মৌসুমি বায়ুর সাথে জেট বায়ুর সম্পর্ক কীরূপ? অথবা, মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে জেট বায়ুর সম্পর্ক আলােচনা। Class 10 | Geography | 5 Marks
উত্তর: মৌসুমি বায়ুর সাথে জেট বায়ুর সম্পর্ক
আবহবিদেরা মনে করেন মৌসুমি বায়ুর সাথে জেট বায়ুর একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এজন্য ভারতের মৌসুমি জলবায়ুর ওপর ক্রান্তীয় পুবালি জেট বায়ু এবং উপক্ৰান্তীয় পুবালি জেট বায়ুর প্রভাব খুব ভালােভাবেই পড়ে।
1. বর্ষাকাল : ক্রান্তীয় পুবালি জেট বায়ু: [i] বায়ুর প্রবাহপথ: ক্রান্তীয় পুবালি জেট বায়ু জুন মাসে ভারতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ওই সময় এই বায়ুস্রোত চিনের দক্ষিণ উপকূল থেকে আরম্ভ করে (12° থেকে 15° উত্তর অক্ষাংশ বরাবর) থাইল্যান্ড ও ভারতীয় উপদ্বীপ পেরিয়ে আফ্রিকার পূর্ব দিকে সুদান হয়ে প্রায় সাহারায় গিয়ে শেষ হয়। [ii] বায়ুর গতিবেগ: পূর্বে মালয়েশিয়া থেকে পশ্চিমে ভারত পর্যন্ত ক্রান্তীয় পুবালি জেট বায়ুর গতিবেগ খুব বেশি (ঘণ্টায় 100-200 কিমি) থাকে এবং পশ্চিমে তা ক্রমশ হ্রাস পায়। [iv] মৌসুমি বায়ুর ওপর প্রভাব: প্রকৃতপক্ষে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সঠিক সময়ে আগমন ও সক্রিয়তা বহুলাংশে এই ক্রান্তীয় পুবালি জেটের অবস্থানের ওপর নির্ভরশীল। যদি এই ক্রান্তীয় পুবালি জেট বায়ু তার স্বাভাবিক অবস্থান থেকে বেশি উত্তরে সরে যায়, তাহলে দক্ষিণ-পশ্চিম। মৌসুমি বায়ুপ্রবাহে ছেদ (Break of Monsoon) ঘটে। অর্থাৎ ভারতে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তার ফলে বৃষ্টিহীন ও খরা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া, বর্ষাকালে ভারতের ওপর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি এবং সেগুলির তীব্রতার হ্রাসবৃদ্ধি, এই
2. শীতকাল : i) উপক্ৰান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়: উপক্ৰান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ু অক্টোবর-নভেম্বর মাস নাগাদ অর্থাৎ, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ফিরে যাবার সময় থেকেই ভারতের ওপর আবির্ভূত হয় এবং প্রায় মে মাস পর্যন্ত এই দেশের ওপর দিয়েই প্রবাহিত হয়। এই বায়ুস্রোতটি শীতকালে যতই দক্ষিণে সরে আসে, ভারতে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা তথা শীতের তীব্রতা ততই বাড়ে। ফেব্রুয়ারি মাসে এটি সর্বাধিক দক্ষিণে আসে।
এবং তারপর ধীরে ধীরে উত্তরে সরে গিয়ে মে মাসে অন্তর্হিত হয়।। শীতকালে ভারতের ওপর দিয়ে পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত হওয়ার সময় এই বায়ুস্রোতটি হিমালয়ে বাধা পেয়ে দুটি শাখায় ভাগ হয়। ii) উপক্ৰান্তীয় জেট বায়ুর দুই শাখা: একটি শাখা হিমালয়ের উত্তর এবং অপরটি দক্ষিণ দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে শেষে আরও পূর্বে গিয়ে মিলিত হয়। হিমালয়ের দক্ষিণের শাখাটি যত শক্তিশালী হয়, ততই উত্তর ভারতে শীত তীব্র হয়, শৈত্যপ্রবাহ দেখা দেয়। প্রকৃতপক্ষে, মৌসুমি বায়ুর সাথে জেট বায়ুর ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকার জন্যই | ভারতের আবহাওয়া ও জলবায়ুতে জেট বায়ুর প্রভাব সীমাহীন। ভারতে মৌসুমি বায়ুর স্থায়িত্ব ও তীব্রতা, বর্ষাকালীন বৃষ্টিপাত, ঋতুপরিবর্তন প্রভৃতি এই জেট বায়ুর অবস্থান ও গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।
Hi sir.your writing is best of geography.