বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলন কীভাবে বিকাশ লাভ করে? অথবা, বাংলার নমঃশূদ্র আন্দোলনের ওপর একটি টীকা লেখাে। 4 Marks/Class 10
উত্তর:-
ভূমিকা : উনিশ শতকে ভারতে দলিত সম্প্রদায় যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার অর্জনের চেষ্টা শুরু করেছিল, সেগুলির মধ্যে বাংলার নমঃশূদ্র বা চণ্ডাল বা মতুয়া আন্দোলন ছিল উল্লেখযােগ্য।
আন্দোলনের উদ্ভব : পূর্ববাংলার খুলনা, যশােহর, ফরিদপুর ও বরিশালের নমঃশুদ্র কৃষিজীবীদের এই আন্দোলন গড়ে উঠেছিল ১৮৭০-র দশকে এবং ভারতের স্বাধীনতার পরেও তা চলেছিল।
১. সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন : এঁরা এঁদের সামাজিক অবস্থানের উন্নতির জন্য আন্দোলন করেন। মূলত, শিক্ষিত নমঃশূদ্রদের মধ্যেই এই আন্দোলনের প্রবণতা দেখা যায়।
২. মনুস্মৃতিকে অবজ্ঞা : এঁরা কেউই মনুস্মৃতির সামাজিক বিধানগুলিকে মান্য করতেন না। মূলত কৃষিজীবী এই গােষ্ঠী আগে চণ্ডাল’ নামে পরিচিত থাকলেও পরে এঁরা নমঃশূদ্র নামে পরিচিত হন।
৩. সংঘবদ্ধতা : বাংলায় এই আন্দোলনের প্রবক্তা শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর নমঃশূদ্রদের বৈয়বীয় ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করেন। শ্রী হরিচাঁদ তাঁর শিষ্যদের ‘মতুয়া’ নাম দেন। শ্রী হরিচাঁদের পর শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর এঁদের রাজনৈতিক ভাবে সংগঠিত করেন। প্রমথনাথ ঠাকুর, যােগেন মণ্ডল প্রমুখ ছিলেন বাংলায় নমঃশূ দ্রদের অন্যান্য নেতা।
আন্দোলনের বিকাশ : বিশ শতকে নমঃশূদ্র আন্দোলনের বিকাশের ক্ষেত্রে উল্লেখযােগ্য ঘটনাগুলি হল—
১. প্রতিনিধি দল প্রেরণ : ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে নমঃশূদ্রদের একটি প্রতিনিধি দল গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে তাদের সামাজিক বৈষম্যের হাত থেকে মুক্ত করার দাবি জানায়।
২. নমঃশূদ্র’ নামের স্বীকৃতি : নমঃশূদ্র নেতা গুরুচাঁদ ঠাকুর চণ্ডালদের নাম পরিবর্তন করে নমঃশূদ্র রাখার দাবি জানালে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনায় এই দাবি স্বীকৃত হয়। পরবর্তীকালে বাংলার নমঃশূদ্রদের নিয়ে ভিন্ন মাত্রার রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তােলেন যােগেন্দ্রনাথ মণ্ডল।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।