প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 7 এর ভানুসিংহের পত্রাবলি প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের সপ্তম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ভানুসিংহের পত্রাবলি গল্প রয়েছে। গল্পের শেষের হাতে কলমে প্রশ্নগুলির সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
ভানুসিংহের পত্রাবলি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভানুসিংহের পত্রাবলি প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bhanusingher Potraboli Question Answer
হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর
১. ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো:
১.১ বর্ষামঙ্গল (আষাঢ় / অগ্রহায়ণ / শ্রাবণ) মাসে অনুষ্ঠিত হয়।
উত্তর: বর্ষামঙ্গল শ্রাবণ মাসে অনুষ্ঠিত হয়।
১.২ শান্তিনিকেতন (বীরভূম / বাঁকুড়া / পুরুলিয়া) জেলায় অবস্থিত।
উত্তর: শান্তিনিকেতন বীরভূম জেলায় অবস্থিত।
১.৩ কবি (আত্রাই / পদ্মা / শিলাবতী) নদীর ওপর বোটে করে ভেসে চলেছেন।
উত্তর: কবি আত্রাই নদীর ওপর বোটে করে ভেসে চলেছেন।
১.৪ পৃথিবীর মনের কথাটি কবি শুনতে পান (জলের ওপর / নদীর ওপর / মাটির ওপর)।
উত্তর: পৃথিবীর মনের কথাটি কবি শুনতে পান নদীর ওপর।
১.৫ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি পত্রসাহিত্যের উদাহরণ হল – (শেষের কবিতা / গীতাঞ্জলি / ছিন্নপত্র)।
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি পত্রসাহিত্যের উদাহরণ হল – ছিন্নপত্র।
২. সংক্ষেপে উত্তর দাও:
২.১ “কলকাতা শহরটা আমি মোটেই পছন্দ করিনে” কবির এই অপছন্দের কারণ কী?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন প্রকৃতি প্রেমীক। কলকাতা শহরের ভিড়, ইটকাঠের বাড়ি তিনি পছন্দ করতেন না। বর্ষার সময় কবির মনে হতো বৃষ্টির ধারা বাড়ির ছাদে ঠোকর খেতে থাকে, তাই তার গতি কমে যায়। এমন পরিবেশে বর্ষার গান, তার নৃত্যময় রূপ, সবুজের বিস্তার কোনো কিছুই নেই তাই রবীন্দ্রনাথ কলকাতা শহরটাকে পছন্দ করেন না।
২.২ “সে গান কি কলকাতা শহরের হাটে জমবে” – কোন গানের কথা বলা হয়েছে? সে গান কলকাতা শহরের হাটে জমবে না—কবির এমন ভাবনা কেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ভানুসিংহের পত্রাবলি’ রচনার অন্তর্গত প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে বর্ষামঙ্গল গানের কথা বলা হয়েছে।
বর্ষার সময় শান্তি নিকেতনে যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রকাশ পায় কলকাতার ব্যস্ত, হট্টগোলে পরিপূর্ণ জীবনে সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফুটে ওঠে না। তাই কবি মনে করেন বর্ষামঙ্গলের গন কলকাতা শহরে ভালো জমবে না।
২.৩ “তোমাদের ওখানে এতদিনে বোধহয় বর্ষা নেমেছে” — কার উদ্দেশ্যে কবি একথা লিখেছেন? ‘ওখানে’ বলতে কোন জায়গার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘ভানুসিংহের পত্রাবলী, রচনাংশ থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্যা রানুর উদ্দেশে কবি প্রশ্নোদ্ধৃত কথাটি বলেছেন।
ওখানে বলতে শান্তিনিকেতনের কথা বলা হয়েছে।
২.৪ “শান্তিনিকেতনের মাঠে যখন বৃষ্টি নামে…” তখন কবির কেমন অনুভূতি হয়?
উত্তর: শান্তিনিকেতনের মাঠে যখন বৃষ্টি নামে তখন তার ছায়ায় আকাশের আলো করুন হয়ে আসে, ঘাসে ঘাসে পুলক লাগে এবং গাছেরা যাথা পেতে বৃষ্টির আনন্দ অনুভব করতে চায়।
২.৫ “আজ সকালেই সে পালাবে স্থির করেছে।” ‘আজ’ বলতে যে দিনটির কথা বলা হয়েছে তার সাল ও তারিখ কত? ‘সে’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? সে কোথায় পালাবে এবং কেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘ভানুসিংহের পত্রাবলী’ গদ্যাংশের অন্তর্গত প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে আজ বলতে ২৯ আষাঢ় ১৩২৯ বঙ্গাব্দ দিনটির কথা বলা হয়েছে।
সে বলতে দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা বলা হয়েছে।
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে পালাবেন কারণ কলকাতার দমবন্ধকরা পরিবেশ তার একেবারেই ভালো লাগত না।
২.৬ “সমস্তটার উপর বাদল-সায়াহ্নের ছায়া”— কবির চোখ দিয়ে দেখা এই ‘সমস্তটা’-র বর্ণনা দাও।
উত্তর: আত্রাই নদীর ওপরে বোট থেকে কবি রবীন্দ্রনাথ বর্ষাকালের প্রকৃতিকে দেখছেন । বর্ষায় খরস্রোতা আত্রাই নদী কূলে কূলে পরিপূর্ণ। নদীর পাড়ে যে গ্রামগুলো দেখা যাচ্ছে সেই গ্রামের ঘরগুলোর উঠোন অবধি জল উঠেছে। গ্রামের মধ্যে রয়েছে ঘন বাঁশের ঝাড় আর আমগাছ, কাঁঠাল গাছ, তেঁতুল গাছ, কুল গাছ, শিমূল গাছ । মাঝে মাঝে নদীর তীরে কাঁচা ধানের খেতে জল উঠেছে। এ ছাড়াও নদীর দুই তীরে ঘন সবুজের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। তারই মাঝখান দিয়ে আত্রাই নদী তার গেরুয়া রঙের জলধারা বয়ে নিয়ে চলেছে অত্যন্ত ব্যস্ততার সঙ্গে।
২.৭ “কলকাতায় না এলে আরো জমত”— কী জমত? কবির কলকাতায় আসার সঙ্গে তা না জমে ওঠার সম্পর্ক কী?
উত্তর: কলকাতায় না এলে কবি রবীন্দ্রনাথের গানের খাতায় আরও গান জমে উঠত।
কবি যখন শান্তিনিকেতনে থাকতেন, তখন সেখানকার প্রকৃতির সঙ্গে তিনি আন্তরিকভাবে একাত্ম হয়ে পড়তেন। শান্তিনিকেতনে যখন বৃষ্টি নামত তখন কবি অনুভব করতেন সেই বৃষ্টির ছায়ায় আকাশের আলো করুণ হয়ে আসে। এই পরিবেশে ঘাসের মধ্যেও বৃষ্টির আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। গাছগুলো যেন বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ার আনন্দে শামিল হয়ে কথা বলার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এই সময় কবির মনেও জেগে উঠত বর্ষামঙ্গলের গান। শহর কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনের মতো বর্ষাসুন্দরীকে খুঁজে পান না। সেই জন্যই কবি বলেছিলেন, বর্ষাকালে কলকাতায় না এসে তিনি যদি শান্তিনিকেতনেই থাকতেন তাহলে তাঁর গানের খাতায় আরও বেশি গান জমে উঠত।
২.৮ “খাতার দিকে চোখ রাখবার এখন সময় নয়”— কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে? খাতার দিকে চোখ রাখবার সময় কবির নেই কেন?
উত্তর: কবি এক বর্ষাভেজা গোধূলি বেলায় আত্রাই নদীর ওপর বোটে করে ভেসে চলেছেন। প্রকৃতির সঙ্গে কবির একাত্ম হয়ে ওঠার সেই সময়ের কথাই এখানে বলা হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ আত্রাই নদীর ওপরে বোট থেকে বর্ষায় ভেজা চারপাশের পরিবেশকে দেখছিলেন। একদিকে নদী, অন্যদিকে আকাশ-এই দুইয়ের রঙে, আলোছায়ায় মেশা অভূতপূর্ব সৌন্দর্যকে কবি মুগ্ধ হয়ে দেখতে ভালোবাসতেন । সেই কারণে সেই মুহূর্তে তাঁর মন খাতার দিকে ছিল না ।
৩. দু-চার কথায় পরিচয় দাও:
শান্তিনিকেতন, দিনু, বর্ষামঙ্গল, আত্রাই।
উত্তর:
শান্তিনিকেতন: বীরভূম জেলার বোলপুরের একটি ছোটো শহর শান্তিনিকেতন। এই শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ প্রাচীন ভারতের তপোবনের আদর্শে প্রথমে ব্রহ্মচর্যাশ্রম স্থাপন করেন যা পরে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় । শান্তিনিকেতনের আগের নাম ছিল ভুবনডাঙা
দিনু: রবীন্দ্রনাথের বড়ো দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথের পৌত্র হলেন দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। দি ঠাকুর নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে তাঁর জন্ম। পিতা দ্বিপেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ‘ফাল্গুনী’ নাটকের উৎসর্গপত্রে রবীন্দ্রনাথ তাঁকে ‘আমার সকল গানের কান্ডারী’ বলে সম্মানিত করেছেন।
বর্ষামঙ্গল: শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ তাঁর অন্যতম প্রিয় ঋতু বর্ষাকে বরণ করে নিতেন যে উৎসবের মাধ্যমে, সেই অনুষ্ঠানই বর্ষামঙ্গল নামে পরিচিত। বর্ষার আশীর্বাদলাভেই যেহেতু পুষ্ট হয়ে উঠত শান্তিনিকেতনের লালমাটি এবং বর্ষাই যেহেতু আমাদের দেশকে শস্যশ্যামলা করে তোলে, তাই উৎসবটির ‘বর্ষামঙ্গল’ নামকরণ।
আত্রাই: ‘আত্রাই’ বা আত্রেয়ী নদীটির উৎপত্তি পশ্চিমবঙ্গে হলেও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়েও এই নদীটি প্রবাহিত হয়েছে। মহাভারতেও এই প্রাচীন নদীটির উল্লেখ আছে। বাংলাদেশে এটি পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
৪. একটি বর্ষণমুখর দিনের অভিজ্ঞতা বিষয়ে একটি ছোট অনুচ্ছেদ রচনা করো।
উত্তর: সকালেও সেদিন আমার ঘুম ভেঙেছিল মুখের ওপরে এসে পড়া আলতো রোদের আঁকিবুকিতে। সকালটা অন্য আর পাঁচটা দিনের মতোই ছিল কর্মমুখর। কিন্তু, ন-টা বাজতে না বাজতেই আকাশ একেবারে আঁধার করে এল। দিনটা ছিল রবিবার। তাই সেদিন স্কুলে যাওয়ারও কোনো তাড়া নেই। আমি বহুদিন পর আঁকার খাতাটা বের করে আঁকতে বসে গেলাম। আপন মনে এঁকে চলেছি-কালো হয়ে আসা আকাশ, তার গায়ে ঘনিয়ে ওঠা জলভরা মেঘ ঠিক তখনি শুরু হলো বৃষ্টি। আর আমিও অমনি রং, তুলি ফেলে, পাততাড়ি গুটিয়ে সটান জানলার ধারে গিয়ে বসে পড়লাম। জানলায় বসেই দেখতে পাচ্ছি, পথের সব লোকজন দৌড়োদৌড়ি লাগিয়ে দিয়েছে। দেখতে দেখতে একহাঁটু জল দাঁড়িয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর দেখি যা খিচুড়ি আর ডিম ভাজা আমার সামনে হাজির করল। আমিও বেশ জমিয়ে খেলাম। খাওয়ার পর বৃষ্টি দেখতে দেখতে দুপুর হয়ে গেলো। তারপর আমি যে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝতে পারিনি। ঘুম থেকে উঠে দেখি বিকেল পাঁচটা বাজে। বৃষ্টি থেমে গেছে টেরই পাইনি।
৫. অর্থ লেখো :
পুলক, উত্তরীয়, এসরাজ, আঙিনা, সায়াহ্ন, প্রয়াস, নিভৃত।
উত্তর: পুলক – আনন্দ
উত্তরীয়- চাদর
এসরাজ – বাদ্যযন্ত্ৰ বিশেষ
আঙিনা- উঠোন
সায়াহ্ন- সন্ধ্যা
প্রয়াস – পরিশ্রমের সঙ্গে চেষ্টা
নিভৃত – নির্জন
৬. কারক বিভক্তি নির্ণয় করো :
৬.১ কোলকাতা শহরটা আমি মোটেই পছন্দ করিনে।
উত্তর: কর্তৃকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি।
৬.২ তার উপরে আবার আকাশ মেঘে লেপা।
উত্তর: কর্মকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি।
৬.৩ আমার মনের মধ্যে গান জেগে ওঠে।
উত্তর: কর্তৃকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি। (কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা)
৬.৪ কলকাতায় বর্ষামঙ্গল গান হবে।
উত্তর: অধিকরণ কারক, ‘য়’ বিভক্তি।
৬.৫ সে গান কি কলকাতা শহরের হাটে জমবে।
উত্তর: কর্তৃকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি। (কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা)
৭. বাক্য রচনা করো :
শান্তিনিকেতন, হাট, বাদল, বৃষ্টিধারা।
উত্তর:
শান্তিনিকেতন – শান্তিনিকেতনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুবই মনোমুগ্ধকর।
হাট – আমাদের গ্রামে সপ্তাহে দুদিন হাট বসে।
বাদল – বাদল মেঘে চারিদিক অন্ধকার হয়ে যায়।
বৃষ্টিধারা – বৃষ্টিধারায় চারিদিক ঝাপসা দেখা যায় ।
৮. শব্দযুগলের অর্থ পার্থক্য দেখাও :
উত্তর:
সুর – শূর => সূর – দেবতা, শূর – বীর।
নৃত্য – নিত্য => নৃত্য – নাচ, নিত্য – সর্বদা / প্রতিদিন।
বর্ষা – বর্শা => বর্ষা – যে ঋতুতে বৃষ্টি হয়, বর্শা – ধারালো ফলাযুক্ত অস্ত্র।
আষাঢ় – আসার => আষাঢ় – বাংলা বছরের তৃতীয় মাস, আসার – বৃষ্টিধারা।
কূল – কুল => কূল – তীর, কুল – বংশ।
সাড়া – সারা => সাড়া – আহ্বানের উত্তর, সারা – সমগ্র, শেষ।
৯. বর্ষার কলকাতা শহরকে কবির বিশেষভাবে অপছন্দ করার কারণ কী?
উত্তর: কবি রবীন্দ্রনাথ যুক্ত পরিবেশে বর্ষার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভালোবাসতেন। কলকাতায় সেই রকম যুক্ত পরিবেশ নেই। কলকাতার বর্ষা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেন, “এখানে নববর্ষা বাড়ির ছাদে ঠোকর খেতে খেতে খোঁড়া হয়ে পড়ে।” তার নাচগানের সৌন্দর্য বাধা পায়। তাই বর্ষার কলকাতা শহরকে কবি বিশেষভাবে অপছন্দ করেন।
১০. নববর্ষা বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ‘নববর্ষা’ হল নতুন বর্ষা। নববর্ষা বলতে আষাঢ় শ্রাবণ মাসের, প্রথম বৃষ্টি অর্থাৎ নতুন বৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। এ বৃষ্টি আসে গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহের পর ।
১১. বর্ষার ঋতুকে নিয়ে লেখা রবীন্দ্রনাথের দুটি গান ও দুটি কবিতার নাম লেখো।
উত্তর: বর্ষা ঋতুকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের লেখা দুটি গান হল ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’ এবং ‘এসো শ্যামল সুন্দর। রবীন্দ্রনাথের বর্ষা ঋতুকে নিয়ে লেখা দুটি কবিতা হল- ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর’ ও ‘আষাঢ়’।
১২. সবুজ রঙের উত্তরীয় বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: উত্তরীয় শব্দের অর্থ হল ‘চাদর’। আষাঢ় মাসে বর্ষার আগমনের আনন্দে ‘গাছগুলি যেন কথা করতে চায়’। ঝোড়ো হাওয়ার ঝাপটা একের পর এক গাছকে আন্দোলিত করে। সবুজ পাতার এই আন্দোলনকে ওপর থেকে এবং দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন বহু দূর থেকে সবুজ রঙের চাদর উড়িয়ে দিয়ে বর্ষা আসছে।
১৩. কলকাতা শহরে হাট….শহরকে হাটের সঙ্গে তুলনার ব্যঞ্জনাটি কোথায়?
উত্তর: আমরা জানি হাটে বহু মানুষের সমাগম, হইহুল্লোড় ও হট্টগোল হয়। কলকাতা কর্মব্যস্ত ও জনবহুল শহর। তাই লেখক হাট বলতে কলকাতার ব্যস্ততা ও যান্ত্রিকতাকে বুঝিয়েছেন।
১৪. আষাঢ় মাসের বর্ষাকে কলকাতা শহরে মানায় না— কবির এ জাতীয় মন্তব্যের অর্থ কী?
উত্তর: কবির চোখে আষাঢ় মাসে বর্ষা আসে নাচ ও গানের ভঙ্গিতে, ‘সবুজ রঙের উত্তরীয় উড়িয়ে এবং ‘পুবে বাতাসের উড়ে-পড়া জটাজাল’ ছড়িয়ে। এরকম বর্ষার রূপে মুগ্ধ কবির মনে জেগে ওঠে গান । কলকাতা শহরে ইট-কাঠের বড়ো বড়ো বাড়ির ভিড়ে আষাঢ় মাসের এই রূপ দেখতে পাওয়াটা যে অসম্ভব, তা কবি ভালোভাবে জানতেন । এই উপলব্ধি থেকেই কবি উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।
১৫. আত্রাই নদীটি কোথায়? সেই নদীতে বোটে যেতে যেতে কবি কবে নির্বাচিত পত্রটি লিখেছিলেন?
উত্তর: আত্রাই নদীটি ওপার বাংলায় অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে। আত্রাই নদীর ওপর বোটে যেতে যেতে কবির লেখা নির্বাচিত পত্রটির তারিখ হল ২ শ্রাবণ, ১৩২৯ বঙ্গাব্দ।
১৬. নদীপাড়ের গ্রামগুলির ছবি কীভাবে কবির চোখে ধরা পড়েছে?
উত্তর: আত্রাই নদীর ওপর দিয়ে বোটে করে যেতে যেতে কবি রবীন্দ্রনাথ বর্ষার মেঘাচ্ছন্ন আকাশের পটভূমিতে নদীপাড়ের গ্রামগুলিকে দেখেছেন। এই অবস্থায় গ্রামগুলির দিকে তাকিয়ে তাঁর মনে হয়েছে, “পল্লির আঙিনার কাছ পর্যন্ত জল উঠেচে।” গ্রামের মধ্যেই ঘন বাঁশঝাড়। আম, কাঁঠাল, তেঁতুল, কুল, শিমূল গাছ গ্রামগুলোকে ঘিরে রয়েছে। মাঝে মাঝে জলমগ্ন কাঁচা ধানের খেত, যেখানে কচি ধানের মাথা জলের ওপরে জেগে আছে । নদীর দুই তীরে ঘন সবুজের সমারোহ, তার মাঝখান দিয়ে বর্ষার ‘খোলা নদীটি তার গেরুয়া রঙের ধারা বহন করে ব্যস্তসমস্ত হয়ে বয়ে চলেছে।
১৭. আকাশ আর নদীর প্রতি ভালোবাসা, সর্বোপরি বর্ষা প্রকৃতির প্রতি কবির পক্ষপাত কীভাবে পত্রদুটিতে প্রতিফলিত হয়েছে?
উত্তর: ২৯ আষাঢ়, ১৩২৯ তারিখের এবং ২ শ্রাবণ, ১৩২৯ তারিখের দুটি পত্রে প্রকৃতিপ্রেমী রবীন্দ্রনাথ নিজের অনুভূতিকে প্রকাশ করেছেন। বর্ষা তাঁর প্রিয় ঋতু। শান্তিনিকেতনে যখন নৃত্য পটিয়সী বর্ষা তার ‘সবুজ রঙের উত্তরীয়’ উড়িয়ে, পুবে বাতাসের উড়ে পড়া জটাজাল’ ছড়িয়ে আসত, তখন কবির মনে গান জেগে উঠত। কিন্তু কলকাতায় ইট কাঠের বড়ো বড়ো বাড়ির ভিড়ে প্রকৃতির সেই রূপটাই কবি খুঁজে পেতেন না। তাই শান্তিনিকেতনে বর্ষাকে দেখে কবি যে গান লেখেন, দিনু ঠাকুর যে গানে সুর দেন-সেই গান শহর কলকাতার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হবে কি না সে নিয়ে কবি সংশয় প্রকাশ করেছেন।
আবার ২ শ্রাবণ, ১৩২৯ তারিখের পত্রে কবির প্রকৃতি প্রেমের আর একটি দিক প্রকাশিত হয়েছে। কবি সেদিন আত্রাই নদীর ওপরে বোটে ছিলেন। নদীতে অন্য কোনো নৌকা ছিল না। কবি সেই নির্জনতার মধ্যে নদী আর আকাশকে নিজের করে পেয়েছিলেন। নদী আর আকাশের প্রতি তাঁর চিরকালের ভালোবাসা যেন নতুন করে উপলব্ধি করলেন তিনি। তাঁর মনে হল, নদীর ওপরে ভেসে থাকলেই পৃথিবীর মনের কথাটি শোনা যায়। নদীর বিস্তৃত জলরাশির ওপর যখন আকাশের ছায়া পড়ে শুধু তখনই যেন ‘আকাশ আপনার সাড়া দেয় ৷
১৮. ক্রিয়ার কাল নির্ণয় করো:
১৮.১ কলকাতায় বর্ষামঙ্গল গান হবে।
উত্তর: ভবিষ্যৎ কাল
১৮.২ অনুরোধে পড়ে কখনো কখনো আমার নতুন বর্ষার গান গাইতে হয়েছে।
উত্তর: অতীত কাল
১৮.৩ আজ সকালেই সে পালাবে স্থির করেছে।
উত্তর: বর্তমান কাল
১৮.৪ আত্রাই নামক একটি নদীর উপর বোটে করে ভেসে চলেছি।
উত্তর: বর্তমান কাল
১৮.৫ অনেকদিন বোলপুরের শুকনো ডাঙায় কাটিয়ে এসেছি।
উত্তর: অতীত কাল
১৯. নীচের বাক্যগুলিকে দুটি বাক্যে আলাদা করে লেখো:
১৯.১ কথা হচ্ছে এবার শ্রাবণ মাসে আর বছরের মতো কলকাতায় বর্ষামঙ্গল গান হবে।
উত্তর: আর বছর শ্রাবণ মাসে কলকাতায় বর্ষামঙ্গল গান হয়েছিল। কথা হচ্ছে এবারও শ্রাবণ মাসে কলকাতায় বর্ষামঙ্গল গান হবে।
১৯.২ শান্তিনিকেতনের মাঠে যখন বৃষ্টি নামে তখন তার ছায়ায় আকাশের আলো করুণ হয়ে আসে।
উত্তর: শান্তিনিকেতনের মাঠে বৃষ্টি নামে। তার ছায়ায় আকাশের আলো করুণ হয়ে আসে।
১৯.৩ আমার এই বোট ছাড়া নদীতে আর নৌকা নেই।
উত্তর: নদীতে শুধু আমার এই বোট আছে। নদীতে আর কোনো নৌকা নেই।
১৯.৪ আমার দুই চক্ষু এখন বাইরের দিকে চেয়ে থাকতে চায়, খাতার দিকে চোখ রাখবার এখন সময় নয়।
উত্তর: আমার দুই চক্ষু এখন বাইরের দিকে চেয়ে থাকতে চায়। খাতার দিকে চোখ রাখবার এখন সময় নয়।
১৯.৫ আজ রাত্রের গাড়িতেই কলকাতায় যাব মনে করে ভালো লাগছে না।
উত্তর: আজ রাত্রের গাড়িতেই কলকাতায় যাব ৷ এ কথা মনে করে ভালো লাগছে না।
আরো পড়ুন
গল্পবুড়ো কবিতার প্রশ্ন উত্তর | সুনির্মল বসু | Golpo Buro Kobita Question Answer | Class 5 | Wbbse
বুনো হাঁস প্রশ্ন উত্তর | লীলা মজুমদার | Buno Has Class 5 Question Answer | Wbbse
দারোগাবাবু এবং হাবু কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Daroga Babu Ebong Habu Question Answer | Class 5 | Wbbse
এতোয়া মুন্ডার কাহিনী প্রশ্ন উত্তর | Etoya Mundar Kahini Question Answer | Class 5 | Wbbse
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।