আইন অমান্য আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণির ভূমিকা কীরূপ ছিল? 4 Marks/Class 10
উত্তর:-
ভূমিকা : অসহযােগ আন্দোলনের সময় শ্রমিক শ্রেণি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিলেও আইন অমান্য আন্দোলনে বিশেষ স্থান ও সময় ছাড়া তারা তেমন উৎসাহ দেখায়নি।
শ্রমিকবিমুখতার কারণ : আইন অমান্য আন্দোলনে শ্রমিকদের যােগ না দেওয়ার কারণগুলি হল— (১) আইন অমান্য আন্দোলনের প্রাক্কালে কমিউনিস্ট পরিচালিত গিরনি কামগার শ্রমিকদের ধর্মঘটসহ ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের শ্রমিক ধর্মঘটে বিফলতা-জনিত হতাশা; (২) ছাঁটাইয়ের ফলে শ্রমিকরা শক্তিহীন হয়ে পড়া, (৩) আন্দোলনে যােগ দেওয়ার ব্যাপারে কমিউনিস্ট পাটি কর্তৃক কোনাে ইতিবাচক মনােভাব না দেখানাে।
শ্রমিকদের ভূমিকা : কমিউনিস্ট পার্টির নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শ্রমিকরা আইন অমান্য আন্দোলন সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে উদাসীন থাকতে পারেনি, যেমন—
১l মহারাষ্ট্র : মহারাষ্ট্রের শােলাপুরে শ্রমিক হাঙ্গামা প্রমাণ করে যে, শ্রমিকরা পূর্ণস্বরাজের দাবির মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেছে।
২l বােম্বাই বন্দর : আইন অমান্য আন্দোলন চলাকালীন সময়ে বােম্বাই বন্দরে শ্রমিক আন্দোলনের ফলে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের বিদেশি পণ্য বাজারে আটকে পড়ে এবং বােম্বাই-এ ব্রিটিশ পরিচালিত অনেক সুতােকল বন্ধ হয়ে যায়।
৩l রেলপথ সত্যাগ্রহ : আইন অমান্য আন্দোলন শুরুর দিন, অর্থাৎ ৬ এপ্রিল ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে বােম্বাই-এ জি আই পি রেলওয়ে মেনস্ ইউনিয়নের শ্রমিকরা সত্যাগ্রহ শুরু করে।
৪l অন্যান্য স্থানে : এই সময়ে করাচির বন্দর শ্রমিকরা, কলকাতার পরিবহণ ও কারখানার শ্রমিকরা এবং মাদ্রাজের শিল্পশ্রমিকরা ব্রিটিশ-বিরােধী ধর্মঘটে অংশ নেয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কমিউনিস্টরা জাতীয় আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভারতের সর্বত্র শ্রমিক আন্দোলন সংগঠিত না হলেও কোথাও কোথাও শ্রমিকরা আইন অমান্য আন্দোলনের পূর্ণস্বরাজের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।