প্রশ্ন – বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রসারে তিতুমির-এরভূমিকা আলােচনা করাে। Class 10 | 8 Marks
উত্তর: সূচনা : মির নিসার আলি বা তিতুমিরের নেতৃত্বে বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
বারাসত বিদ্রোহ : তিতুমির দেশীয় জমিদারদের অত্যাচার, নীলকর, সুদখাের মহাজনদের অত্যাচার ও শােষণের হাত থেকে গরীব কৃষকদের মুক্ত করতে নদিয়া, যশােহর, ২৪ পরগনা, মাল রাজশাহি, ঢাকা, পাবনায় যে জমিদার, নীলকর ও ইংরেজ বিরােধী আন্দোলন গড়ে তােলেন, তা বারাসত বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
বিদ্রোহের কারণ : বারাসত বিদ্রোহের কারণগুলি (১) ইসলাম ধর্মের সংস্কার সাধন ও বিশুদ্ধতা প্রতিষ্ঠা (২) জমিদার, নীলকর, পুলিশ, প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গের শােষণ ও শাসন থেকে দরিদ্র কৃষক, জোলা ও অন্যান্য পেশার মানুষের মুক্তি (৩) জমিদার কৃষ্ণদেব রায় এবং নগরপুরের জাম অত্যাচারের বিহিত করা এবং (৪) জমিদার ও নীলকরপন্থী ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটানাে।
তিতুমিরের ঘােষণা : তিতুমির ঘােষণা করে। (১) মূর্তিপূজা, ফয়তা (শ্রাদ্ধশান্তি), পির-পয়গম্বরের পূজার দরকার নেই; (২) ওয়াহাবি অনুগামীরা সুদে টাকা খাটাতে পারবে না (৩) ওয়াহাবিদের দাড়ি রাখতে হবে ইত্যাদি।
কৃষ্ণদেব রায়ের সঙ্গে বিরােধ : বারাসত অঞলে ওয়াহাবিদের প্রভাব খর্ব করার জন্য জমিদার কৃষ্ণদেব রায় ওয়াহাবি মতাবলম্বীদের দাড়ির ওপর আড়াই টাকা কর ধার্য করলে এবং তিতুমিরের গ্রাম আক্রমণ করে মসজিদে আগুন লাগিয়ে দিলে তার সঙ্গে তিতুমিরের সংঘর্ষ বাধে।
বাঁশের কেল্লা : ইতিমধ্যে জমিদারদের বিরুদ্ধে সাফল্য লাভ করার পর তিতুমির নিজেকে ‘বাদশাহ’ বলে ঘােষণা করে বাদুড়িয়া থানার নিকটস্থ নারকেলবেড়িয়া গ্রামে একটি বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন এবং সেখানে সদর দপ্তর স্থাপন করেন। তাঁর অনুগামী মৈনুদ্দিনকে প্রধানমন্ত্রী, গােলাম মাসুমকে প্রধান সেনাপতি, মিশকিন শাহকে প্রধান উপদেষ্টার পদ দেওয়া হয়। তিতুমির নিয়ন্ত্রিত এলাকায় খাজনা আদায় শুরু করেন।
বিদ্রোহের অবসান : জমিদার ও নীলকরদের যৌথ আবেদনের ভিত্তিতে ১৮৩১ সালের ১৪ নভেম্বর উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক এক বিশাল সেনাবাহিনী পাঠিয়ে কামানের আঘাতে বাঁশের কেল্লা উড়িয়ে দেয়। তিতুমির যুদ্ধক্ষেত্রে বীরের মতাে মৃত্যুবরণ করেন, তার ৮০০ জন অনুগামী বন্দি হয় এবং গােলাম মাসুমের ফাসি হয়। তিতুমিরের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই বারাসত বিদ্রোহের অবসান হয়।
আন্দোলনের প্রকৃতি : তিতুমিরের সংগ্রামের প্রকৃতি ছিল—
প্রথমত, অনেকের মতে, এই আন্দোলন ছিল সাম্প্রদায়িক এবং হিন্দু বিরােধী।
দ্বিতীয়ত, তিতুমিরের জীবনীকার বিহারীলাল সরকারের মতে, বহু হিন্দু যেমন তিতুমিরের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলেন, তেমনি বহু মুসলিম ভূস্বামীরাও ওয়াহাবিদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তৃতীয়ত, তিতুমিরের সংগ্রাম প্রাথমিক পর্বে ধর্মকে কেন্দ্র করে শুরু হলেও ক্রমশ তা সংকীর্ণ ধর্মীয় সীমারেখা অতিক্রম করে কৃষকসহ দরিদ্র মানুষের জমিদার ও রাষ্ট্রবিরােধী প্রতিবাদী সংগ্রামের রূপ ধারণ করে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।
লেখাটি তথ্যপূর্ন ও সুন্দর। কিন্তু বাক্যগঠন- এ অসংগতি রয়েছে! একটু যত্ন নিলে লেখাটা আরো সুন্দর ও সাবলীল হয়ে উঠবে। ধৃষ্টতার জন্য ক্ষমা প্রার্থী। ধন্যবাদান্তে ——–
তরুণ কুমার দাস