অসহযােগ আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করাে।
অথবা, অহিংস অসহযােগ আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা কী ছিল? 4 Marks/Class 10
উত্তর:-
ভূমিকা : ভারতের জাতীয় আন্দোলনের ইতিহাসে অসহযােগ আন্দোলনের পরিধি ছিল বড়াে এবং একারণেই এই আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণও বৃদ্ধি পায়।
নারীদের অংশগ্রহণ : অসহযােগ আন্দোলনে নারীদের। অংশগ্রহণের বিভিন্ন দিকগুলি হল—
১. বয়কট ও স্বদেশি : মহাত্মা গান্ধি প্রাথমিকভাবে নারীদের সীমিত কর্মসূচিতে অর্থাৎ বিদেশি দ্রব্য বয়কট ও স্বদেশি দ্রব্য গ্রহণের জন্য যােগ দিতে আহবান জানালে তার এই আহ্বানে ভারতের হাজার হাজার নারী যােগদান করে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নারীরা পিকেটিং-এ অংশগ্রহণ করেন। এ প্রসঙ্গে সরােজিনী নাইডু, কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের নাম উল্লেখ্য।
২. বিক্ষোভ কর্মসূচি : ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর-এ ‘প্রিন্স অব ওয়েলস’ বা ইংল্যান্ডের যুবরাজ ভারত সফরে এলে বােম্বাই ও কলকাতা শহরে সৃষ্ট নারীবিক্ষোভে কংগ্রেস নেতা চিত্তরঞ্জন দাশের স্ত্রী বাসন্তী দেবী ও তার বােন উর্মিলা দেবী প্রকাশ্য রাজপথে যুবরাজ-বিরােধী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করায় তাদের জেলবন্দি করা হয়।
৩. গঠনমূলক কর্মসুচি : শহরের বেশ কয়েক জন নেত্রী গ্রামে গিয়ে অসহযােগ আন্দোলনকে সফল করার জন্য প্রচার চালান এবং বিভিন্ন গঠনমূলক কর্মসূচি, যেমন—চরকায় সুতাে কাটা ও কাপড় বােনার জন্য গ্রামের মেয়েদের উৎসাহিত করেন।
৪. নারী সংগঠন : অসহযােগ আন্দোলনের আগেই সরােজিনী নাইডুর নেতৃত্বে ভারতীয় মহিলা সমিতি’ গড়ে ওঠে এবং অসহযােগ আন্দোলনের সময় কলকাতায় কর্মমন্দির’, ‘নারী-সত্যাগ্রহ সমিতির মাধ্যমে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের নারীরা সভাসমিতি, পিকেটিং-এ অংশগ্রহণ করেন।
উপসংহার : অসহযােগ আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ ছিল সীমিত। বিশেষত, এই আন্দোলনে মুসলমান নারীদের যােগদান ছিল নগণ্য। অসহযােগ আন্দোলনের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের মধ্যে গঠনমূলক কাজের প্রসার ঘটে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।