ভারতে ১৯৪৭ এর পরবর্তীকালে উদবাস্তু সমস্যার উদ্ভব কীভাবে হয়েছিল

প্রশ্ন – ভারতে ১৯৪৭-এর পরবর্তীকালে উদবাস্তু সমস্যার উদ্ভব কীভাবে হয়েছিল? অথবা, এত অল্পসময়ে এত বড় মানবগােষ্ঠীর গৃহত্যাগের নজির পৃথিবীর ইতিহাসে পাওয়া যায় না’—দেশত্যাগের প্রসঙ্গে মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করাে।র্টের ভিত্তিতে পাঞ্জাব ও বঙ্গবিভাজনের প্রসঙ্গটি বিশ্লেষণ করাে। Class 10 | 4 Marks

উত্তর: – ভূমিকা : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত বিভাজন এবং একইসঙ্গে পাঞ্জাব ও বঙ্গবিভাজনের ঘটনা ভারতে উদ্বাস্তু সমস্যার সূচনা করেছিল।

উদবাস্তু সমস্যার উদ্ভবের কারণ : ভারতে উদ্বাস্তু সমস্যার উদ্ভবের বহুবিধ কারণের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল— 

১। দেশভাগ : লর্ড মাউন্টব্যাটেন কর্তৃক মুসলিম লিগের পাকিস্তান। দাবি মেনে নিয়ে ভাষা ও ধর্মের ভিত্তিতে ভারত বিভাজনের ফলে ভারতের সীমান্ত বরাবর পাকিস্তানের হিন্দু ও শিখরা নিজেদের বসতবাড়ি, জমি-জমা ছেড়ে ভারতে চলে আসতে থাকে। 

২। বঙ্গ ও পাঞ্জাব বিভাজন : স্যার সিরিল র্যাডক্লিফের নেতৃত্বে গঠিত সীমানা কমিশনের রিপাের্টে বঙ্গকে পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গ এবং পাঞ্জাবকে পূর্ব পাঞ্জাব ও পশ্চিম পাঞ্জাবে বিভক্ত করা হলে পূর্ববঙ্গ বা পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দুরা এবং পশ্চিম পাঞ্জাবের শিখরা ভারতে চলে আসতে বাধ্য হয়। 

৩। নিরাপত্তার অভাব : উদ্বাস্তু হয়ে হিন্দু ও শিখদের ভারতে চলে আসার মূলে কারণ ছিল দেশভাগজনিত সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, হিংসা ও নিরাপত্তার অভাববােধ।

৪। ধর্ম ও সংস্কৃতি : দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু-মুসলিম পাশাপাশি বাস করলেও দেশভাগের প্রাক্কালে ও পরবর্তীকালে এই দুই ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে বহুযােজন দূরত্ব তৈরি হওয়ায় সমধর্মী ধর্ম ও সংস্কৃতির টানেই হিন্দু ও শিখরা ভারতে উদ্বাস্তু হয়ে চলে আসে।

উপসংহার : এভাবে দেখা যায় যে, উদ্বাস্তু সমস্যার উদ্ভবের পশ্চাতে ছিল রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্ব, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও হিংসা, নিরাপত্তার অভাব ও নিরাপদ আশ্রয় অনুসন্ধান প্রভৃতি।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment