্রবণ করেছি তারই কিঞ্চিৎ এখানে বলছি।  

সর্বোপনিষদো গাবো দোগ্ধা গোপালনন্দনঃ। 
পার্থো বৎসঃ সুধীর্ভোক্তা দুগ্ধংগীতামৃতং মহৎ।।৫।। 

অনুবাদঃ সমস্ত উপনিষদ গাভীর মতো। গোপালনন্দন শ্রীকৃষ্ণ তাদের দোহন কর্তা। পৃথাপুত্র অর্জুন গো বৎসের মতো। এই গীতামৃত পরম উৎকৃষ্ট দুধের মতো এবং সুখী ব্যাক্তিরা এর আস্বাদনকারী।  

সারাথ্যমর্জুনস্যাদৌ কুর্বন্ গীতামৃতং দদৌ। 
লোকত্রয়োপকারায় তস্মৈ কৃষ্ণাত্মনে নমঃ।।৬।। 

অনুবাদঃ যে কৃষ্ণ অর্জুনের সারাথ্য স্বীকার করে ত্রিলোকের উপকারের জন্যে এই গীতামৃত প্রদান করেছেন, আমি প্রথমেই সেই শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম জানাই।  

সংসরসাগরং ঘোরং ত্যক্তুমিচ্ছতি যো নরঃ। 
গীতানাবং সমাসাদ্য পারং যাতি সুখেন সঃ।।৭।। 

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি ঘোর সংসার-সাগর উত্তীর্ণ হতে চান, তিনি গীতারূপ নৌকার আশ্রয়ে সুখেই পার হতে পারেন।  

গীতাজ্ঞানং শ্রুতং নৈব সদৈবাভ্যাসযোগতঃ। 
মোক্ষমিচ্ছতি মূঢ়াত্মা যাতি বালকহাস্যতাম্।।৮।।

অনুবাদঃ গীতাজ্ঞান শ্রবণ না করেই যে মূঢ়াত্মা সর্বদা অভ্যাস যোগে মোক্ষলাভ করতে চায়, তাকে বালকেরাও উপহাস করে।  

যে শৃন্বন্তি পঠন্ত্যেব গীতাশাস্ত্রমহর্নিশম্। 
ন তে বৈ মানুষা জ্ঞেয়া দেবরূপা ন সংশয়ঃ।।৯।। 

অনুবাদঃ যাঁরা অহর্নিশ গীতাশাস্ত্র শ্রবনণ বা পাঠ করেন, তাঁরা কখনই সাারণ মানুষ নন, তাঁরা নিশ্চিত দেবতুল্য, এতে সংশয় নেই।  

গীতাজ্ঞানেন সম্বোধং কৃষ্ণঃ প্রাহার্জুনায় বৈ। 
ভক্তিতত্ত্বং পরং তত্র সগুণং বাথ নির্গুণম্।।১০।।

অনুবাদঃ ভগবান কৃষ্ণচন্দ্র গীতাজ্ঞান দ্বারা অর্জুনের সম্বোধনার্থ সগুণ ও নির্গুণ পরম ভক্তিতত্ত্ব কীর্তন করেছিলেন।

সোপানাষ্টাদশৈরেবং ভুক্তিমুক্তিসমুচ্ছ্রিতৈঃ। 
ক্রমশো চিত্তশুদ্ধিঃ  স্যাৎ প্রেমভক্ত্যাদি কর্মসু।।১১।। 

অনুবাদঃ এভাবে ভোগ ও মোক্ষ নিরাকৃত অষ্টাদশ অধ্যায় সোপান বিশিষ্ট গীতাজ্ঞান দ্বারা চিত্ত শুদ্ধ হয় এবং ক্রমশ প্রেমভক্তিতে অধিকার জন্মে।

সাধোর্গীতাম্ভসি স্নানং সংসারমলনাশনম্। 
শ্রদ্ধাহীনস্য তৎকার্যং হস্তিস্নানং বৃথৈব তৎ।।১২।। 

অনুবাদঃ এই গীতারূপ সলিলে স্নান করে সাধুব্যক্তিরা সংসার মল মুক্ত হন। কিন্তু শ্রদ্ধাহীন জনের সেই স্নান হস্তিস্নানের মতো বৃথা হয়ে থাকে। 

গীতায়াশ্চ ন জানাতি পঠনং নৈব পাঠনম্। 
স এব মানুষে লোকে মোঘকর্মকরো ভবেৎ।।১৩।। 

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি গীতার পঠন পাঠন কিছু জানে না, সেই ব্যক্তি মানব সমাজে অনর্থক কর্মকারী। 

তস্মাদ্ গীতাং ন জানাতি নাধমস্তৎপরো জনঃ। 
ধিক্ তস্য মানুষং দেহং বিজ্ঞানং কুলশীলতাম্।।১৪।। 

অনুবাদঃ অতএব গীতাতত্ত্ব যে জানে না, তার থেকে অধম ব্যক্তি আর কেউ নেই। তার কুল, শীল, বিজ্ঞান ও মনুষ্যদেহে ধিক। 

গীতার্থং ন বিজানাতি নাধমস্তৎপরো জনঃ। 
ধিক্ শরীরং শুভং শীলং বিভবন্তদগৃহাশ্রমম্।।১৫।।

অনুবাদঃ যে গীতার অর্থ জানে না, তার থেকে অধম আর নেই। তার সুন্দর দেহ, তার চরিত্র, তার বৈভব, তার গৃহ আশ্রম সবই ধিক্। 

গীতাশাস্ত্রং ন জানাতি নাধমস্তৎপরো জনঃ 
ধিক্ প্রারন্ধং প্রতিষ্ঠাঞ্চ পূজাং দানং মহত্তমম্।।১৬।।

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি গীতাশাস্ত্র জানে না, তার অপেক্ষা অধম জন আর নেই, তার প্রারব্ধ কর্মে ধিক্, তার প্রতিষ্ঠায় ধিক, তার পূজা, দান, মহত্ত সমস্তই ধিক্। 

গীতাশাস্ত্রে মর্তিনাস্তি সর্বং তন্নিস্ফলং জগুঃ। 
ধিক্ তস্য জ্ঞানদাতারং ব্রতং নিষ্ঠাং তপো যশঃ।।১৭।। 

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি গীতাশাস্ত্রে মতিহীন ব্যক্তির সমস্তই নিস্ফল বলে কথিত হয়। তার জ্ঞানদাতাকে ধিক্, তার ব্রতে ধিক্, তার নিষ্ঠায় ও তপস্যায় ধিক্, তার যশেও ধিক্।  

গীতার্থ-পঠনং নাস্তি নাধমস্তৎপরো জনঃ। 
গীতাগীতং ন যজজ্ঞানং তদ্বিদ্ধ্যাসুরসম্মতম্।
তন্মোঘং ধর্মরহিতং বেদবেদান্তগর্তিতম্।।১৮।। 

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি গীতার্থ আলোচনা করে না, তার চেয়ে অধম আর নেই। যে জ্ঞান গীতায় গীত হয় নি, সেই জ্ঞান নিষ্ফল, সেই জ্ঞান ধর্মরহিত, সেই জ্ঞান বেদ-বেদান্ত গর্হিত এবং অসুর সম্মত জ্ঞান বলে জানবে।  

তস্মাদ্ধর্মময়ী গীতা সর্বজ্ঞানপ্রযোজিকা। 
সর্বশাস্ত্ররাসভূতা বিশুদ্ধা সা বিশিষ্যতে।।১৯।। 

অনুবাদঃ অতএব গীতাই ধর্মময়ী সর্বজ্ঞান-প্রযোজিকা এবং সর্বশাস্ত্রসার -ভূতা বিশুদ্ধা বলে সর্বত্র সর্বকালে সমাদৃতা। 

যোহধীতে বিষ্ণুপর্বাহে গীতাং শ্রীহরিবাসরে
স্বপন্ জাগ্রৎ চলনতিষ্ঠন্ শত্রুভির্ন স হীয়তে।।২০।। 

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি বিষ্ণুপর্বদিনে বিশেষত শ্রীহরিবাসর তিথি একাদশীতে গীতা অধ্যয়ন করেন, তিনি নিদ্রিত বা জাগ্রত অবস্থায় গমন বা অবস্থান কালে কখনেই শত্রু দ্বারা পরাভূত হন না। 

শালগ্রামশিলায়াং বা দেবাগারে শিবালয়ে। 
তীর্থে নদ্যাং পঠেদগীতাং সৌভাগ্যং লভতে ধ্রুবম্।।২১।।

অনুবাদঃ যিনি শালগ্রামশিলার সামনে, দেবাগারে বা শিবালয়ে, তীর্থে ও নদীতটে গীতা পাঠ করেন, তিনি নিশ্চিত সৌভাগ্য লাভের অধিকারী হন। 

দেবকীনন্দনঃ কৃষ্ণো গীতাপাঠেন তুষ্যতি। 
যথা ন বেদৈর্দানেন যজ্ঞতীর্থব্রতাদিভিঃ।।২২।।

অনুবাদঃ ‍দেবকীনন্দন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতাপাঠে যে প্রকার তুষ্ট হন, বেদ অধ্যয়ন, দান, যজ্ঞ, তীর্থভ্রমণ বা ব্রত ইত্যাদি দ্বারাও সে প্রকার সন্তুষ্ট হন না।

গীতাধীতা চ যেনাপি ভক্তিভাবেন চেতসা। 
বেদশাস্ত্রপুরাণানি তেনাধীতানি সর্বশঃ।।২৩।। 

অনুবাদঃ ‍যিনি ভক্তিভাবিত চিত্তে গীতা অধ্যয়ন করেন, বেদ পুরাণাদি সমস্ত শাস্ত্রই সর্বতোভাবে তাঁর অধ্যয়ন করা হয়ে যায়।  

যোগস্থানে সিদ্ধপীঠে শিলাগ্রে সৎসভাসু চ। 
যজ্ঞে চ বিষ্ণুভক্তাগ্রে পঠন্ সিদ্ধিং পরাং লভেৎ।২৪।। 

অনুবাদঃ যোগস্থানে, সিদ্ধপীঠে, শালগ্রাম সম্মুখে, সজ্জন সভায়, যজ্ঞে বিশেষত বৈষ্ণবের কাছে গীতাপাঠ করলে পরমা সিদ্ধি লাভ হয়।  

গীতাপাঠঞ্চ শবণং যং করোতি দিনে দিনে। 
ক্রতবো বাজিমেধাদ্যাঃ কৃতান্তেন সদক্ষিণাঃ।।২৫।। 

অনুবাদঃ যিনি প্রত্যহ গীতা পাঠ ও শ্রবণ করেন তাঁর সদক্ষিণা অশ্বমেধাদি যজ্ঞ ফল স্বাভাবিকভাবেই লাভ হয়।   

যঃ শৃণোতি চ গীতার্থং কীর্তয়ত্যেব যঃ পরম্। 
শ্রাবয়েচ্চ পরার্থং বৈ স প্রযাতি পরং পদম্।।২৬।।

অনুবাদঃ যিনি যত্ন সহকারে গীতার্থ শ্রবণ-কীর্তন করেন বা অন্যকে শ্রবণ করান, তিনি পরমপদ বৈকুণ্ঠ লাভ করেন। 

গীতায়াঃ পুস্তকং শুদ্ধং যোহর্পয়ত্যেব সাদরাৎ। 
বিধিনা ভক্তিভাবেন তস্য ভার্যা প্রিয়া ভবেৎ।।২৭।।
যশঃ সৌভাগ্যমারোগ্যং লভতে নাত্র সংশয়ঃ।
দয়িতানাং প্রিয়ো ভূত্বা পরমং সুখগ্নুতে।।২৮।।

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি সাদরে ভক্তিভাবে বিধিপূর্বক বিশুদ্ধ গীতা পুস্তক কাউকে অর্পণ করে, তাঁর ভার্যা প্রিয়া হয়। এবং তিনি যশ, সৌভাগ্য, আরোগ্য লাভ করেন। এতে সন্দেহ নেই। অধিকন্তু প্রিয়জনের অতিপ্রিয় হয়ে তিনি পরম সুখ ভোগ করেন।  

অভিচারোদ্ভবং দুঃখং বরশাপাগতঞ্চ যৎ। 
নোপসর্পতি তত্রৈব যত্র গীতার্চানং গৃহে।।২৯।।
তাপত্রয়োদ্ভবা পীড়া নৈব ব্যাধির্ভবেৎ ক্বচিৎ। 
ন শাপো নৈব পাপঞ্চ দুর্গতির্নরকং ন চ।।৩০।।
বিস্ফোটকাদয়ো দেহে ন বাধ্যন্তে কদাচনঃ। 
লভেৎ কৃষ্ণপদে দাস্যং ভক্তিঞ্চাব্যভিচারিণীম্।।৩১।।

অনুবাদঃ যে গৃহে গীতা অর্চিত হয়ে থাকে সেখানে কখনও অভিশাপ বা অভিচার উদ্ভূত দুঃখ প্রবেশ করতে পারে না। কখনও সেখানে ত্রিতাপ ক্লেশ, শাপ, পাপ, দুর্গতি বা নরকভয় থাকে না। কখনও বিস্ফোটকাদি পীড়া দেহে জন্মে না। সেখানকার জনগণ শ্রীকৃষ্ণপাদপদ্মে অব্যাভিচারিণী দাস্য-ভক্তি লাভ করেন।  

জায়তে সততং সখ্যং সর্বজীবগণৈঃ সহ।
প্রারব্ধং ভুঞ্জতো বাপি গীতাভ্যাসরতস্য চ। 
স মুক্তঃ স সুখী লোকে কর্মণা নোপলিপ্যতে।।৩২।।

অনুবাদঃ গীতা অনুশীলন রত ব্যক্তি প্রারব্ধ ফল ভোগ করলেও সমস্ত জীবের সঙ্গে তাঁর সখ্যভাব উৎপন্ন হয়। সে ব্যক্তি মুক্ত ও সুখী। এ জগতে কর্ম করেও তিনি কর্মে লিপ্ত হন না। 

মহাপাপাতিপাপানি গীতাধ্যায়ী করোতি চেৎ। 
ন কিঞ্চিৎ স্পৃশ্যতে তস্য নলিনীদলমম্ভসা।।৩৩।।

অনুবাদঃ গীতা অধ্যয়নকারী ব্যক্তি হঠাৎ মহাপাপ, অতিপাপ করে ফেললেও সেই সব পাপ তাঁকে পদ্ধপত্রজলের মতো বিন্দুমাত্র স্পর্শ করতে পারে না। 

অনাচারোদ্ভবং পাপমবাচ্যাদি কৃতঞ্চ যৎ। 
অভক্ষ্যভক্ষজং দোষমস্পৃশ্যস্পর্শজং তথা।।৩৪।। 
জ্ঞানাজ্ঞানকৃতং নিত্যমিন্দ্রিয়ৈর্জেনিতঞ্চ যৎ। 
তৎ সর্বং নাশায়াতি গীতাপাঠেন তৎক্ষণাৎ।।৩৫।। 

অনুবাদঃ অনাচার-উদ্ভুত পাপ বা অবাচ্য-কথন পাপ, অভক্ষ্য-ভক্ষণ দোষ এবং জ্ঞান-অজ্ঞানকৃত দৈনন্দিন ইন্দ্রিয়জ সমস্ত প্রকার পাপই গীতাপাঠে সদ্য বিনষ্ট হয়। 

সর্বত্র প্রতিভোক্তণ চ প্রতিগৃহ্য চ সর্বশঃ। 
গীতাপাঠং প্রকৃর্বাণো ন লিপ্যতে কদাচন।।৩৬।। 

অনুবাদঃ সর্বত্র ভোজন বা সর্বতোভাবে প্রতিগ্রহণ করলেও প্রকৃষ্টরূপে গীতাপাঠকারী সর্বদা তাতে নির্লিপ্ত থাকেন। 

রত্নপূর্ণাং মহীং সর্বাং প্রতিগৃহ্যাবিধানতঃ। 
গীতাপাঠেন চৈকেন শুদ্ধস্ফটিকবৎ সদা।।৩৭।। 

অনুবাদঃ এমন কি অবিধিপূর্বক রত্নপূর্ণা সসাগরা ধরিত্রী প্রতিগ্রহকারীও একবার গীতাপাঠেই শুদ্ধ স্ফটিকের মতো নির্মল হয়। 

যস্যান্তঃ করণং নিত্যং গীতায়াং রমতে সদা। 
স সাগ্নিকঃ সদা জাপী ক্রিয়াবান্ স চ পন্ডিতঃ।।৩৮।।
দর্শনীয়ঃ স ধনবান্ স যোগী জ্ঞানবান অপি।
স এব যাজ্ঞিকো যাজী সর্ববেদার্থদর্শকঃ।।৩৯।। 

অনুবাদঃ যাঁর অন্তকরণ সদা সর্বদা গীতাতেই নিবিষ্ট, তিনিই প্রকৃষ্ট সাগ্নিক, সর্বদা জপী, ক্রিয়াবান, এবং তিনিই প্রকৃত পন্ডিত। তিনিই দর্শনীয়, তিনিই ধনবান, তিনিই যোগী বা প্রকৃত জ্ঞানবান এবং তিনিই যাজ্ঞিক, যাজনকারী এবং তিনিই সর্ব বেদার্থ দর্শক।  

গীতায়াঃ পুস্তকং যত্র নিত্যপাঠশ্চ বর্ততে। 
তত্র সর্বাণি তীর্থানি প্রয়াগাদীনি ভূতলে।।৪০।। 

অনুবাদঃ যেখানে নিত্য গীতা-পুস্তক অবস্থান করে, এ জগতে সেখানে প্রয়াগাদি সর্ব তীর্থ সর্বদা অবস্থান করেন।  

নিবসন্তি সদা দেহে দেহশেষেহপি সর্বদা। 
সর্বে দেবাশ্চ ঋষয়ো যোগিনো দেহরক্ষকাঃ।।৪১।।

অনুবাদঃ সর্বদা গীতা অধ্যয়নকারীর দেহে, বা দেহত্যাগের পরও দেহরক্ষক রূপে দেবতা, ঋষি বা যোগীরা অবস্থান করেন। 

গোপালো বালকৃষ্ণোহপি নারদধ্রুবপার্ষদৈঃ। 
সহায়ো জায়তে শীঘ্রং যত্র গীতা প্রবর্ততে।।৪২।।

অনুবাদঃ যেখানে গীতা বর্তমান থাকেন, সেখানে নারদ, ধ্রুব আদি পার্ষদবৃন্দসহ স্বয়ং বালগোপাল শ্রীকৃষ্ণ সহায়-রূপে আবির্ভূত হন।  

যত্র গীতা বিচারশ্চ পঠনং পাঠনং তথা। 
মোদতে তত্র শ্রীকৃষ্ণো ভগবান্ রাধয়া সহ।।৪৩।।

অনুবাদঃ যে স্থানে গীতা শাস্ত্রের বিচার এবং পঠন-পাঠন হয়, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সে স্থানে শ্রীরাধিকার সঙ্গে পরমানন্দে বিরাজ করেন।  

ভগবান উবাচ গীতা মে হৃদয়ং পার্থ গীতা মে সারমুত্তমম্। 
গীতা মে জ্ঞানমত্যুগ্রং গীতা মে জ্ঞানমব্যয়ম্।।৪৪।।

অনুবাদঃ শ্রীভগবান বললেন,- হে পার্থ! গীতা আমার হৃদয়, গীতা আমার উত্তম সার-স্বরূপ, গীতা আমার অত্যুগ্র জ্ঞান এবং গীতাই আমার অব্যয়-জ্ঞান। 

গীতা মে চোত্তমং স্থানং গীতা মে পরমং পদম্। 
গীতা মে পরমং গুহ্যং গীতা মে পরমো গুরু।।৪৫।।

অনুবাদঃ গীতা আমার উত্তম স্থান, গীতা আমার পরমপদ, গীতা আমার পরম গোপনীয় বস্তু, বিশেষ কি গীতাই আমার পরম গুরু। 

গীতাশ্রয়েহহং তিষ্ঠামি গীতা মে পরমং গৃহং। 
গীতাজ্ঞানং সমাশ্রিত্য ত্রিলোকীং পালয়াম্যহম্।।৪৬।।

অনুবাদঃ গীতার আশ্রয়েই আমি বর্তমান আছি, গীতাই আমার পরম গৃহ। এই গীতাজ্ঞানকে সম্যকভাবে আশ্রয় করেই আমি ত্রিলোক পালন করে থাকি।

গীতা মে পরমা বিদ্যা ব্রহ্মরূপা ন সংশয়ঃ। 
অর্ধমাত্রাহরা নিত্যমনির্বাচ্যপদাত্মিকা।।৪৭।। 

অনুবাদঃ অর্ধমাত্রা-স্বরূপা নিত্য অনির্বাচ্যপদাত্মিকা গীতাই আমার ব্রহ্মরূপা পরাবিদ্যা- তা নিঃসংশয়ে জানবে। 

গীতা নমানি বক্ষ্যামি গুহ্যানি শৃণু পান্ডব। 
কীর্তনাৎ সর্বপাপানি বিলয়ং যান্তি তৎক্ষণাৎ।।৪৮।।

অনুবাদঃ হে পান্ডব! গীতার যে নামসমূহ কীর্তনের দ্বারা তৎক্ষণাৎ সমস্ত পাপ ধ্বংস হয়, সেই গোপনীয় নাম সকল বলছি, শ্রবণ কর।  

গঙ্গা গীতা চ সাবিত্রী সীতা সত্যা পতিব্রতা। 
ব্রহ্মাবলিব্র্রহ্মবিদ্যা ত্রিসন্ধ্যা মুক্তিগেহিনী।।৪৯।।
অর্ধমাত্রা চিদা নন্দা ভবঘ্নী ভ্রান্তিনাশিনী। 
বেদত্রয়ী পরানন্দা তত্ত্বার্থজ্ঞানমঞ্জুরী।।৫০।।
ইত্যেতানি জপেন্নিত্যিং নরো নিশ্চলমানসঃ
জ্ঞানসিদ্ধিং লভেন্নিত্যং তথান্তে পরমং পদম্।।৫১।। 

অনুবাদঃ গঙ্গা, গীতা, সাবিত্রী, সীতা, সত্যা, পতিব্রতা, ব্রহ্মাবলী, ব্রহ্মবিদ্যা, ত্রিসন্ধ্যা, মুক্তগেহিনী, অর্ধমাত্রা, চিদানন্দা, ভবঘ্নী, ভ্রান্তি-নাশিনী, বেদত্রয়ী, পরানন্দা, তত্ত্বার্থজ্ঞানমঞ্জুরী।- যে মানুষ অচঞ্চলচিত্তে এই গুপ্ত নাম সমূহ নিত্য জপ করেন, তিনি দিব্যজ্ঞান- সিদ্ধি লাভ করেন এবং অন্তে পরমপদ প্রাপ্ত হন।  

পাঠেহসমর্থঃ সম্পূর্ণে তদর্ধংপাঠমাচরেৎ। 
তদা গোদানজং পুণ্যং লভতে নাত্র সংশয়ঃ।।৫২।। 

অনুবাদঃ সম্পূর্ণ গীতাপাঠে অসমর্থ হলে তার অর্ধাংশ পাঠ করবে। তাতে নিঃসন্দেহে গো-দান জনিত পুণ্য লাভ হবে।  

ত্রিভাগং পঠমানস্তু সোমযাগফলং লভেৎ। 
ষড়ংশং জপমানস্তু গঙ্গাস্নানফলং লভেৎ।।৫৩।। 

অনুবাদঃ এক-তৃতীয়াংশ গীতা পাঠে সোম-যজ্ঞের ফল এবং এক-ষষ্ঠাংশ জপে গঙ্গাস্নান ফল লাভ করবে। 

তথাধ্যায়দ্বয়ং নিত্যং পঠমানো নিরন্তরম্। 
ইন্দ্রলোকমবাপ্নোতি কল্পমেকং বসেদধ্রুবম্।।৫৪।।

অনুবাদঃ যিনি নিষ্ঠাসহকারে নিত্য গীতার দুটি অধ্যায় পাঠ করেন, তিনি নিঃসন্দেহে ইন্দ্রলোক লাভ করে সেখানে কল্পকাল বাস করেন।

একমধ্যায়কং নিত্যং পঠতে ভক্তিসংযুতঃ। 
রুদ্রলোকমবাপ্নোতি গণো ভূত্বা বসেচ্চিরম্।।৫৫।।

অনুবাদঃ ‍যিনি ভক্তি সহকারে দৈনিক একটি অধ্যায় পাঠ করেন, তিনি চিরকালের জন্য রুদ্রগণে পরিগণিত হয়ে রুদ্রলোক লাভ করেন। 

অধ্যায়ার্থঞ্চ পাদং বা নিত্যং যঃ পঠতে জনঃ। 
প্রাপ্নোতি রবিলোকং স মন্বন্তরসমাঃ শতম্।।৫৬।।

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি অর্ধ-অধ্যায় বা এক-চতুর্থাংশ নিত্য পাঠ করেন, তিনি শতমন্বন্তর সমকাল রবিলোক প্রাপ্ত হন।

গীতায়াঃ শ্লোকদশকং সপ্তপঞ্চচতুষ্টয়ম্।
ত্রিদ্ব্যেকমর্ধমথ বা শ্লোকানাং যঃ পঠেন্নরঃ। 
চন্দ্রলোকমবাপ্নোতি বর্ষাণামযুতং তথা।।৫৭।। 

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি এই গীতার দশটি বা সাতটি বা পাঁচটি বা তিনটি বা দুটি বা একটি বা অর্ধশ্লোকও শ্রদ্ধাসহকারে পাঠ করেন, তিনি চন্দ্রলোক প্রাপ্ত হয়ে সেখানে অযুতবর্ষকাল বাস করেন। 

গীতার্ধমেকপাদঞ্চ শ্লোকমধ্যায়মেব চ। 
স্বরংস্ত্যত্ত্বণ জনো দেহং প্রয়াতি পরমং পদম্।। ৫৮।। 

অনুবাদঃ ‍যিনি গীতার অর্ধভাগ, একপাদ, বা একটি অধ্যায় বা শ্লোকও স্মরণ করতে করতে দেহত্যাগ করেন, তিনি পরমপদ লাভ করেন।  

গীতার্থমপি পাঠং বা শৃণুয়াদন্তকালতঃ। 
মহাপাতকযুক্তোহপি মুক্তিভাগী ভবেজ্জনঃ।। ৫৯।। 

অনুবাদঃ মৃত্যুকালে গীতার্থ পাঠ বা শ্রবণ করে মহাপাতকযুক্ত ব্যক্তিও মুক্তিভাগী হয়।  

গীতাপুস্তকসংযুক্তঃ প্রাণংত্যক্ত্বা প্রয়াতি যঃ। 
স বৈকুণ্ঠমবাপ্নোতি বিষ্ণুনা সহ মোদতে।।৬০।।

অনুবাদঃ ‍যিনি গীতাপুস্তক-সংযুক্ত হয়ে দেহত্যাগ করেন, তিনি বৈকুণ্ঠ লাভ করে ভগবান বিষ্ণুর সঙ্গে আনন্দে বিরাজ করেন। 

গীতাধ্যায়সমাযুক্তো মৃতো মানুষতাং ব্রজেৎ। 
গীতাভ্যাসং পুনঃ কৃত্বা লভতে মুক্তিমুত্তমাম্।।৬১।। 

অনুবাদঃ গীতার একটি অধ্যায় সমাযুক্ত হয়ে মৃত্যু হলে, পুনরায় সে মনুষ্যজন্ম লাভ করে গীতাভ্যাসের দ্বারা উত্তমা-মুক্তি লাভ করেন।  

গীতেত্যুচ্চারসংযুক্তো ম্রিয়মাণো গতিং লভেৎ।।৬২।।

অনুবাদঃ ‘গীতা’ এই শব্দ উচ্চারণের সঙ্গে মৃত্যু হলেও সদগতি লাভ হয়।  

যদ্ যৎ কর্ম চ সর্বত্র গীতাপাঠপ্রকীর্তিমৎ। 
তত্তৎ কর্ম চ নির্দোষং ভূত্বা পূর্ণত্বমাপ্নুয়াৎ।।৬৩।।

অনুবাদঃ যে সমস্ত কর্ম গীতাপাঠ সহকারে অনুষ্ঠিত হয়, সে সমস্তই নির্দোষ হয়ে পূর্ণত্ব লাভ করে। 

পিতৃনুদ্দিশ্য যঃ শ্রাদ্ধে গীতাপাঠং করোতি হি। 
সন্তুষ্টাঃ পিতরস্তস্য নিরয়াদ্ যান্তি স্বর্গতিম্।।৬৪।।

অনুবাদঃ পিতৃগণের উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি শ্রাদ্ধে গীতাপাঠ করেন, তাঁর পিতৃগণ সন্তুষ্ট হন ও নরক থেকে স্বর্গে গমন করেন। 

গীতাপাঠেন সন্তষ্টাঃ পিতরঃ শ্রাদ্ধতর্পিতাঃ। 
পিতৃলোকং প্রয়ান্ত্যেব পুত্রাশীর্বাদতৎপরাঃ।।৬৫।।

অনুবাদঃ শ্রাদ্ধকালে গীতাপাঠ দ্বারা শ্রাদ্ধতর্পিত পিতৃগণ, সেই পুত্রকে আশীর্বাদ করতে করতে পিতৃলোক গমন করেন। 

গীতাপুস্তকদানঞ্চ ধেনুপুচ্ছসমন্বিতম্।
কৃত্বা চ তদ্দিনে সম্যক্ কৃতার্থো জায়তে জনঃ।।৬৬।। 

অনুবাদঃ চামর সমন্বিত গীতাগ্রন্থ দান করলে সেই দিনেই মানুষ সম্যকভাবে কৃতার্থতা লাভ করে। 

পুস্তকং হেমসংযুক্তং  গীতায়াঃ প্রকরোতি যঃ। 
দত্ত্বা বিপ্রায় বিদুষে জায়তে ন পুনর্ভবম্।।৬৭।।

অনুবাদঃ পন্ডিত ব্রাহ্মণকে যিনি সুবর্ণ সংযুক্ত গীতা দান করেন, তাঁর আর জন্ম হয় না।

শতপুস্তকদানঞ্চ গীতায়াঃ প্রকরোতি যঃ। 
স যাতি ব্রহ্মসদনং পুনরাবৃত্তিদুর্লভম্।।৬৮।।

অনুবাদঃ ‍যিনি একশতখানি গীতা দান করেন, তিনি পুনরাবৃত্তিদুর্লভ ব্রহ্মধামে গমন করেন।

গীতাদানপ্রভাবেন সপ্তকল্পমিতাঃ সমাঃ। 
বিষ্ণুলোকমবাপ্যন্তে বিষ্ণুনা সহ মোদতে।।৬৯।। 

অনুবাদঃ গীতাদান-প্রভাবে সপ্ত-কল্পকাল যাবৎ বিষ্ণুলোকে স্থান লাভ করে জীব পরমানন্দে বিষ্ণুর সঙ্গে বাস করেন।  

সম্যক্ শ্রুত্বা চ গীতার্থং পুস্তকং যঃ প্রদাপয়েৎ। 
তস্মৈ প্রীতং শ্রীভগবান্ দদাতি মানসেস্পিতম।।৭০।।

অনুবাদঃ ‍যিনি গীতার্থ সম্যকভাবে শ্রবণ করে সেই পুস্তক ব্রাহ্মণকে দান করেন, শ্রীভগবান প্রীত হয়ে তাঁর মনোঅভীষ্ট পূরন করেন।  

ন শৃণোতি ন পঠতি গীতামমৃতরূপিণীম্। হ
স্তাত্ত্যক্ত্বামৃতং প্রাপ্তং স নরো বিষমশ্নুতে।।৭১।।

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি অমৃতরূপিণী গীতা পাঠ বা শ্রবণ না করে, সে হস্তস্থিত অমৃত পরিত্যাগ করে বিষ ভক্ষণ করে।  

জনঃ সংসারদুঃখার্তো গীতাজ্ঞানং সমালভেৎ। 
পীত্বা গীতামৃতং লোকে লব্ধা ভক্তিং সুখী ভবেৎ।।৭২।। 

অনুবাদঃ মনুষ্য জগতে সংসার দুঃখার্তজন গীতাজ্ঞান লাভ করে ও গীতামৃত পান করে ভগবদ্-ভক্তির আশ্রয় লাভ করে ও সুখী হয়।  

গীতামাশ্রিত্য বহবো ভূভূজো জনকাদয়ঃ।।
নির্ধূতকল্মষা লোকে গতান্তে পরমং পদম্।।৭৩।। 

অনুবাদঃ জনকাদি বহু রাজর্ষি গীতা-জ্ঞান আশ্রয়েই নিষ্পাপ থেকে পরমপদ লাভ করেছেন। 

গীতাসু ন বিশেষোহস্তি জনেষূচ্চাবচেষু চ। 
জ্ঞানেস্বেব সমগ্রেষু সমা ব্রহ্মস্বরূপিণী।।৭৪।।

অনুবাদঃ গীতাপাঠে উচ্চ-নীচ কুলের বিচার নাই। শ্রদ্ধালু মাত্রেই গীতাপাঠের অধিকারী। যেহেতু সমগ্র জ্ঞানের মধ্যে গীতাই ব্রহ্মস্বরূপিণী।  

যোহভিমানেন গর্বেণ গীতানিন্দাং করোতি চ। 
স যাতি নরকং ঘোরং যাবদাহূতসংপ্লবম্।।৭৫।। 

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি অভিমান বা গর্বভরে গীতার নিন্দা করে, সে মহাপ্রলয় কাল পর্যন্ত ঘোর নরকে বাস করে।  

অহঙ্কারেণ মূঢ়াত্মা গীতার্থং নৈব মন্যতে। 
কুম্ভীপাকেষু পচ্যেত যাবৎ কল্পক্ষয়ো ভবেৎ।।৭৬।। 

অনুবাদঃ যে মূঢ়াত্মা অহঙ্কারে স্ফীত হয়ে গীতার্থ অবমাননা করে, সে কল্পক্ষয় কালপর্যন্ত কুম্ভীপাক নরকে পচতে থাকে।  

গীতার্থং বাচ্যমানং যো ন শৃণোতি সমাসতঃ। 
স শুকরভাবাং যোনিমনেকামধিগচ্ছতি।।৭৭।। 

অনুবাদঃ সম্যক রূপে গীতার অর্থ কীর্তন করলেও যে ব্যাক্তি তা শ্রবণ করে না, সে পুনঃ পুনঃ শুকরযোনি প্রাপ্ত হয়।   

চৌর্যং কৃত্বা চ গীতায়াঃ পুস্তকং যঃ সমানয়েৎ। 
ন তস্য সফলং কিঞ্চিৎ পঠনঞ্চ বৃথা ভবেৎ।।৭৮।।

অনুবাদঃ গীতা-পুস্তক যে ব্যক্তি চুরি করে আনে, তার কিছুই সফল হয় না, এবং পাঠও বৃথা হয়ে যায়।  

যঃ শ্রত্বা নৈব গীতাঞ্চ মোদতে পরমার্থতঃ। 
নৈব তস্য ফলং লোকে প্রমত্তস্য যথা শ্রমঃ।।৭৯।।

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি গীতা শ্রবণ করেও পরমার্থত আনন্দ পায় না, পাগলের পরিশ্রমের মতো সে কোন ফলই পায় না।  

গীতাং শ্রুত্বা হিরণ্যঞ্চ ভোজ্যং পট্রাম্বারং তথা। 
নিবেদয়েৎ প্রদানার্থং প্রীতয়ে পরমাত্মনঃ।।৮০।।

অনুবাদঃ ভগবানের প্রীতির জন্য গীতা শ্রবণ করে সুবর্ণ, ভোজ্য, পট্রবস্ত্র বৈষ্ণব-ব্রাহ্মণকে নিবেদন করা কর্তব্য।  

বাচকং পূজয়েদ্ভক্ত্যা দ্রব্যবস্ত্রাদ্যুপস্করৈঃ। 
অনেকৈর্বহুধা প্রীত্যা তুষ্যতাং ভগবান্ হরি।।৮১।।

অনুবাদঃ ভগবান শ্রীহরির প্রীতির জন্য গীতা পাঠককে বহুপ্রকার দ্রব্য বস্ত্রাদি উপচার-দ্বারা ভক্তিপূর্বক পূজা করা উচিত।  

সূত উবাচমাহাত্ম্যমেতদগীতায়াঃ কৃষ্ণপ্রোক্তং পুরাতনম্। 
গীতান্তে পঠতে যন্তু যথোক্তফলভাগভবেৎ।।৮২।।

অনুবাদঃ সূত গোস্বামী বললেন- ভগবান শ্রীকৃষ্ণ-কথিত এই সনাতন গীতামাহাত্ম্য, ‍যিনি গীতাপাঠান্তে পাঠ করেন, তিনি যথোক্ত ফলভাগী হন।  

গীতায়াঃ পঠনং কৃত্বা মাহাত্ব্যং নৈব যঃ পঠেৎ। 
বৃথা পাঠফলং তস্য শ্রম এব উদাহৃতঃ।।৮৩।।

অনুবাদঃ গীতাপাঠ করে ‍যিনি মাহাত্ম্য পাঠ না করেন, তাঁর পাঠফল বৃথা, পশুশ্রম হয়।  

এতন্মাহাত্ম্যসংযুক্তং গীতাপাঠং করোতি যঃ। 
শ্রদ্ধয়া যঃ শৃণোত্যেব পরমাং গতিমাপ্নুয়াৎ।।৮৪।।

অনুবাদঃ মাহাত্ম্য-সংযুক্ত গীতা ‍যিনি শ্রদ্ধাপূর্বক পাঠ বা শ্রবণ করেন, তিনি পরমাগতি প্রাপ্ত হন।  

শ্রুত্বা গীতামর্থযুক্তাং মাহাত্ম্যং যঃ শৃণোতি চ। 
তস্য পুণ্যফলং লোকে ভবেৎ সর্বসুখাবহম্।।৮৫।।

অনুবাদঃ যে ব্যক্তি শ্রদ্ধাপূর্বক অর্থযুক্ত গীতা শ্রবণ করে গীতা-মাহাত্ম্য শ্রবণ করেন, ইহলোকে তাঁর পুণ্যফল সর্বসুখের কারণ হয়ে থাকে।  

–ইতি গীতা-মাহাত্ম্য সমাপ্ত।

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে 

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার সকল অধ্যায় সমূহ

 *মঙ্গলাচরণ

 *গীতা-মাহাত্ম্য

১. গীতা – প্রথম অধ্যায় – অর্জুন বিষাদ-যোগ

২. গীতা – দ্বিতীয় অধ্যায় – সাংখ্য-যোগ

৩. গীতা – তৃতীয় অধ্যায় – কর্মযোগ

৪. গীতা – চতুর্থ অধ্যায় – জ্ঞান যোগ

৫. গীতা – পঞ্চম অধ্যায় – কর্মসন্ন্যাস-যোগ

৬. গীতা – ষষ্ঠ অধ্যায় – ধ্যানযোগ

৭. গীতা – সপ্তম অধ্যায় – বিজ্ঞান-যোগ

৮. গীতা – অষ্টম অধ্যায় – অক্ষরব্রহ্ম-যোগ

৯. গীতা – নবম-অধ্যায় – রাজগুহ্য-যোগ

১০. গীতা – দশম অধ্যায় – বিভূতি-যোগ

১১. গীতা – একাদশ অধ্যায় – বিশ্বরূপ-দর্শন-যোগ

১২. গীতা – দ্বাদশ অধ্যায় – ভক্তিযোগ

১৩. গীতা – ত্রয়োদশ অধ্যায় – প্রকৃতি-পুরুষ-বিবেকযোগ

 ১৪. গীতা – চতুর্দশ অধ্যায় – গুণত্রয়-বিভাগ-যোগ

১৫. গীতা – পঞ্চদশ অধ্যায় – পুরুষোত্তম-যোগ

১৬. গীতা – ষোড়শ অধ্যায় – দৈবাসুর-সম্পদ-বিভাগযোগ

১৭. গীতা – সপ্তদশ অধ্যায় – শ্রদ্ধাত্রয়-বিভাগ-যোগ

১৮. গীতা – অষ্টাদশ অধ্যায় – মোক্ষযোগ

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment