Wbshiksha তরফ থেকে আপনাকে স্বাগত জানাই। প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আমরা এই আর্টিকেলে Class 7 -এর বাংলা বইয়ের অন্তর্গত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ভারততীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তর গুলি নিয়ে এসেছি। এই কবিতার নিচে যে হাতে কলমে প্রশ্নগুলো রয়েছে সেই প্রশ্নগুলির উত্তর খুবই সহজভাবে লিখে দেওয়া হয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তরগুলি পড়লে আশা করি তোমরা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাবে।
ভারততীর্থ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভারততীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bharat Tirtha Question Answer
হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর
➤ নির্দেশ অনুসারে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
১ . কবিতায় ভারতভূমিকে ‘পুণ্যতীর্থ’ বলা হয়েছে কেন?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভরততীর্থ’ কবিতায় কবি ভারতভূমিকে পুণ্যতীর্থ বলেছেন। সময়ের স্রোতে আর্য, অনার্য, দ্রাবিড়, চিন, শক, হুণ, পাঠান, মোগল প্রভৃতি নানা জাতি, নানা সংস্কৃতির মানুষ এই ভারতবর্ষে এসেছে। এরা ভারতবর্ষের সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। এছাড়াও ভারতবর্ষের বুকে যুগে যুগে নানা মনীষী জন্ম গ্রহণ করেছেন। তাদের স্পর্শে ধন্য হয়েছে এ দেশ । ভারতবর্ষ যেন হয়ে উঠেছে বিশ্বমানবতার মিলনক্ষেত্র যেখানে ঘুচে গেছে ধর্ম বর্ণের পার্থক্য। তাইতো নিজের জন্মভূমি তথা ভারতভূমির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কবি ভারতভূমিকে পুণ্যতীর্থ বলেছেন।
📝Class 7 বাংলা অন্যান্য অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর
২. ‘মহামানবের সাগরতীরে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় কবি ভারতবর্ষকে মহামানবের সাগরতীর বলে সম্বোধন করেছেন। কবি উপলব্ধি করেছেন, সাগরে যেমন বিভিন্ন নদীর ধারা এসে মিলিত হয় তেমনি কালস্রোতে আর্য, অনার্য, দ্রাবিড়, চিন, শক, হুণ, পাঠান, মোগল, ইংরেজ প্রভৃতি নানা জাতের মানুষ এই ভারতবর্ষের মাটিতে এসেছে। এইসব জাতি নিজস্ব সংস্কৃতি নিয়ে এদেশে আসলেও ভারতবর্ষের সংস্কৃতির সাথে তা যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে এক ঐক্যবদ্ধ সংস্কৃতির। এছাড়াও অসংখ্য মহাপুরুষ এদেশে জন্মগ্রহণ করে ভারতবর্ষকে ‘পুণ্যতীর্থে রূপান্তরিত করে গেছেন। তাই কবি রবীন্দ্রনাথ এই দেশকে ‘মহামানবের সাগরতীর’ বলে সম্বোধন করেছেন এবং অন্তরের শ্রদ্ধা জানিয়ে দুহাত বাড়িয়ে নরদেবতাকে প্রণাম করেছেন।
৩. ভারতের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ধরা পড়েছে, কবিতা থেকে এমন একটি পক্তি উদ্ধৃত করো।
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় ভারতের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ধরা পড়েছে
এমন একটি পঙক্তি হল, –
“ধ্যানগম্ভীর এই যে ভূধর, নদী-জপমালা ধৃত প্রান্তর। “
৪. ভারতবর্ষকে পদানত করতে কোন কোন বিদেশি শক্তি অতীতে এদেশে এসেছিল? তাদের পরিণতি কী ঘটল ?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতা অনুযায়ী ভারতবর্ষকে পদানত করতে শক, হুণ, পাঠান, মোগল প্রভৃতি বিদেশি শক্তি অতীতে ভারতবর্ষে এসেছিল।
ভারতবর্ষের মাটিতে সমস্ত বিদেশি শক্তিরা নিজেদের সংস্কৃতি নিয়ে আসলেও এই দেশের মাটির গুনে, ঐক্যবদ্ধতার মন্ত্রে দিক্ষীত হয়ে এই দেশের সংস্কৃতির সাথে তারা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। ভারতবর্ষ যেন হয়ে উঠেছে সর্ব ধর্ম সর্ব সংস্কৃতির মিলন ক্ষেত্র।
৫. ‘পশ্চিমে আজি খুলিয়াছে দ্বার’ – – উদ্ধৃতাংশে কোন পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে? এমন পরিস্থিতিতে কবির অন্বিষ্ট কী?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তির দ্বারা লেখক, পশ্চিমি দেশগুলি যখন তাদের উন্নত বিজ্ঞান, বাণিজ্য, যুক্তিবাদ নিয়ে হাজির হয়েছে বিশ্বের দরবারে। বৈজ্ঞানিক নানা আবিষ্কারে চমকে দিয়েছে বিশ্বকে। সেই পরিস্থিতির কথা বলেছেন।
পাশ্চাত্যের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় তাদের জ্ঞান, বিজ্ঞান, উন্নত প্রযুক্তি ভারতীয়রা জানতে পেরেছে। এটা ভারতীয়দের কাছে পশ্চিমিদের উপহার স্বরূপ। একই সাথে কবি চেয়েছেন ভারতবর্ষের সংস্কৃতি, আধ্যাত্মবাদ, দর্শন, ঐতিহ্য ইউরোপীয়দের জন্য উন্মুক্ত থাকুক। দেওয়া নেওয়ার মধ্য দিয়েই উন্নততর সভ্যতা গড়ে উঠুক এটাই কবির আকাঙ্ক্ষা।
৬. ‘আমার শোণিতে রয়েছে ধ্বনিতে তার বিচিত্র সুর।
—কোন সুরের কথা বলা হয়েছে? তাকে ‘বিচিত্র’ বলার কারণ কী? কেনই বা সে সুর কবির রক্তে ধ্বনিত হয় ?
উত্তর : কোন সুর?: – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিতে ভারতবর্ষের ঐক্যবদ্ধ সংস্কৃতির সুরের কথা বলা হয়েছে।
বিচিত্র বলার কারণ: – সময়ের স্রোতে নানা জাতি, নানা ধর্ম, নানা বর্ণ, নানা সম্প্রদায়ের মানুষ নিজস্ব সংস্কৃতি নিয়ে ভারতবর্ষের মাটিতে পা রেখেছে। কিন্তু তারা কেউই নিজস্ব সংস্কৃতি, জীবনযাত্রা, ধ্যানধারণাকে অক্ষত রাখতে পারেনি । এদেশের সংস্কৃতির সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। এভাবেই নানা সংস্কৃতির আদানপ্রদান ও মেলবন্ধনের মাধ্যমেই ভারতীয় সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে সমৃদ্ধ। তাই এই সংস্কৃতির মধ্যে কবি পেয়েছেন বৈচিত্র্যের সুর।
কবির রক্তে কেন ধ্বনিত হয়: – ভারতবর্ষ যেহেতু নানা জাতি, নানা মতের মিলনতীর্থ আর কবি এই ভারতবর্ষের সন্তান। তাই কবি মনে করছেন তাঁর নিজের ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে ঐক্যবদ্ধ ভারতবর্ষের বিচিত্র সংস্কৃতির সুর।
৭. “ হে রুদ্রবীণা, বাজো, বাজো, বাজো…
—‘রুদ্রবীণা’ কী? কবি তার বেজে ওঠার প্রত্যাশী কেন ?
উত্তর : রুদ্রবীণা কী ?: – রুদ্রবীণা শব্দের অর্থ বীণাজাতীয় বাদ্যযন্ত্র বিশেষ। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘ ভারততীর্থ’ কবিতায় রুদ্রবীণা বলতে বুঝিয়েছেন শিবের বীণা যা প্রলয়ের ডাক দেয়।
রুদ্রবীণা বাজার প্রত্যাশী কেন: – রুদ্রবীণা ধ্বংসের ডাক দেয়। সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে শুভ শক্তির জয় হয়। ঠিক সেভাবেই কবি নিজের সমস্ত বিভেদ, বিদ্বেষ ঘোচাতে রুদ্রবীণাকে আহ্বান করছেন। যাতে নিজেদের সমস্ত বিভেদ ঘুচে যায়। যারা এদেশকে ঘৃণা করে দূরে সরে আছে তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে আবার মহামিলনের তীর্থক্ষেত্রে এসে দাড়ায়।
৮. ‘আছে সে ভাগ্যে লিখা’— ভাগ্যে কী লেখা আছে? সে লিখন পাঠ করে কবি তাঁর মনে কোন শপথ গ্রহণ করলেন?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় কবি ভারতবর্ষের ঐক্যবদ্ধ সংস্কৃতির, মিলনের জয়গান করলেও বিভিন্ন জাতি-ধর্মের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই ভারতবর্ষ যখন পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল। তখন তারা সহ্য করেছিল অসহ্য যন্ত্রণা। ভারতবর্ষকে আরও দীর্ঘদিন পদানত করে রাখতে ঘটানো হয়েছিল মানুষে মানুষে বিভেদ। সে যন্ত্রণার ভার আজও আমাদের বহন করে চলতে হয়, এই দুঃখ যন্ত্রণাই যেন আমাদের ভাগ্যে লেখা আছে।
ভাগ্য লিখন পাঠ করে কবি রবীন্দ্রনাথ নিজের মনে দুঃখ বহন করে একের ডাক শোনার শপথ করেছেন । সকল ভারতবাসীকে মনের লজ্জা, ভয়, অপমান দূরে সরিয়ে রেখে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
৯. ‘পোহায় রজনী’—অন্ধকার রাত শেষে যে নতুন আশার আলোকোজ্জ্বল দিন আসবে তার চিত্রটি কীভাবে ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় রূপায়িত হয়েছে?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় কবি বোঝাতে চেয়েছেন ঐক্যবদ্ধ ভারতবাসীর মধ্যে বিভেদ যেন রাত্রির অন্ধকারের মতো। তবে কবির মনে হয়েছে দেশমাতৃকা আবার জেগে উঠছেন। এবারে দূর হবে ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণিগত, বৈষম্য। কবির মনে হয়েছে হোমানলে দুঃখের সব রক্তশিখা জ্বলে পুড়ে শুরু হবে নতুন দিনের। দুঃখের অন্ধকার রাত দূর হয়ে ফুটবে নতুন আলো। সৃষ্টি হবে নতুন মহানুভবতায় পরিপূর্ণ প্রাণের। সর্বত্র পরিব্যাপ্ত হবে সম্প্রীতির বার্তা।
১০. ‘মার অভিষেকে এসো এসো ত্বরা’ – কবি কাদের ব্যাকুল আহ্বান জানিয়েছেন? কোন মায়ের কথা এখানে বলা হয়েছে? এ কোন অভিষেক? সে অভিষেক কীভাবে সম্পন্ন ও সার্থক হবে?
উত্তর : কাদের আহ্বান জানিয়েছেন?:– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে কবি আর্য, অনার্য, হিন্দু, মুসলমান, ইংরেজ, খ্রিস্টান জাতি – ধর্ম – বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে ব্যাকুল আহ্বান জানিয়েছেন।
মা কে? :– মা বলতে এখানে ভারতমাতার কথা বলা হয়েছে।
অভিষেক কী? :– অভিষেক শব্দের অর্থ কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োগ বা শুভ কাজের আরম্ভ। এখানে ভারতমাতমায়ের সন্তানদের আবার ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য ভারতমাতমায়ের অভিষেক করাতে চেয়েছেন কবি।
কীভাবে সম্পন্ন হবে?:– আর্য, অনার্য, হিন্দু, মুসলমান, ইংরেজ, খ্রিস্টান জাতি – ধর্ম – বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ যদি ভারতমাতমায়ের অভিষেকে অংশগ্রহণ করে তবেই সকলের পবিত্র স্পর্শে মায়ের অভিষেক সম্পন্ন ও সার্থক হবে।
১১. টীকা লেখো :
ওংকারধ্বনি, শক, হুন, মোগল, দ্রাবিড়, ইংরাজ।
উত্তর :
ওংকারধ্বনি:- ওংকার বা ওঁ হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈনধর্মের পবিত্রতম ও সর্বজনীন প্রতীক। এটি হিন্দু দর্শনের সর্বোচ্চ ঈশ্বর ব্রহ্মের বাচক। এই ধর্মের প্রতিটি সম্প্রদায় ও উপসম্প্রদায়ের নিকটেই এটি পবিত্র বলে গণ্য। স্বামী বিবেকানন্দের মতে, ওঁ-কার “সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের প্রতীক, ঈশ্বরেরও প্রতীক।” রামকৃষ্ণ পরমহংসের মতে, …ওঁ হইতে ‘ওঁ শিব’, ‘ওঁ কালী”, “ওঁ কৃষ্ণ হয়েছেন।” ওঁ-কার বৌদ্ধ ও জৈনদেরও একটি পবিত্র প্রতীক। শিখ সম্প্রদায়ও এটিকে সম্মান করেন।
শক :- শক জাতি চিন সীমান্ত থেকে এদেশে আসে। প্রথমে সিন্ধু উপত্যকায় তারা উপনিবেশ স্থাপন করে। পরবর্তীতে শকরা দুর্বল রাজ্যগুলি পরাজিত করে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শকরাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। শকদের শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন রুদ্রদামন। তিনি ‘মহাক্ষত্রপ’ উপাধি ধারণ করেন। গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত এই শক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করেন।
হুন:- মধ্যে এশিয়া থেকে আগত হুন জাতি আনুমানিক ৪৬০ খ্রিস্টাব্দের দিকে প্রথমবার ভারত আক্রমণ করলেও স্কন্দগুপ্ত কতৃক পরাজিত হয়। তার মৃত্যুর পরে তোরমানের নেতৃত্বে পুনরায় পাঞ্জাব ও মধ্যপ্রদেশের কিছু অংশ দখল করে নেয়। তার পুত্র মিহিরকুলও রাজ্যজয়ে সাফল্য পান। হিউয়েন সাঙের বর্ণনা থেকে মিহিরকুলের অত্যাচারের কাহিনি জানা যায়। মোগল:- ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথের যুদ্ধে জয়লাভ করে বাবর মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের পরাজয়ে মোগল সাম্রাজ্যের সমাপ্তি ঘটে। নানা কারণে আকবর, শাহজাহান, ঔরঙ্গজেবের আমলে মোগল শাসন ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। প্রশাসন ও শিল্প-সংস্কৃতিতে মোগল সাম্রাজ্যের অবদান অবিস্মরণীয়।
দ্রাবিড়:- ভারতবর্ষের এক প্রাচীনতম জাতি দ্রাবিড়। প্রথমে উত্তর ভারতে বসবাস শুরু করলেও পরে আর্যদের আক্রমণে তারা দক্ষিণ ভারতে সরে যায়। মূলত কর্ণাটক, কেরালা, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ইত্যাদি রাজ্যে দ্রাবিড় গোষ্ঠীর লোকেরা বাস করে।
ইংরাজ:- ইংরাজ বা ইংরেজরা প্রথম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাধ্যমে এদেশে বাণিজ্য করতে এলেও ক্রমে তারা দেশ শাসনের অধিকার নেয়। ১৮৫৭ -র মহাবিদ্রোহ দমনের পরে রানি ভিক্টোরিয়ার প্রত্যক্ষ শাসনে চলে যায় এই দেশ। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে পর্যন্ত ভারতে ইংরেজ শাসন অব্যাহত ছিল।
১২. ভারতবর্ষের অতীত ইতিহাসের কথা কবিতায় কীভাবে বিধৃত হয়েছে?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতা অনুযায়ী এদেশে বহু মানুষের আগমন ঘটেছে। আর্য-অনার্য-দ্রাবিড় আগমন ও জাতিগত মিলনের ইতিহাস যেমন কবির চোখে ধরা পড়েছে। তেমনি শক-ছল- পাঠান-মোগলদের আগমনের ইতিহাস ও তাদের যুদ্ধে উন্মত্ত চেহারা, ভারতের সাথে তাদের মিশে যাওয়ার কাহিনিও কবির চোখে ধরা পড়েছে। ভারতবর্ষের ইতিহাসের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কবি উপলব্ধি করেছেন ভারতবর্ষ যেন হয়ে উঠেছে মিলনের তীর্থক্ষেত্র। যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ সকলে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।
১৩. কবির দৃষ্টিতে ভবিষ্যৎ ভারতের যে স্বপ্নিল ছবি ধরা পড়েছে, তার পরিচয় দাও ।
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় কবি স্বপ্ন দেখেছেন ‘মহামানবের সাগরতীরে’ এই দেশে সকলেই মিলে যাবে। বিভেদ ভুলে হবে ঐক্যের প্রতিষ্ঠা। লজ্জা, ভয় সব কিছুকে জয় করে সব অপমানকে দূরে সরিয়ে রেখে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মিলনের মধ্য দিয়েই দেশমাতৃকা আবার জেগে উঠবে । এ স্বপ্নই কবি দেখেছেন।
১৪. বাক্যে প্রয়োগ করো :
উদার, ধৃত, পবিত্র, লীন, মন্ত্র, অনল, বিপুল, বিচিত্র, সাধনা, জয়গান।
উত্তর :
উদার – অনিকের মন খুব উদার।
ধৃত – পুলিশের দ্বারা চোরটি ধৃত হয়েছে।
পবিত্র – হিন্দুদের কাছে গঙ্গাজল খুব পবিত্র।
লীন – নদী সমুদ্রে লীন হয়।
মন্ত্র – পুরোহিত মন্ত্র পাঠ করছেন।
অনল – ক্ষুধার অনলে জ্বলিছে শিশু।
বিপুল – সমুদ্রের বিপুল জলরাশি ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ে।
বিচিত্র – ভারতবর্ষের সংস্কৃতি বিচিত্র।
সাধনা – সাফল্য অর্জনের জন্য কঠোর সাধনা প্রয়োজন।
জয়গান – ভারতবাসী হয়ে ভারতের জয়গান করা উচিত।
১৫. প্রতিশব্দ লেখো :
সাগর, ধরিত্রী, ভূধর, হিয়া, রজনী, নীর।
উত্তর : সাগর- সমুদ্র, ধরিত্রী- পৃথিবী, ভূধর- পর্বত, হিয়া- মন, রজনী- রাত্রি, নীর- জল।
শব্দার্থ : ভূধর—পৃথিবী। ভেদি—ভেদ করে। শোণিত—রক্ত। হেরো—দেখো। বিরাজ—থাকা। ওংকার ধ্বনি—সকল মন্ত্রের আদি ধ্বনি। অভিষেক—সিংহাসনে বসবার প্রথম দিনের যে অনুষ্ঠান। কলরব—চিৎকার। আনত শিরে—মাথা নিচু করে।
১৬. ‘শালা’ শব্দের একটি অর্থ গৃহ, আগার।
‘যজ্ঞশালা’ র অনুরূপ ‘শালা’ পদযুক্ত আরো পাঁচটি শব্দ লেখো।
উত্তর : কর্মশালা, ধর্মশালা, রন্ধনশালা, নাট্যশালা, পাঠশালা প্রভৃতি।
১৭. নীচের পক্তিগুলি গদ্য বাক্যে লেখো :
১৭.১ দুর্বার স্রোতে এল কোথা হতে, সমুদ্রে হলো হারা ।
উত্তর : দুর্বার স্রোতে কোথা থেকে এল এবং সমুদ্রে হারিয়ে গেল।
১৭.২ উদার ছন্দে পরমানন্দে বন্দন করি তাঁরে।
উত্তর : উদার ছন্দে পরমানন্দে তাকে বন্দনা করি।
১৭.৩ হৃদয়তন্ত্রে উঠেছিল রণরণি।
উত্তর : হৃদয়তন্ত্রে রণরণিয়ে উঠেছিল।
১৭.৪ হেথায় নিত্য হেরো পবিত্র ধরিত্রীরে।
উত্তর : এখানে নিত্য পবিত্র ধরিত্রীকে দেখো।
১৭.৫ হেথায় সবারে হবে মিলিবারে আনত শিরে ।
উত্তর : এখানে সবাইকে মাথা নত করে মিলিত হতে হবে।
১৮. বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে ও বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে পরিবর্তিত করো :
চিত্ত, পুণ্য, পবিত্র, এক, দ্বার, বিচিত্র, তপস্যা, দুঃখ, জয়, জন্ম, শুচি, লাজ।
উত্তর : চিত্ত – চিত্তাকর্ষক, পুণ্য – পুণ্যবান, পবিত্র – পবিত্রতা, এক- একক, দ্বার – দ্বারস্থ, বিচিত্র- বৈচিত্র্য, তপস্যা– তপস্বী, দুঃখ- দুঃখী, জয়- জয়ী, জন্ম- জন্মগত, শুচি- শুচিতা, লাজ – লাজুক।
১৯. সন্ধি বিচ্ছেদ করো :
পরমানন্দ, দুর্বার, ওংকার, হোমানল, দুঃসহ।
উত্তর : পরমানন্দ = পরম + আনন্দ, দুর্বার = দুঃ + বার, ওংকার = ওম্ + কার, হোমানল = হোম + অনল, দুঃসহ = দুঃ + সহ
২০. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :
পুণ্য, ধীর, ধৃত, আহ্বান, দুর্বার, বিচিত্র, বহু, অপমান, বিপুল, ত্বরা।
উত্তর : পুণ্য- পাপ, ধীর-দ্রুত, ধৃত-মুক্ত, আহ্বান-প্রত্যাখ্যান, দুর্বার- শান্ত, বিচিত্র- একঘেঁয়ে, বহু- এক, অপমান-সম্মান, বিপুল- সামান্য, ত্বরা– বিলম্ব।
আরো পড়ুন
গল্পবুড়ো কবিতার প্রশ্ন উত্তর | সুনির্মল বসু | Golpo Buro Kobita Question Answer | Class 5 | Wbbse
বুনো হাঁস প্রশ্ন উত্তর | লীলা মজুমদার | Buno Has Class 5 Question Answer | Wbbse
দারোগাবাবু এবং হাবু কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Daroga Babu Ebong Habu Question Answer | Class 5 | Wbbse
এতোয়া মুন্ডার কাহিনী প্রশ্ন উত্তর | Etoya Mundar Kahini Question Answer | Class 5 | Wbbse
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) : জন্ম কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে। অল্পবয়স থেকেই ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত ‘ভারতী’ ও ‘বালক’ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। ‘কথা ও কাহিনী’, ‘সহজপাঠ’,‘রাজর্ষি’, ‘ছেলেবেলা’, ‘শিশু’, ‘শিশু ভোলানাথ’,‘হাস্যকৌতুক’, ‘ডাকঘর’, ‘গল্পগুচ্ছ’- সহ তাঁর বহু রচনাই শিশু-কিশোরদের আকৃষ্ট করে। দীর্ঘ জীবনে অজস্র কবিতা, গান, ছোটোগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ লিখেছেন, ছবি এঁকেছেন। ১৯১৩ সালে ‘Song Offerings’- এর জন্যে প্রথম এশিয়াবাসী হিসেবে নোবেল পুরস্কার পান। দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত আর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত তাঁর রচনা। ‘ভারততীর্থ’ কবিতাটি ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।